সুতা আমদানির মারপ্যাঁচে তৈরি পোশাকশিল্পের ক্ষতিটা কোথায়

সুতা আমদানির মারপ্যাঁচে তৈরি পোশাকশিল্পের ক্ষতিটা কোথায়

বস্ত্রকলের মালিকদের প্রায়ই বলতে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে গ্যাস–সংকটে ভুগছেন। তাঁরা অতিরিক্ত দাম দিয়েও চাহিদামতো গ্যাস পাচ্ছেন না। শুল্ক-কর, ব্যাংকঋণের সুদহার বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণে ব্যবসার খরচ বাড়ছে। এতে তাঁদের উৎপাদন ব্যয়ও ব্যাপকভাবে বাড়ছে। কথাগুলো শতভাগ সত্য। ফলে দেশি বস্ত্রকলগুলোর প্রতিযোগিতা সক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে সরকারকে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। যেহেতু বাড়তি টাকা দিয়েও তাঁরা গ্যাস পাচ্ছেন না, তাঁদের কীভাবে প্রণোদনা দেওয়া যায়, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ, দেশের ভেতরে শক্তিশালী সংযোগ শিল্প না থাকলে তৈরি পোশাকের রপ্তানিও একসময় না একসময় ভয়াবহ বিপদে পড়বে। ফলে গ্যাস–সংকটের মতো মূল সমস্যার সমাধান না করে হুট করে সুতার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল আমদানি প্রক্রিয়া জটিল করলে শেষ বিচারে দেশেরই বড় ধরনের ক্ষতি হবে।

করোনার পর গত চার থেকে পাঁচ বছরে দেশে-বিদেশে একের পর এক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে তৈরি পোশাকশিল্প। তার মধ্যে রয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা, ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক ইত্যাদি। এত কিছুর পর বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বাড়ছে। ভবিষ্যতেও বাড়বে আশা করা যায়। তার কারণ বাংলাদেশ এই জায়গায় বড় ধরনের সক্ষমতা ও দক্ষতা তৈরি করে ফেলেছে। তবে বিভিন্ন কারণে কাঁচামালের সংযোগ শিল্পে দুর্বলতা রয়েই গেছে।

পরিশেষে বলতে পারি, বর্তমান মুক্তবাজার অর্থনীতি কোনো কিছুকে আটকে রেখে উন্নতি করার সুযোগ নেই। অন্য দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেই আমাদের বিভিন্ন খাতকে শক্তিশালী হতে হবে। কোনো কিছু কৃত্রিমভাবে আটকে রাখলে কোনো না কোনোভাবে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বেই। দেশের ভেতরে প্রতিযোগিতামূলক দামে মানসম্মত পণ্য পেলে কখনোই অন্য দেশে যাবেন না উদ্যোক্তারা। ফলে সাময়িকভাবে একটি পক্ষকে সুবিধা না দিয়ে সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতি কীভাবে এগিয়ে যাবে, সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে সরকারকে। কারণ, আমরা সবাই বাংলাদেশের বিজয় দেখতে চাই।

ই-মেইল: [email protected]

Explore More Districts