২ দিনে ১৪৪টি মামলায় প্রায় ৬ লক্ষ টাকা জরিমানা || যানযট নিরসনে ট্রাফিক বিভাগ কে নিয়ে ইতিবাচক উদ্যোগ বগুড়া পুলিশ সুপারের – বগুড়া সংবাদ

২ দিনে ১৪৪টি মামলায় প্রায় ৬ লক্ষ টাকা জরিমানা || যানযট নিরসনে ট্রাফিক বিভাগ কে নিয়ে ইতিবাচক উদ্যোগ বগুড়া পুলিশ সুপারের – বগুড়া সংবাদ

সঞ্জু রায়: উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার বগুড়া যেখানে যানযটের কারণে জনদুর্ভোগ বর্তমানে চরমে যা নিরসনে ইতিবাচক উদ্যোগ নিয়েছেন জেলার নবাগত পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বিপিএম (সেবা)। অটোরিক্সার বেপোরোয়া চলাচল নিয়ন্ত্রণ, অবৈধ পার্কিং বন্ধ করা, পথচারীদের চলাচল আরো নির্বিঘ্ন করতে শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথা কেন্দ্রীক ফুটপাত দখলমুক্তকরণ করাসহ ট্রাফিক বিভাগের দায়িত্ব পালনেও আনা হয়েছে ইতিবাচক পরিবর্তন যার সুফল চোখে পরেছে বুধবার সারাদিন শহরের বিভিন্ন স্থানে।
বুধবার বিকেলে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায়, ট্রাফিক পুলিশ ও জেলা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সমন্বিত অংশগ্রহণে শহরের ৪টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট যথাক্রমে এসপি ব্রিজ, দত্তবাড়ি, সেউজগাড়ি আমতলা, পিটিআই মোড়ে চেকপোস্ট বসানোর মাধ্যমে শহরে মোটা চাকার অটোরিক্সা প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয় পুলিশের এই উদ্যোগের ফলে রেজিষ্ট্রেশন ও লাইসেন্সবিহীন অন্যান্য যানবাহনের চালকেরাও সতর্ক হয়েছেন অবৈধ যানবাহনের ভীড়ও বুধবার শহরে তেমন চোখে পড়ার মতো ছিল না।
বগুড়া জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদ জানান, জেলা পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে তিনি নিজেও মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। তিনি বলেন ইতিমধ্যেই অবৈধ পার্কিং এর বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে প্রয়োজনে ভিডিও করে এগুলোর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হবে। মানুষকে সচেতনের লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই প্রচারণা মাইকিং করা হয়েছে পুরো শহরজুড়ে তারপরেও মানুষ আইন ভঙ্গ করলে অবশ্যই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। গত মঙ্গলবার দিনব্যাপী মোট ৮৪টি মামলা হয়েছে এবং জরিমানা করা হয়েছিল প্রায় ৩ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা যার মাঝে ৪০টি ছিল অবৈধ পার্কিং এর মামলা। এছাড়াও বুধবার রাত ৮টা পর্যন্ত বগুড়া শহরে যানবাহন নিয়ন্ত্রণে অবৈধ গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৬০টি এবং নিয়ম ভাঙ্গার জন্যে মোটা চাকার ২০টি রিক্সাও আটক করা হয়েছে। এছাড়াও জরিমানা করা হয়েছে ২ লক্ষ ৪৭ হাজার টাকা। তিনি জানান, এই মাসের ১ তারিখ হতে ৮ তারিখ পর্যন্ত ট্রাফিক আইনে মোট মামলা হয়েছে ৪১৮টি এবং জরিমানা করা হয়েছে প্রায় ১৮ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা যার মাঝে ইতিমধ্যেই ৩৪৬টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে এবং রাজস্ব হিসেবে জরিমানা আদায় হয়েছে ১৫ লক্ষ ৫২ হাজার ৩’শ টাকা। শুধু তাই নয় অটোরিক্সার কারণে সৃষ্ট ভোগান্তি নিরসনে নিয়ম ভঙ্গকারী শতাধিক অটো রিক্সাও আটক করা হয়েছে এই অভিযানে। ফয়সাল মাহমুদ আরো জানান, যানযট নিরসনে তারা নানামুখী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন যার সুফলও মিলতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই তবে ভাল কিছু পরিবর্তন আনতে চাইলে সামান্য কিছু ভোগান্তি হতেই পারে তা সাধারণ মানুষকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করার আহ্বান জানান তিনি।
বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বিপিএম (সেবা) এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, বগুড়াতে যানযটের সমস্যা দীর্ঘদিনের যা নিরসনে পুলিশের পক্ষে যথাসাধ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন পুরো জেলাজুড়ে ট্রাফিক বিভাগের মোট জনবল ৭০ জন যাদের মাঝে অনেকে শহরের বাইরেও দায়িত্ব পালন করে থাকে। যানযট নিরসনে তাই ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি সদর থানা পুলিশ সদস্য এবং পুলিশ লাইন্স এর ফোর্সরাও সমন্বিতভাবে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে এবং ডিজিটাল পদ্ধতিতে আইনভঙ্গকারীদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। সুদীপ চক্রবর্তী আরো বলেন, যানযটের সমস্যা নিরসনে সাধারণ জনগণকেও আরো দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। কোনমতেই ফুটপাত দখল কিংবা অবৈধ পার্কিং করা যাবেনা করলেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে পুলিশের পক্ষে। জেলা পুলিশের কর্ণধার এসপি সুদীপ বলেন, সকলের সমন্বিত চেষ্টাতে অবশ্যই আমরা যানযটমুক্ত একটি বগুড়া শহর গড়ে তুলতে পারবো সেই প্রত্যাশাতেই তারা তাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার মাধ্যমে কাজ করে যাবেন।

Explore More Districts