সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া থেকে সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া রুটে ফেরি চালু রাখার দাবিতে মঙ্গল বার চট্টগ্রাম ও সন্দ্বীপে একাধিক মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছে সন্দ্বীপবাসী। ফেরি বন্ধ করার অপচেষ্টা করা হলে কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি দেন দ্বীপ উপজেলাটির বাসিন্দারা।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সন্দ্বীপের বাসিন্দারা বলেন, গত ২৪ মার্চ সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া থেকে সন্দ্বীপের গুপ্তছড়ায় ফেরি চালু হওয়ার পর সন্দ্বীপের মানুষের দীর্ঘদিনের নিরাপদ নৌ-যাতায়াতের পথ কিছুটা সুগম হয়। কিন্তু কিছু স্বার্থান্বেষী মহল নিজেদের পকেট ভারী করার জন্য ফেরি বন্ধ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। সরকারের প্রতিশ্রুত কোস্টাল ফেরি চালুর আগ পর্যন্ত বর্তমানের কপোতাক্ষ ফেরিটি বাশবাড়ীয়া-গুপ্তছড়া রুট থেকে অপসারণের চেষ্টা যেন না করা হয়।
বক্তারা বলেন, এই কপোতাক্ষ ফেরির সাথে একই মানের একাধিক ফেরি শিগগিরই যুক্ত করতে হবে৷ এছাড়া ফেরি উদ্বোধনের দিন নৌ-পরিবহন উপদেষ্টা বিগ্রেডিয়ার (অব.) সাখাওয়াত হোসাইন বলেছিলেন ২টি সি-ট্রাক যুক্ত হবে, কিন্তু তা এখনো যুক্ত হয়নি।
বিআইডব্লিউটিএ ও বিআইডব্লিউটিসি এর মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা চক্র ছোট নৌযান চলার অনুমতি দিলেও অতি উৎসাহ নিয়ে ফেরি চলাচল বন্ধ করতে তৎপর হয়ে উঠছে। বছরের ৬/৭ মাস সাগর উত্তাল দেখিয়ে ফেরি বন্ধ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। অবিলম্বে এই চক্রের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দাবি জানান বক্তারা।
সিনিয়র সাংবাদিক সালেহ নোমানের সভাপতিত্বে ও সমাজকর্মী আমজাদ হোসেনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসাইন, সন্দ্বীপ পৌরসভা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মোশারফ হোসেন দিদার, সন্দ্বীপ উপজেলা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর হোসেন, সন্দ্বীপ উপজেলা বিএনপি আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শফিকুল ইসলাম, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি ফোরকান উদ্দীন রিজভী, উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আকবর ভূইয়া, সমাজকর্মী অধ্যক্ষ মোক্তাদের আজাদ খান, সন্দ্বীপ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুজা-উদ-দৌলা সজিব, যুগ্ম আহ্বায়ক নুর নবী, গণঅধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ নারী বিষয়ক সম্পাদক নাসরিন আক্তার, মিলাদ উদ্দীন মুন্না খাদেমুল ইসলাম, এম আর কে তারেক, নুর নবী রবিন, , মিলাদ হোসাইন, মাহবুবুর রহমান, সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
মানব বন্ধন শেষে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সালেহ নোমান বলেন, বিআিইডাব্লিউটসি এবং বিআইডাব্লিউটিএ’র দায়িত্ব হচ্ছে মাননীয় প্রধান উপদষ্টোর উদ্বোধন করা ফেরী সার্ভিসটি চালু রাখা। কিন্তু তারা উল্টো সেটি বন্ধ করে দেয়ার জন্য উঠে-পড়ে লেগেছে। উপকূলীয় এলাকায় ফেরী চালু রাখার ক্ষেত্রে এসব প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা না থাকলে নৌ-বাহিনীর সহায়তা নেয়া যেতে পারে। প্রয়োজনে বিদেশী বিশেষজ্ঞদের মতামতও নেয়া যেতে পারে।
বর্তমান আাহওয়ার সতর্ক সংকেত দেয়বর ক্ষেত্রে শত বছরের পুরানো পদ্ধতি সময়োপযোগী করার দাবিও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সন্দ্বীপ উপজেলা কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সন্দ্বীপ উপজেলা যুবদলের অহাবয়ক প্রভাষক নিঝুম খান। বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর আলাউদ্দীন শিকদার, সন্দ্বীপ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলমগীর হোসাইন ঠাকুর, সন্দ্বীপ প্রেস ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. মোজাম্মেল হোসেন, সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ ওমর ফয়সাল, ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি মাওলানা মীর ইসমাঈল, উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য আজমত আলী বাহাদুর, জামায়াতে ইসলামীর সন্দ্বীপ উপজেলা শাখার সেক্রেটারি মাওলানা আবু তাহের, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার মনির তালুকদার, যুগ্ম আহবায়ক আবুল কাসেম মাস্টার প্রমুখ।
মানববন্ধন কর্মসূচতি অংশ নিয়েছে, ‘সন্দ্বীপ ছাত্র ফোরাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়’, ‘সন্দ্বীপ ল স্টুডেন্ট ফোরাম’, ‘সন্দ্বীপ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার স্টুডেন্ট ফোরাম’, ‘সন্দ্বীপ নাবিক বহুমুখী সমবায় সমিতি’, ‘চট্টগ্রাম কলেজ স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন’, ‘আমরা সন্দ্বীপবাসী’, ‘সন্দ্বীপ নাগরিক সমাজ’, ‘ইসলামিক ছাত্র আন্দোলন সন্দ্বীপ’, ‘সন্দ্বীপ ছাত্র ও যুব পরিষদ’, ‘আলোকিত সংঘ’, ‘সন্দ্বীপ অধিকার আন্দোলন’, ‘উড়িরচর স্যোশাল এন্ড কালচারাল এসোসিয়েশন’, ‘সন্দ্বীপ ইসলামি কালচারাল ফোরাম’।