| ২ November ২০২৫ Sunday ১২:৩৮:১৯ PM | |
নিজস্ব প্রতিনিধি:

ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় একটি বিদ্যালয় পাঠদান বন্ধ রেখে শিক্ষার্থীদের মধ্যে লিফলেট বিলি ও রাজনৈতিক প্রচার চালিয়েছেন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী গোলাম আজম সৈকত। আজ শনিবার উপজেলার শৌলজালিয়া ইউনিয়নের বলতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে গিয়ে তিনি এ প্রচার চালান।
গোলাম আজম সৈকত ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর–কাঠালিয়া) আসনের বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
বিদ্যালয়ে রাজনৈতিক প্রচারের একটি ভিডিও গোলাম আজম সৈকত তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশ করেন। ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘কাঠালিয়া উপজেলার শৌলজালিয়া ইউনিয়নের বলতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা সম্পর্কে অবহিতকরণ।’
ঘটনাটি নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, বিদ্যালয় ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার স্থান, রাজনীতি শেখার নয়। এগুলো বন্ধ করা উচিত।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহজামাল খান বলেন, ‘সৈকত নামের এক ব্যক্তি এলাকায় জানাজায় এসেছিলেন। পরে বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করেন। তখন ক্লাস চলছিল, সময় আনুমানিক দুপুর সাড়ে ১২টা। কোনো পূর্বনির্ধারিত প্রোগ্রাম ছিল না। হলরুম না থাকায় একটি শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একত্র করে তিনি কথা বলেন ও লিফলেট বিতরণ করেন। এর আগেও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা এভাবে করেছেন।’
অভিযোগে বিষয়ে গোলাম আজম সৈকত বলেন, ‘আমি ওই এলাকায় এক ব্যক্তির জানাজায় গিয়েছিলাম। ফেরার পথে বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষকদের সঙ্গে দেখা করি। পরে তাঁদের অনুমতি নিয়েই শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা সম্পর্কে আলোচনা করি ও লিফলেট দিই। এটি কোনো নির্বাচনী প্রচারণা ছিল না।’

গোলাম আজম সৈকত আরও বলেন, ‘আমরা সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও জনসমাগমস্থলে ৩১ দফা রাষ্ট্র সংস্কারের কর্মসূচি তুলে ধরছি। এটি রাজনৈতিক প্রচার নয়, রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও এ বিষয়ে অবহিত করা প্রয়োজন।’
কাঠালিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আনোয়ার আজীম বলেন, ‘বিদ্যালয় চলাকালে পাঠদান বন্ধ রেখে রাজনৈতিক কর্মসূচি করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি অনৈতিক ও আইনবহির্ভূত। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) ঝালকাঠির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সত্যবান সেনগুপ্ত বলেন, ‘বিদ্যালয় হলো শিক্ষা অর্জনের স্থান, রাজনীতি চর্চার নয়। ভবিষ্যতে যেন কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি এ ধরনের কাজ না করেন, তা নিশ্চিত করতে হবে।’
কাঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমি আপনার মাধ্যমেই জানতে পেরেছি। বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রেখে রাজনৈতিক কার্যক্রমের কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি সম্পর্কে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছ থেকে প্রতিবেদন চাওয়া হবে। প্রয়োজন হলে এ বিষয়ে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সম্পাদনা: আমাদের বরিশাল ডেস্ক
| শেয়ার করতে ক্লিক করুন: | Tweet |

