সেপ্টেম্বর মাসে পণ্য রপ্তানি আয়ে রেকের্ড করেছে বাংলাদেশ। আলোচ্য মাসে ৪১৬ কোটি ৫০ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ৩৫ হাজার ৬১০ কোটি টাকা (এক ডলার সমান ৮৫ টাকা ৫০ পয়সা)। গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৮ শতাংশ বেশি। গত বছর সেপ্টেম্বরে রপ্তানি হয়েছিল ৩০২ কোটি ডলারের পণ্য।
দেশে এর আগে কোনো একক মাসে এত বেশি পরিমাণে রপ্তানি হয়নি কখনো। আজ সোমবার (০৪ অক্টোবর) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
রপ্তানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ হিসেবে খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য খুলতে শুরু করেছে। ফলে বাতিল ও স্থগিত হওয়া রপ্তানি আদেশ ফিরতে শুরু করেছে।
দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত তৈরি পোশাক ও বিশেষত নিটওয়্যার পণ্য রপ্তানি বেড়েছে। এ ছাড়া চামড়া ও চামড়াপণ্য, কৃষি, প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় ফেরার ফলে সার্বিকভাবে পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
ইপিবির দেওয়া তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রপ্তানি আয় ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে ১ হাজার ১০২ কোটি ২০ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা আগের বছরের চেয়ে ১১ দশমিক ৩৭ শতাংশ এবং রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেশি।
চলতি অর্থবছরের সেপ্টেম্বর শেষে ৯০৫ কোটি ৯৪ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে নিটওয়্যার পণ্য ৫১৬ কোটি ৪২ লাখ ডলার, প্রবৃদ্ধি প্রায় ১৬ শতাংশ। আর ওভেন পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৩৮৯ কোটি ৫২ লাখ ডলারের, প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরের সেপ্টেম্বর শেষে কৃষিপণ্য রপ্তানি আয় আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ২৭ শতাংশ বেড়ে ৩৪ কোটি ৪৫ লাখ ডলার হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় ইপিবির প্রতিবেদনে। প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানির আয় বেড়েছে ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ। তিন মাসে এ খাতে আয় হয়েছে ৩ কোটি ৭ লাখ ডলার। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি আয়েও প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ সময় চামড়াজাত খাত থেকে রপ্তানি আয় এসেছে ২৭ কোটি ১৩ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১০ শতাংশ বেশি।
সেপ্টেম্বর শেষে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ আয় করেছে ২১ কোটি ২৩ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩০ দশমিক ৯৭ শতাংশ কম।
দেশে রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৫ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। করোনার কারণে গত মার্চ থেকে এ খাতের রপ্তানি কমে যায়। তবে গত জুন থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। এর ধারাবাহিকতা জুলাই ও আগস্ট এমনকি সেপ্টেম্বরেও রপ্তানির পরিমাণ বাড়ছে।
ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জন্য ৪ হাজার ৩৫০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে সরকার। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি করে ৩ হাজার ৮৭৬ কোটি ডলার আয় করেছিল বাংলাদেশ।
এমকে