স্বাধীনতার ৫১ বছরে বাংলাদেশ

স্বাধীনতার ৫১ বছরে বাংলাদেশ

আজ ২৬ শে মার্চ, মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস। স্বাধীন বাংলাদেশের ৫১ বছর পূর্তিতে বার্তা২৪.কম -র পাঠক, দর্শক, লেখক, প্রতিনিধি, বিজ্ঞাপনদাতা এবং এর সঙ্গে জড়িত সবাইকে জানাই মহান স্বাধীনতার শুভেচ্ছা।

৩০ লাখ শহীদের রক্তস্নাত মুক্তিযুদ্ধের সূচনা হয়েছিল আজকের এ দিনেই। হাজার বছরের শোষণ, শাসন আর নির্যাতন থেকে বেরিয়ে মুক্তির পথে যাত্রা শুরু করবার যাত্রা শুরু হয়েছিল আজকের এ দিনেই। এরই মধ্যে রক্ত দিয়ে কেনা প্রিয় বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫০ টি বছর পার করে এসেছে, উদযাপন করেছে ‘স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী’। ১৯৭১ সালে জন্ম নেওয়া দেশটির ঝুলিতে উন্নয়নের গল্প-গাঁথাতে প্রতিনিয়তই যুক্ত হচ্ছে নতুন উন্নতির গল্প যুক্ত হচ্ছে। তলাবিহীন ঝুঁড়ি খ্যাত দেশটিও বিশ্বের রোল মডেল। হয়তো খুব শীগ্রই উন্নত দেশের কাতারে স্থান পাবে প্রাণের দেশটি।

আজ থেকে ৫১ বছর আগে ১৯৭১ সালের এ দিনে পাকিস্তানীদের কবল থেকে প্রিয় জন্মভূমিকে রক্ষা করতে ঝাপিয়ে পড়েন বাংলার দামাল ছেলেরা, ঘরে নিয়ে আসেন স্বাধীনতা, শত্রুদের থাবা থেকে রক্ষা করেন দেশ। মানচিত্রে প্রতিষ্ঠিত পায় একটি নতুন দেশ, ‘বাংলাদেশ’ ; হাজারো পতাকার ভিড়ে স্থান পায় লাল-সবুজের পতাকা।

একটি দেশ, একটি পতাকা সৃষ্টির পেছনে হাজারো মানুষের অবদান রয়েছে তবে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কথা না বললেই নয়। তাঁর প্রত্যেকটি ভাষণ ও দাবি-দাওয়া’তে এ দেশের মানুষের স্বাধীনতার কথা ছিল মুক্তির কথা ছিল। সব সময়ই ইঙ্গিত দিয়ে গেছেন, ‘মুক্তির’ ; শেষ মেশ ২৬শে মার্চ প্রথম প্রহরে স্বাধীনতা ঘোষণার পর পরিপূর্ণতা পায়।

২৬ মার্চ একটি বার্তার আকারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা জারি করেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্য রাতে শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন। গ্রেপ্তার হবার একটু আগে ঘোষণাটি ইপিআর-এর নিকট পৌছানো হয় এবং তা চট্টগ্রামে অবস্থিত তৎকালীন ই.পি.আর বেতারের মাধ্যমে যথাযথভাবেই প্রচার করা হয়। তবে প্রচার ব্যবস্থাটি VHF ফ্রিকোয়েন্সি ক্রিস্টাল নিয়ন্ত্রিত ছিল বলে খুব বেশি সংখ্যক লোক ঘোষণাটি শুনতে পায় নি।

বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা ছিল নিম্নরূপ: ‘এটাই হয়তো আমার শেষ বার্তা। আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আমার আহবান, আপনারা যে যেখানেই থাকুন এবং যার যা কিছু আছে তা দিয়ে শেষ পর্যন্ত দখলদার সেনাবাহিনীকে প্রতিহত করুন। বাংলাদেশের মাটি থেকে পাকিস্তান দখলদার বাহিনীর শেষ সৈনিকটি বিতাড়িত এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আপনাদের এ লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’

এদিকে ২৬শে মার্চ বেলাল মোহাম্মদ, আবুল কাসেম সহ চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রের কয়েকজন কর্মকর্তা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এম. এ. হান্নান প্রথম শেখ মুজিব এর স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রটি মাইকিং করে প্রচার করেন।

ঘোষণাপত্রটির ভাষ্য নিম্নরূপ: ‘আমি মেজর জিয়া, বাংলাদেশ লিবারেশন আর্মির অস্থায়ী প্রধান সেনাপতি এতদ্বারা শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করছি।

‘আমি আরও ঘোষণা করছি, আমরা ইতোমধ্যে শেখ মুজিবের নেতৃত্বে একটি সার্বভৌম ও বৈধ সরকার গঠন করেছি, যে সরকার আইনবিধান ও শাসনতন্ত্র অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনায় অঙ্গীকারাবদ্ধ। নতুন গণতান্ত্রিক সরকার আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে জোটনিরপেক্ষ নীতিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই সরকার সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার এবং আন্তর্জাতিক শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করবে। আমি সকল দেশের সরকারকে বাংলাদেশে নৃশংস গণহত্যার বিরুদ্ধে তাদের নিজ নিজ দেশে জনমত গড়ে তোলার আহবান জানাই। শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকার বাংলাদেশের সার্বভৌম ও বৈধ সরকার এবং এ সরকার বিশ্বের সব গণতান্ত্রিক দেশের স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য।’

এরপর থেকেই শুরু হয় যুদ্ধ এবং দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীনতার মাধ্যমে ১৬ ডিসেম্বর যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে, অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন বাংলাদেশের।

Explore More Districts