সূর্যের অগ্নিবমন! বিস্ফোরণে ধুন্ধুমার, মহাশূন্যে অল্পের জন্য রক্ষা পৃথিবীর

সূর্যের অগ্নিবমন! বিস্ফোরণে ধুন্ধুমার, মহাশূন্যে অল্পের জন্য রক্ষা পৃথিবীর

#নয়া দিল্লি: গত ১১ বছরের চক্রে সূর্য এখন বেশ সক্রিয় অবস্থায় রয়েছে। আর এই অতিসক্রিয়তার ফলেই বিজ্ঞানী এবং গবেষকরা প্রত্যক্ষ করছেন একের পর এক সোলার ফ্লেয়ার (Solar Flare) এবং কোরোনাল মাস ইজেকশন (Coronal Mass Ejection)। আসলে সৌরপৃষ্ঠে বিস্ফোরণের ফলেই এ ধরনের তেজষ্ক্রিয় বিকিরণ হয়। এই সৌর ঝড়ের কয়েকটি ধেয়ে আসে পৃথিবীর দিকে, কিছু অন্য দিকে যায়। সৌভাগ্য বশত, এখনও কোনও বড় ঝঞ্ঝা পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসেনি। তার ফলে কোনও বড় বিপর্যয় ঘটেনি মানুষের গ্রহে। তেমন বড় এবং ক্ষমতাশালী সৌর ঝড় পৃথিবীর জিপিএস (GPS), রেডিও (Radio)-ব্যবস্থার উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। একেবারে অন্ধকার হয়ে যেতে পারে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি।
নাসা (NASA) জানিয়েছে, সৌরপৃষ্ঠে কালো কালো কিছু দাগের সৃষ্টি হয়। সেগুলিতেই পরবর্তীকালে ব্যাপক বিস্ফোরণ ঘটে। আর তার ফলেই শুরু হয় সৌর ঝড়। আসলে ওই কালো দাগগুলি থেকে নির্গত হয় চৌম্বকীয় শক্তি (Magnetic Energy)।


সূর্যের গায়ে এই সব কালো দাগকে বিজ্ঞানীরা ‘সানস্পট’ (SunSpot) বলে চিহ্নিত করেন। প্রকৃত পক্ষে সূর্যের অন্য অংশের থেকে এই সব এলাকার উত্তাপ বেশ অনেকটা কমে যায় বলেই তা কালো হয়ে যায়। যদিও এই ‘সুশীতল’ অংশের উত্তাপ ‘থার্মোমিটারে মাপলে’ (মাপতে পারলে অবশ্য) দাঁড়াবে প্রায় ৬,৫০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের আশপাশে। এই কালো সৌর কলঙ্কের আশপাশের চৌম্বকীয় ক্ষেত্র (Magnetic Field) ক্রমাগত নিজেদের বিন্যাস বদলাতে থাকে, একে অপরকে অতিক্রম করতে চায়, আর জট পাকিয়ে ফেলে। তারপরেই ঘটে মহা বিস্ফোরণ। শক্তির এই আকস্মিক বিস্ফোরণের ফলেই সৌরঝড় তৈরি হয়। সূর্য পৃষ্ঠ থেকে মহাশূন্যে ছড়িয়ে পড়ে ভয়ঙ্কর বিকিরণ (Radiation)।


এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কোরোনাল মাস ইজেকশন বা CME এবং সৌর ঝড় সম্পর্কে—

সৌরঝড় বা Solar Flare কী?


সৌরকলঙ্ক বা Sunspot-এ চৌম্বকীয় শক্তির প্রবল বিস্ফোরণের ফলে যে বিকিরণ মহাশূন্যে ছড়িয়ে পড়ে তাকেই সৌরঝড় বলে। সৌরমণ্ডলে এক থেকে বড় বিস্ফোরণ আর কিছু হয় না। এই সৌরঝড় কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। সৌরঝড়ের সময় প্রতিটি তরঙ্গদৈর্ঘ্যে যে ফোটন (Photon) কণা নির্গত হয়, তার দ্বারাই এই ঝড় দৃশ্যমান হয়। এই দৃশ্য দেখার জন্য এক্স-রে বা অপটিকাল লাইট ব্যবহার করা হয় প্রাথমিক ভাবে।


সৌরঝড়ের উত্তাপ কেমন?


সৌরঝড় বা নির্গত শিখার উত্তাপ প্রায় ১০ মিলিয়ন ডিগ্রি কেলভিন (বা ১৮ মিলিয়ন ডিগ্রি ফারেনহাইট) থেকে ১০০ মিলিয়ন ডিগ্রি কেলভিন পর্যন্ত হতে পারে। এমনই জানিয়েছে নাসা। যদিও সূর্যের কেন্দ্রের উত্তাপ ২৭ মিলিয়ন ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ১৫ মিলিয়ন ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আরও পড়ুন: ব্যবহার করুন Instagram Dual! ভিউ বাড়বে লাফিয়ে লাফিয়ে! কী করতে হবে জানুন


সৌরঝড়ের কারণ কী?


সূর্য পৃষ্ঠ সক্রিয় অঞ্চল। এটি মূলত বৈদ্যুতিক চার্জযুক্ত গ্যাসের দ্বারা তৈরি। তার ফলে বেশ কিছু অঞ্চলে শক্তিশালী চৌম্বকীয় ক্ষেত্র তৈরি হয়। এই চৌম্বকীয় ক্ষেত্র ঘূর্ণায়মান গ্যাসের প্রভাবে প্রসারিত সঙ্কুচিত হতে থাকে। কখনও তাতে জট পাকিয়ে যায়, তার ফলেই বিস্ফোরণ ঘটে।

CME কী?


নাসার তরফ থেকে জানা গিয়েছে, কোরোনাল মাস ইজেকশন বা CME হল সৌর প্লাজমার বড় সড় মেঘ। এই মেঘের মধ্যেই থাকে চৌম্বকীয় ক্ষেত্রেও। সূর্যপৃষ্ঠে বিস্ফোরণের পর এই সবটা নিয়ে সে মহাশূন্যে ছড়িয়ে পড়ে। বিশাল এই তরঙ্গ ছুটে যায় কোটি কোটি মাইল। আর সে পথে কোনও গ্রহ পড়লে তার নিজস্ব চৌম্বকীয় ক্ষেত্রে সরাসরি আঘাত হানে সৌরঝড়।

Published by:Piya Banerjee

First published:

Tags: Earth, NASA, Solar flares

Explore More Districts