
হবিগঞ্জে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এর ফলে পুরো শহর পরিণত হয়েছে রণক্ষেত্রে। বুধবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুর থেকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। টানা এক ঘণ্টা ধরে চলে এ সংঘর্ষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে অর্ধশত রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। এতে পুলিশসহ আহত হয়েছে কমপক্ষে ৫০ জন। এর মধ্যে ২০ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশ বুধবার বিকেল চারটা পর্যন্ত সাত জনকে আটক করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার সমাবেশের আয়োজন করেছিল জেলা বিএনপি। শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়।

দুপুর দুইটা নাগাদ নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে রওনা হন। এ সময় শায়েস্তানগর পয়েন্টে তাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। বিকেল পৌনে তিনটা পর্যন্ত টানা সংঘর্ষ চলতে থাকে। সংঘর্ষে আহতদের হবিগঞ্জ ও সিলেটের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন জানান, কেন্দ্রীয় নেতারা সমাবেশস্থলে আসার সময় বিভিন্ন স্থানে পুলিশ তাদের বাঁধা দিয়েছে। শহরের শায়েস্তানগরে বাধা দিলে নেতাকর্মীরা সেখানে গিয়ে তাদের নিয়ে আসেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে বিএনপির বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তবে এখনই সংখ্যা বলা সম্ভব নয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিমুল আক্তার জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে কোন বাধা দেওয়া হয়নি। পুলিশ শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছিল। হঠাৎ বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে পুলিশের উপর হামলা চালায়। এতে ২৭ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের সবাইকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বলেন, কি পরিমাণ রাবার বুলেট বা টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়েছে তা এখনই নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষের নিন্দা খন্দকার মোশাররফের
এদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মানুষের ভোটাধিকার নাই। দিনের ভোট রাতে ডাকাতি করে সরকার পরিচালনা করা হচ্ছে। আজ দেশে যে গণতন্ত্র নেই সেটি হবিগঞ্জের ঘটনায় প্রতিফলিত হয়েছে। কেননা আমাদের নেত্রীর মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবি করার মৌলিক অধিকার আছে। আজকে একটি শর্তের জন্য আমাদের নেত্রী বিদেশে যেতে পারছেন না। তারা নির্বাহী আদেশে নেত্রীকে সাজা মওকুফ করেছে। কিন্তু সেখানে একটি শর্ত জুড়ে দিয়েছে তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না। আমাদের একটাই দাবি সে শর্ত প্রত্যাহার করা হোক।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, যে ধারায় আমাদের নেত্রীকে সাজা মওকুফ করেছেন সেখানে লেখা আছে শর্তযুক্ত অথবা শর্তহীনভাবে তারা এ কাজ করতে পারবে। কিন্তু তারা শর্ত যুক্ত করেছে। আমরা শুধু শর্ত তুলে নেয়ার দাবি জানাচ্ছি। এখানে আইনের কোন সমস্যা নেই। সমস্যা হচ্ছে সরকারের। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থের জন্য তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
ডি- এইচএ