৭ July ২০২৫ Monday ৪:২২:২৫ PM | ![]() ![]() ![]() ![]() |
নলছিটি (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি:

ভাবির সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক, পরকীয়া, যৌতুকের জন্য মারধর—সব মিলিয়ে স্বামীর অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে পাঁচ বছরের সন্তানকে নিয়ে ঘরছাড়া হয়েছেন ঝালকাঠির এক নারী। ঘটনার বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রশাসনের প্রতি আকুতি জানিয়েছেন তিনি।
নলছিটি উপজেলার গোহালকাঠী গ্রামের বাসিন্দা সুমাইয়া আক্তার সোমবার (৭ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় নলছিটি প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, স্বামী মো. সোহেল হাওলাদার বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার বাখরকাঠী এলাকার বাসিন্দা। বিয়ের পর প্রথমদিকে সংসার ভালো চললেও, পরে তিনি একাধিক পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন এবং যৌতুকের জন্য তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করেন।
সুমাইয়ার অভিযোগ, “স্বামী কাতারপ্রবাসী বড় ভাই মাছুদ হাওলাদারের স্ত্রী হেপী বেগমের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন সোহেল। আমি বাধা দিলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমাকে ও আমার ছেলেকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। পরবর্তীতে ছোট ভাই সোহাগ হাওলাদারের স্ত্রী সারমিন বেগমের সঙ্গেও পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি এলাকায় ধরা পড়লেও সালিশ ব্যর্থ হয়। এরপর সারমিনকে নিয়ে পালিয়ে যান সোহেল।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “বাড়ি ফিরে এসে আমার ঘরের জিনিসপত্র বিক্রি করে দেয়, এমনকি আমার ভোটার আইডি, ছেলের জন্মসনদ, শিক্ষাগত সনদ জোরপূর্বক রেখে দেয়। এসব কাগজ ফেরত চাইলে আমাকে ও আমার পরিবারকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। ৮ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে, যার মধ্যে ৩ লাখ দিতে বাধ্য হয়েছি। এখন আরও ৫ লাখ দাবি করে আমাকে ঘরে তুলতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে।”
সংবাদ সম্মেলনে সুমাইয়ার মা ফরিদা বেগম বলেন, “সোহেল হাওলাদার বিভিন্ন নম্বর থেকে ফোন করে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। বর্তমানে আমরা চরম আতঙ্কে আছি।”
সুমাইয়া জানান, গত ২৮ এপ্রিল তিনি নলছিটি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে একটি মামলা করেন। পরদিন তার মা ফরিদা বেগম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন ঝালকাঠি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে।
এ বিষয়ে একাধিকবার মো. সোহেল হাওলাদারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে, নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুস সালাম জানান, “ঘটনার বিষয়ে আমরা এখনো কোনো আদালতের ওয়ারেন্ট পাইনি। আদালত নির্দেশনা দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
বর্তমানে সুমাইয়া আক্তার তার সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তিনি প্রশাসনের কাছে দ্রুত তদন্ত ও বিচারের পাশাপাশি নিজের ও সন্তানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।
সম্পাদনা: আমাদের বরিশাল ডেস্ক
শেয়ার করতে ক্লিক করুন: | Tweet |