এইতমধ্যে এই ঘটনায়, লাহুড়িয়া ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী কামরান সিকদারকে প্রধান আসামি করে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। আরও অজ্ঞাত ৭/৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।
গতকাল (০৬ এপ্রিল) সরেজমিনে দেখা যায়, লাহুড়িয়া পশ্চিমপাড়ার প্রায় ২৫-৩০টি পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। ঘরবাড়ি ভাঙচুর, গরু-ছাগল, ধান-চৈতালী, স্বর্ণালঙ্কারসহ সর্বস্ব লুট করে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা।
সুমন, হাসিবুর, খোদেজা বেগম, রাহিলা, শিরিনা, সুলতানা – সবাই জানাচ্ছেন একই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা। কেউ গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ করছেন, কেউ বসতঘরে ফিরতে পারছেন না, কেউ আবার আশ্রয় নিয়েছেন পাশের গ্রামে।
হাসান মোল্যার স্ত্রী শিরিনা বলেন, “আমাদের ঘরবাড়ি সব ভেঙে দিয়েছে। ৩টি গরু, ২টি ছাগল, ৮০টি কবুতর, ৭৫টি টাইগার মুরগি, গোলা ভরা ধান-কলাই-মুসুরি—সবই লুট হয়েছে।”
সেনা সদস্য সুরুজ স্ত্রী সোহানা বলেন, “আমার শ্বশুর একজন আলেম, স্বামী সেনা সদস্য। তাদের ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে। স্বর্ণ, গরু, টাকা সব নিয়ে গেছে। এমনকি হত্যার হুমকিও দিয়েছে।”
ভুক্তভোগীরা বলছেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে থাকলেও কার্যত কিছুই করতে পারছে না। বরং পুলিশের সামনেই লুটপাট চলছে।
গৃহবধূ সুলতানা বলেন,“পুলিশ পাহারায় থেকেও কিছু করছে না। ওরা পুলিশের সামনেই এসব করছে।”
এ বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে লোহাগড়া থানার ওসি মো. আশিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন,“পুলিশ প্রথম থেকেই মাঠে রয়েছে। এলাকাটি ভিলেজ পলিটিক্সে জটিল। দু’পক্ষ একে অপরকে দোষ দিচ্ছে। লুটপাটের যে অভিযোগ উঠেছে, অনেক ক্ষেত্রেই নিজেরাই মালামাল সরিয়ে নিয়ে তা বলে থাকতে পারে। আসামি গ্রেপ্তারে কাজ চলছে।”
নিহত আকবর শেখের ভাইপো শরিফুল ইসলাম বলেন, “আমার চাচা শান্তিপ্রিয় মানুষ ছিলেন। ঈদের দিন নামাজ পড়ে বসে ছিলেন। পরে ফাঁড়িতে ডেকে নিয়ে ৫ জনের স্বাক্ষর নেয়া হয়। আসার পথে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। আমাদের বিরুদ্ধে যে লুটপাটের অভিযোগ, তা মিথ্যা। আমরা শোকে পাথর হয়ে আছি।”
সংঘর্ষের পেছনে কী?
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মনিরুল জমাদ্দার ও মিল্টন জমাদ্দার গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিনের আধিপত্য বিস্তারের বিরোধ থেকেই এ সংঘর্ষের সূচনা। ঈদের দিনে এক তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়, যার বলি হন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।