সীতাকুণ্ডে পরিবেশ-প্রতিবেশের প্রতি নেই মমতাবোধ; অভিযানের পর ঘুম ভাঙে সাংবাদিকদের – Chittagong News

সীতাকুণ্ডে পরিবেশ-প্রতিবেশের প্রতি নেই মমতাবোধ; অভিযানের পর ঘুম ভাঙে সাংবাদিকদের – Chittagong News

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সীতাকুণ্ড উপজেলার তুলাতলী সাগর উপকূল থেকে অবৈধ বিল্ডিং, বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন, কাটা তারের বেড়া, গেট ইত্যাদি সরিয়ে সেখানে ১ হাজার গাছের চারা রোপন করেছেন। সেখানে এখন নির্মল বাতাসে ঘুরে বেড়ায় বিভিন্ন প্রজাতির বক, বালিহাঁস, গাঙচিল পাখি। পাখিরা মাছ, শামুক, ঝিনুক, পোকা খায়। এদের প্রজনন এবং আবাসস্থল উপকূলীয় অঞ্চলের পরিবেশের উপর নির্ভরশীল। জলবায়ু পরিবর্তন, দূষণ এবং মানুষের বিভিন্ন কার্যকলাপ উপকূলীয় পাখিদের জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করেছিল। এমন উদ্যোগ সীতাকুণ্ডের ৯টি ইউনিয়ন ১টি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় আরো নেওয়া সম্ভব। জনপদের এমন খবর সাংবাদিকরাই বোশি জানবে। বেশি লিখবে। সেখানে সাংবাদিকদের ঘুম ভাঙাতে হয় প্রশাসনকে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে। এটি ঠেকানো সম্ভব হয়েছে একমাত্র জেলা প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপে। এরপরই সংবাদ প্রকাশিত হয়। কেন এই অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের সংবাদ প্রকাশ থেকে সাংবাদিকরা দুরে ছিলেন? কোন অদৃশ্য কারনে পরিবেশ দূষণ হয় এমন কার্যকলাপ সীতাকুণ্ডের সাংবাদিকরা গোপন করেন? কেন তারা আগে লিখেন না? কেন পরিবেশ প্রতিবেশের প্রতি সেই মমতা সাংবাদিকরা দেখাতে ব্যর্থ হন। আপনারা সাংবাদিকরা যদি লিখেন আমরা “উই কেন কক্সবাজার” উদ্যোগ নিবো।

সাগর উপকূলের ঐ অভিযানে নেতৃত্ব প্রদান করেন সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: ফখরুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মাহমুদ হাসান, ভাটিয়ারী ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ জয়নাল আবেদীন ।

অভিযানে সহায়তা করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ পুলিশ, র‍্যাব, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, এবং বন বিভাগ। পরিবেশ দূষণ ঠেকাতে প্রথম উদ্যোগতো সীতাকুণ্ডের সাংবাদিকরাই নিতে পারতেন। সাংবাদিকদের একটি রিপোর্ট প্রশাসনকে দেখিয়ে দিতো কোথায় কোথায় পরিবেশ দূষণ হচ্ছে কেন হচ্ছে।

শুক্রবার (৪ জুলাই) জলবায়ু পরিবর্তন রোধে এ সকল বিষয় উঠে এসেছে সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবে আয়োজিত একটি পরিবেশ বিষয়ক আলোচনা সভায়। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘উই ক্যান কক্সবাজার’ এর আয়োজনে আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয় এদিন সকাল দশটা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত।

কল-কারখানার বিষাক্ত ধোঁয়া, ক্যামিক্যাল বর্জ্য, সাগর থেকে বালু উত্তোলন, পাহাড় কাটা, বনভূমি উজার সহ পরিবেশ বিধ্বংসী সকল কর্মকান্ডই ঘটছে সীতাকুণ্ডে। এর ফলে সীতাকুণ্ডে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ, খাল-বিলের পানি বিনষ্ট হয়ে মাছ ফষলের ব্যাপক ক্ষতি সাধণ, নদীর নাব্যতা হারোনো, এবং জীব-বৈচিত্র ধ্বংস হচ্ছে।

ইতোমধ্যে এ উপজেলায় জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। এবারের গ্রীস্মে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সীতাকুণ্ডে। জলবায়ু পরির্তনের এ ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে হলে পরিবেশ বিধ্বংসী সকল কর্মকান্ড এখনই বন্ধ করতে হবে। বাড়াতে হবে জনসচেতনতা এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকদের আইন মানতে বাধ্য করতে হবে। একই সাথে বালূ উত্তোলন ও পাহাড় কাটা বন্ধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

মূল সেশন পরিচালনা করেন আয়োজক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক ওমর ফারুক। সহযোগী হিসেবে ছিলেন চট্টগ্রাম সমন্বয়ক ইফতিয়াজ উদ্দিন ইফতি, ট্রেজারার শেখ ওয়াহিদা রহমান ঐশী এবং সংগঠনের সদস্যবৃন্দ।

ইফতিয়াজ ইফতির সঞ্চলনায় এতে বক্তব্য রাখেন সীতাকুণ্ড প্রেস ক্লাবের আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম, সদস্য সচিব সুলাইমান মেহেদী হাসান, যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম বিএসসি, আহ্বায়ক কমিটির সদস্যৃ হাকিম মোল্লা, মো. কামরুজ্জামান, এম কে মনির, ইলিয়াছ ভূঁইয়া, ফারহান সিদ্দিক, সদস্য- মো. মহিউদ্দিন, আশরাফুল ইসলাম শাহিন, আনোয়ারুল আজিম, আশরাফ উদ্দিন, জামশেদ হোসেন, হাসান তারেক, আব্দুল মামুনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা। অনুষ্ঠানে সীতাকুণ্ড প্রেস ক্লাবের ১০ জন সাংবাদিককে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সাংবাদিকতায় উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।

এমজে/সিটিজিনিউজ

Explore More Districts