১২ ফেব্রুয়ারি সম্ভাব্য ধরে দ্রতগতিতে এগোচ্ছে নির্বাচনের প্রস্তুতি

১২ ফেব্রুয়ারি সম্ভাব্য ধরে দ্রতগতিতে এগোচ্ছে নির্বাচনের প্রস্তুতি

দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন প্রস্তুতির ‘ট্রেন’ এখন দ্রুত গতিতে ছুটছে। সার্বিক প্রস্তুতি শেষ করে তফসিল ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রচলিত রীতি অনুযায়ী তফসিল ঘোষণার আগে আগামী ১০ ডিসেম্বর বঙ্গভবনে প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)।
এর আগে ৯ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের সঙ্গেও ইসির সাক্ষাতের কথা রয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ১১ ডিসেম্বর জাতির উদ্দেশে ভাষণের মাধ্যমে তফসিল ঘোষণা করবেন সিইসি।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, রমজানের আগে সবদিক বিবেচনায় রেখে ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি। দেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম একই দিনে সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। ভোটারদের দেওয়া হবে দুটি পৃথক রঙের ব্যালট।
আজ কমিশন সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত/
আজ রোববার নির্বাচন কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে তফসিলসহ ১০টি এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হবে। এর মধ্যে রয়েছে—
ভোটের তারিখ ও সময়, মনোনয়ন জমা, যাচাই-বাছাই, প্রত্যাহারের সময়, ভোটগ্রহণের সময় বাড়ানো, পোস্টাল ব্যালট ব্যবস্থাপনা, রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ এ সভাতেই তফসিলের চূড়ান্ত কাঠামো নির্ধারিত হবে।
ভোটের সময় বাড়ছে, বুথ ও গোপন কক্ষ বৃদ্ধি/
দুটি ব্যালটে ভোট দেওয়ার কারণে ভোটারদের বেশি সময় লাগবে—এই বিবেচনায় এবার ভোটের সময় আধঘণ্টা এগিয়ে সকাল ৭টা ৩০ মিনিট থেকে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
একই সঙ্গে বাড়ছে ভোটকক্ষ ও গোপন কক্ষের সংখ্যাও। তবে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
সম্ভাব্য তফসিলের খসড়া/
ইসি সূত্রে জানা গেছে, খসড়া তফসিল অনুযায়ী
১১ ডিসেম্বর : তফসিল ঘোষণা
২৫ ডিসেম্বর : মনোনয়ন জমার শেষ দিন
২৬–৩০ ডিসেম্বর : মনোনয়ন যাচাই-বাছাই
৩১ ডিসেম্বর – ৪ জানুয়ারি : আপিল
৫–১০ জানুয়ারি : আপিল নিষ্পত্তি
১১–১২ জানুয়ারি : প্রার্থিতা প্রত্যাহার
১৩ জানুয়ারি : প্রতীক বরাদ্দ
১২ ফেব্রুয়ারি : ভোটগ্রহণ
বিএনপির প্রস্তুতি ও তারেক রহমান প্রসঙ্গ/

নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপি ও জামায়াত তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করা এবং আসন সমঝোতা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে।
এ অবস্থায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে। এ কারণে বিএনপির প্রচারে কিছুটা স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়েও রাজনৈতিক আলোচনা তুঙ্গে। মনে করা হচ্ছে, বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ গণতন্ত্রের এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। তারেক রহমান দেশে ফিরে এলে নির্বাচনী উদ্দীপনা বহুগুণ বাড়বে। পাশাপাশি নির্বাচন বানচালের যেকোনো ষড়যন্ত্রও চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়ে যাবে।
পোস্টাল ভোট ও প্রবাসী ভোটার/
প্রবাসীদের জন্য ৫ লাখ পোস্টাল ব্যালট ছাপানোর উদ্যোগ নিয়েছে ইসি। ইতোমধ্যে দুই লক্ষাধিক প্রবাসী ভোটার আবেদন করেছেন।
ভোটার, সরকারি কর্মচারী ও আইনগত হেফাজতে থাকা ভোটাররা ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত পোস্টাল ভোটের জন্য বিডি অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে পারবেন।
বিশাল ভোটার ও কেন্দ্র প্রস্তুতি/
এবার ভোট দেবেন মোট ১২ কোটি ৭৬ লাখ ৯৫ হাজার ১৮৩ জন ভোটার।
ভোটগ্রহণ হবে: ৪২,৭৬৬টি ভোটকেন্দ্রে, ২,৪৫,১৯৫টি ভোটকক্ষে
মোট ২৫ কোটি ৫৪ লাখ ব্যালট ছাপানো হবে।
আন্তর্জাতিক নজরদারি বাড়ছে/
যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও কমনওয়েলথ ইতোমধ্যে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের ঘোষণা দিয়েছে। প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলও শিগগিরই বাংলাদেশে আসতে পারে। কূটনৈতিক মহলের মতে, ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতায় বাংলাদেশের গুরুত্ব বৃদ্ধি পাওয়ায় আন্তর্জাতিক মহল এই নির্বাচনকে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

Explore More Districts