সিলেট নগরী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ব্যাটারিচালিত রিকশা। যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা করানোয় বাড়ছে যানজট। চালকরা বেপরোয়া, প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। সবকিছু দেখেও নীরব সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) ও সিটি করপোরেশন (সিসিক) কর্তৃপক্ষ।
গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর নগরীর প্রধান প্রধান সড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ সব সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করে এসএমপি। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে অবৈধ যান জব্দসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়। এতে কিছুদিন কাজও হয়। নগরীর বাইরে চলাচল করতে থাকে এসব রিকশা। কিন্তু কর্তৃপক্ষের অবহেলায় কিছুদিন বাদেই নগরীতে ফেরেন ব্যাটারি রিকশার চালকরা। পুলিশের সঙ্গে ইঁদুর-বিড়াল খেলার মাধ্যমে অবাধে চলাচল করছেন তারা।
নগরীর বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, আম্বরখানা, লামাবাজার, শিবগঞ্জ, সুবিদবাজার, কুমারপাড়া, নাইওরপুল, টিলাগড়, চৌহাট্টা, রিকাবীবাজার, ওসমানী মেডিকেল কলেজ রোডসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যাটারি রিকশার দৌরাত্ম্য দেখা যায়। ট্রাফিক পুলিশের নাকের ডগায় চলাচল করছে।
সিলেট নগরীতে প্রায় ২৫ হাজার ব্যাটারিচালিত যানবাহন চলাচল করছে। অদক্ষ চালক, এলোমেলো ও উল্টোপথে চলাচল, যেখানে সেখানে রিকশা ঘোরানো–সব মিলিয়ে রাস্তায় প্রতিদিন তৈরি হচ্ছে বিশৃঙ্খলা। প্রায়ই ব্যাটারিচালিত রিকশার যাত্রীরা দুর্ঘটনায় হতাহত হচ্ছেন। গত ১৯ এপ্রিল চৌহাট্টায় ব্যাটারি রিকশার ধাক্কায় মোটরসাইকেল নিয়ে ট্রাকের নিচে পড়ে ঘটনাস্থলে নিহত হন দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি এলাকার শহিদ আহমদ চৌধুরী।
নগরীর শিবগঞ্জের বাসিন্দা বুরহান উদ্দিন জানান, শিবগঞ্জ পয়েন্টে তাঁর বাড়ি। এ কারণে প্রতিনিয়ত নানা ঘটনা দেখতে হয়। কিছুদিন আগেও বেশির ভাগ রিকশা নগরীর অলিগলিতে চলাচল করেছে। এখন মূল সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এমনকি নিয়ন্ত্রণহীন গতির কারণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে অন্যান্য যানবাহনের চলাচল।
রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদের নগর শাখার সভাপতি প্রণব জ্যোতি পাল বলেন, দীর্ঘদিন আমরা এসব রিকশা চলাচলের বিষয়ে একটি নীতিমালা ও রেজিস্ট্রেশন করার দাবি জানিয়ে আসছি। উচ্চ আদালতের রায়ও আছে। প্রধান সড়কে চলাচলের অনুমতি, লাইসেন্স ও ট্রাফিক পুলিশের ধরপাকড় বন্ধের দাবি জানান তিনি।
এসএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) সাইফুল ইসলাম জানান, অবৈধ ব্যাটারি রিকশার বিরুদ্ধে তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিন ডাম্পিং করেও তাদের ঠেকানো যাচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘অনেকেই পেটের তাড়নায় এসব রিকশা চালান। একেবারে বন্ধ করতে হলে, তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের চিন্তা আগে করতে হবে।’