সিলেট-আখাউড়া সেকশনের কুলাউড়ার লংলা রেলওয়ে স্টেশন বন্ধ থাকায় ক্রসিং বিড়ম্বনায় ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটছে। স্টেশনমাস্টার সংকট ও সিগন্যালিং ত্রুটির কারণে প্রায় এক বছর ধরে বন্ধ ওই স্টেশনে ট্রেনের ক্রসিং। এতে বিলম্বে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছে চলাচলকারী ট্রেন। ক্রসিংয়ে আটকে পড়া ট্রেনের দেরি হওয়ার কারণে বাড়ছে যাত্রী ভোগান্তি।
২০২২ সালের আগস্ট থেকে কুলাউড়া উপজেলার লংলা রেলওয়ে স্টেশনটি নানা সংকটের কারণে বন্ধ রয়েছে। যার কারণে বর্তমানে সিগন্যালসহ বিভিন্ন কারিগরি সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে এই রুটে। এদিকে চলতি বছরের আগস্টে একজন স্টেশনমাস্টারকে দায়িত্ব দিলেও সিগন্যালের কারিগরি ত্রুটির কারণে লংলা স্টেশনের ট্রেনের ক্রসিং দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না, যার কারণে ওই স্টেশনমাস্টারকে বদলি করে শায়েস্তাগঞ্জে সংযুক্ত করে ফের বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্টেশনের কার্যক্রম।
লংলা স্টেশন বন্ধ থাকায় সিলেট থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর ট্রেনগুলোকে বর্তমানে কুলাউড়া এবং ২৫ কিলোমিটার দূরবর্তী শমশেরনগর স্টেশনে ক্রসিং দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে ক্রসিংয়ে আটকে পড়ে পারাবত, পাহাড়িকা এবং জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসের মতো গুরুত্বপূর্ণ আন্তঃনগর ট্রেনগুলো আধাঘণ্টা থেকে আড়াই ঘণ্টা পর্যন্ত শিডিউল বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন এ লাইন দিয়ে দুটি লোকালসহ আন্তঃনগর ১২টি ট্রেন সিলেট, ঢাকা ও চট্টগ্রামের পথে চলাচল করে। শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে প্রতিটি ট্রেনের যাত্রীদের ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে। আগে কুলাউড়া থেকে ছেড়ে আসা ঢাকা ও চট্টগ্রামগামী যেকোনো ট্রেন লংলা স্টেশনে ক্রসিং দেওয়া হতো। সেটি বর্তমানে বন্ধ থাকায় ট্রেন ক্রসিংয়ে শিডিউল সমস্যা হচ্ছে। এতে যাত্রীরা সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না।
এই রেলরুটে চলাচলকারী নিয়মিত যাত্রী কুলাউড়ার লংলা কলেজের প্রভাষক ইন্দ্রজিৎ দেব ও চাকরিজীবী শামসুল আজাদ জানান, কুলাউড়া থেকে সিলেট এবং ঢাকায় নিয়মিত যাতায়াত করেন তারা। ট্রেন বিলম্বের কারণে প্রায়ই তাদের অফিসসহ অন্যান্য কাজের জন্য গন্তব্যে সময়মতো পৌঁছাতে পারছেন না। এতে তাদের মতো অন্য যাত্রীদেরও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
কুলাউড়া রেলওয়ে জংশনে কর্তব্যরত ভারপ্রাপ্ত স্টেশনমাস্টার রোমান আহমদ জানান, ক্রসিং বিড়ম্বনার কারণে ট্রেন যাত্রায় কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। লংলা স্টেশন বন্ধ থাকায় কুলাউড়া থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরবর্তী শমশেরনগর স্টেশনে ট্রেনের ক্রসিং করাতে হচ্ছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
রেলওয়ের সিগন্যাল ইন্সপেক্টর (কুলাউড়া) জিয়াউর রহমান জানান, বছরখানেক ধরে লংলা স্টেশন বন্ধ থাকায় সিগন্যালিংয়ের যন্ত্রপাতিতে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। পুনরায় সিগন্যাল সমস্যার সমাধান করতে মালপত্র সরবরাহের জন্য চাহিদা দিয়েছি।
সিলেট-আখাউড়া সেকশনের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর তৌফিকুল আজিম জানান, লোকবল সংকটের কারণে লংলাসহ বেশ কয়েকটি স্টেশন বন্ধ রয়েছে। কুলাউড়া-শমশেরনগরের মধ্যবর্তী লংলা স্টেশনকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ক্রসিং সমস্যা দূর করার জন্য।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন