আজিজুর রহমান মুন্না, সিরাজগঞ্জঃ
সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে এবং নদী ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহড়ি ঢল এবং ভারী বৃষ্টিপাত যমুনা নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্ট এলাকায় ২০ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
শনিবার (৬ জুলাই) সকালে পানি সমতল রেকর্ড করা হয় ১৩ দশমিক ৪৮ সেন্টিমিটার। এদিকে কাজিপুর পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে, পানিতীব্র স্রোতে জেলার শাহজাদপুর উপজেলা জালালপুর ও কৈজুরি ইউনিয়নে নদী ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে নদীতে বিলীন হয়েচে কয়েকশত ঘর-বাড়ি, আবাদি জমি ও বিভিন্ন স্থাপনা, ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে বাড়ি-ঘর, বিভিন্ন স্থাপনা। ইতিমধ্যে তাড়াতাড়ি করে কেউ কেউ বাড়ি-ঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। অনেকে উচু রাস্তায় আশ্রয় নিয়ে খোলা আকাশের নীচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। নদীর ডানতীর রক্ষা প্রকল্পের সাড়ে ৬০০ কোটি টাকার কাজ চরমার থাকলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের গাফিলতিতে নিদিষ্ট সময়ে কাজ না করায় শনিবার ৬ জুলাই দুপুরে নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকাবাসীরা মানববন্ধন করেছে।
এদিকে, যমুনা নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পাওয়ায় কাজিপুর, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও চৌহালি উপজেলার ৪০ টি ইউনিয়নে ইতিমধ্যে নদীর পানি ঢুকেছে এতে প্রায় পাঁচ উপজেলার এক হাজার ২৭৬ টি পরিবার পানিবন্দিতে রয়েছে। এদিকে, ৪০৮ হেক্টর জমির রোপা আমন বোনা আমন, বীজতলা, তিল, বাদাম, শাকসবজি ও কলাবাগান পানিতে ডুবে গেছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান , আরও কয়েকদিন যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি হবে। এতে মাঝারি বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। ভাঙন রোঁধে জিও টিউব ফেলা হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বন্যা মোকাবিলায় সব প্রস্তুতি নিয়েছে।গত কয়েকদিন-রাত ধরে যমুনানদীরপানি ফুলেফেঁপে দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি হচ্ছে বিপৎ সীমা অতিক্রম করেছে। জেলার ভাঙনকবলিত এলাকাগুলো জিওটিউব ও জিওব্যাগ ডাম্পিং করে ভাঙন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে। এদিকে সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবলু কুমার সূত্রধর বলেন, যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়া চরাঞ্চল, নিম্নাঞ্চল সহ অনেক এলাকায় প্লাবিত হয়ে জেলার ৪০৮ হেক্টর জমির পাট, তিল, মরিচ সহ অন্যান্য ফসল পানিতে ডুবে গেছে এতে ক্ষতির পরিমান এখন নিরুপন করতে পারেনি।
সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা মোঃ আক্তারুজ্জামান বলেন, বন্যাকবলিতদের জন্য ৫০০ মেট্রিক টন চাল, ১০ লাখ টাকা, ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার এবং ৫০০ ব্যান্ডিল ঢেউটিন মজুদ রাখা হয়েছে। সেগুলো বন্যাকবলিতদের মধ্যে সময়মত বিতরণ করা হবে।