হ্যাপি বার্থডে গ্ল্যামার কুইন

হ্যাপি বার্থডে গ্ল্যামার কুইন

গ্ল্যামার কুইন মেরিলিন মনরো (১৯২৬-১৯৬২)

তাকে বলা হতো হলিউডের সবচেয়ে আবেদনময়ী অভিনেত্রী। মাত্র ৩৬ বছর বয়সেই যার জীবনের ইতি ঘটায় হারিয়ে যায় হলিউডের এক সম্ভাবনার নাম। পৃথিবীর লাখো মানুষ যে নারীর সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ, তিনি মেরিলিন মনরো। বিংশ শতাব্দীর একজন বিশ্বখ্যাত অভিনেত্রী, মডেল এবং পপ আইকন তিনি। আজ ১ জুন এই কিংবদন্তীর জন্মদিন।

প্রকৃত নাম নর্মা জিন মর্টেনসন। পর্দার নাম ‘মেরিলিন মনরো’। এই নামেই ঝড় তুলেছিলেন সবার হৃদয়ে। ১৯২৬ সালের ১ জুন লস অ্যাঞ্জেলেসে তার জন্ম, মানসিক ভারসাম্যহীন এক মায়ের কোলে। আমৃত্যু জানতে পারেননি পিতৃপরিচয়। যে কারণে তার শৈশব কেটেছে অনেক কষ্টে। ১২ বছর বয়স থেকেই ‘ফস্টার কিড’ হিসেবে জীবন কাটে তার।

১৯৪৬ সালে প্রথম অভিনয় জগতে পা রাখেন মনরো। ১৯৫০ সালে ‘অল অ্যাবাউট ইভ’ সিনেমায় লাস্যময়ী অভিনয়ের সুবাদে রাতারাতিই তারকা বনে যান তিনি। খুব কম সময়েই জায়গা করে নেন হলিউডের প্রথম সারিতে। ডেঞ্জারাস ইয়ার্স, অ্যাজ ইয়ং অ্যাজ ইউ ফিল, লেটস্ মেক ইট লিগাল, দ্য প্রিন্স অ্যান্ড দ্য শোগার্ল, মাঙ্কি বিজনেস, দ্য সেভেন ইয়ার ইচ- দুই দশকের ক্যারিয়ারে মোট ৩৪টি সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন। সম্ভবত আজও পৃথিবীর সব থেকে গ্ল্যামারাস নারী তিনিই।

পর্দায় তার খোলামেলা পোশাক একদিকে যেমন সমালোচনার ঝড় তুলেছে, অন্যদিকে তিনি হয়ে ওঠেন লাখো তরুণের হৃদয়ের রাণী। আমেরিকার পাম স্প্রিংস আর্ট মিউজিয়ামের সামনে তার উড়ন্ত স্কার্টের মূর্তি নিয়ে বিতর্ক আজও থামেনি। একাধিক বিয়ে, প্রেম, সম্পর্কের গুঞ্জন ব্যক্তিগত জীবনেও কম বিতর্ক ছিল না গ্ল্যামার কুইনের।

১৬ বছর বয়সে প্রথম বিয়ে। তারপর আরও দুবার বিয়ের সম্পর্কে আবদ্ধ হন মেরিলিন। তবে কোনোটিই দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। লার্জার দ্যান লাইফ, অসম্ভব সাফল্যের আড়ালেও একাকিত্বে ভুগতেন এই অভিনেত্রী। ২৫ বছর বয়সের আগেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন তিনবার। শোনা যায় ২৯ বছরের মধ্যে গর্ভপাত করিয়েছিলেন মোট ১২ বার।

তার ব্যক্তিগত ডায়েরিতে নাকি ৩৭ জন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের নাম পাওয়া যায়। বহুবার বাড়ি বদলেছিলেন তিনি। জড়িয়েছিলেন কেনেডি ব্রার্দাসদের প্রেমে। প্রথমে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি এবং পরে তার ভাই রবার্ট কেনেডির সঙ্গে। তবে সম্পর্কের স্বীকৃতি পাননি কখনোই। মনে করা হয়, সেই সম্পর্কই জীবনের ইতি টেনেছে মেরিলিন মনরোর।

১৯৬২ সালের মে মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির জন্মদিনে আমন্ত্রিত ছিলেন মনরো। সেই পার্টিতে তার গাওয়া ‘হ্যাপি বার্থডে মি. প্রেসিডেন্ট’ গানটি এখনও মানুষের কানে ভাসে। কেনেডির জন্মদিনের পার্টি থেকে ফেরার এক মাস পরই ৫ আগস্ট লস অ্যাঞ্জেলেসের বাড়িতে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে মৃত্যু ঘটে এই গ্ল্যামার কুইনের।

সরকারিভাবে বলা হয়, আত্মঘাতী হয়েছিলেন মনরো। তবে কেনো এভাবে মৃত্যুকে বরণ করলেন তিনি, কেনই বা তার হাতে ফোনের রিসিভার ছিল, কেনই বা নগ্ন অবস্থায় চাদরের তলায় পাওয়া গিয়েছিল তাকে, এসব প্রশ্নের উত্তর আজও মেলেনি। শুধু জানা যায়, রক্তে ছিল অস্বাভাবিক পরিমাণ ঘুমের ওষুধ। চিকিৎসকরা তার মৃত্যুর কারণ হিসেবে ড্রাগ ওভারডোজকে দায়ী করেন আজও। বেঁচে থাকলে আজ ৯৫তম জন্মদিন পালন করতেন মেরিলিন মনরো। তাকে নিয়ে কাহিনি হয়তো সেজে উঠত অন্যভাবে। ৯৫তম জন্মদিনে যমুনা নিউজের পক্ষ থেকে মেরিলিন মনরোর জন্য রইলো বিনম্র শ্রদ্ধা।

/এসএইচ

Explore More Districts