- নারায়ণগঞ্জ, পটুয়াখালী প্রতিদিন, শহরের বাইরে, সারাদেশ
- পবিপ্রবিতে বর্ণিল আয়োজনে পহেলা বৈশাখ উদযাপন
সিদ্ধিরগঞ্জে ত্রিপল মার্ডার : স্বামীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী
- আপডেট টাইম : এপ্রিল, ১৮, ২০২৫, ২:০৭ পূর্বাহ্ণ
- 33 পড়েছেন
নিজস্ব সংবাদদাতা :
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে স্ত্রী-সন্তানসহ তিনজনকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে স্বামী ইয়াছিন আলী।
বুধবার(১৬ এপ্রিল) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শামসুর রহমানের আদালতে তিনি এই জবানবন্দি দেন।
এর সত্যতা নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের ইনচার্জ মোহাম্মদ কাইউম খান গণমাধ্যমকে বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জে তিন খুনের ঘটনায় আসামী ইয়াছিন মিয়াকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল। রিমান্ডের চতুর্থ দিন বুধবার ইয়াছিন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। জবানবন্দী শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
আসামীর জবানবন্দীর বরাত দিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) মো. হাসিনুজ্জামান জানান, ইয়াছিন ঈদের আগের দিন জেল থেকে ছাড়া পান। এর পর থেকে তিনি স্ত্রী লামিয়ার সঙ্গে থাকার জন্য চেষ্টা করতে থাকেন। কিন্তু ইয়াছিনের মাদক সেবন, উচ্ছৃঙ্খল ও কর্মক্ষম না থাকায় তার সঙ্গে থাকতে রাজি ছিলেন না লামিয়া। তিনি তার বড় বোন স্বপ্না আক্তারের সঙ্গে দুই বছরের সন্তান আবদুল্লাহ্ রাফসানকে নিয়ে আলাদা বসবাস শুরু করেন। ঈদের পর ৮ এপ্রিল রাত ৯ টার দিকে ইয়াছিন সিদ্ধিরগঞ্জের পশ্চিম মিজমিজি পুকুরপাড় এলাকার লামিয়ার ভাড়া বাড়িতে যান। ইয়াছিন ওই বাড়িতে আসায় লামিয়ার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার বড় বোন স্বপ্না আক্তার। স্বপ্না মানসিক ভারসাম্যহীন। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে স্বপ্না আক্তার বটি নিয়ে ছোট বোন লামিয়াকে মারতে আসেন। এ সময় ইয়াছিন বাসায় আসায় অশান্তি হওয়ায় তাকে বকাঝকা করেন লামিয়া। এতে ইয়াছিন ক্ষিপ্ত হয়ে স্বপ্না আক্তারের হাত থেকে বটি নিয়ে লামিয়ার ঘাড়ে কোপ দেন। এতে লামিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এসময় বড় বোন স্বপ্না আক্তার চিৎকার শুরু করলে তাকেও বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে ইয়াছিন। পরে নিজের সন্তান আবদুল্লাহ্ রাফসানকে গলার তাবিজের সুতা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে সে।
মো. হাসিনুজ্জামান আরো জানান, হত্যার পর ইয়াছিন স্ত্রী লামিয়া ও তাঁর বোন স্বপ্নার মাথা ও হাত-পা শরীর থেকে আলাদা করে একটি বস্তায় ভরেন। এছাড়া তাদের শরীরের বাকী অংশ কম্বল ও কাঁথা দিয়ে পেঁচিয়ে আরেক বস্তায় ভরেন। পরে বাড়ির সামনে ময়লার ভাগাড়ে তাঁদের তিনজনের মরদেহ চাপা দেন ইয়াছিন। পরে লামিয়া ও স্বপ্নার রক্তমাখা কাপড় লাগেজে ভরে বাসা থেকে ১০০ গজ দূরে পুকুরে ফেলে দেন। ওই একই পুকুরে হত্যায় ব্যবহৃত বঁটিও ফেলে দেন তিনি।
উল্লেখ্য, ১১ এপ্রিল দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিমপাড়া পুকুরপাড় এলাকা থেকে দুই নারীর খন্ডিতসহ এক শিশুর অর্ধগলিত বস্তাবন্দী মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত লামিয়ার মেজ বোন মুনমুন আক্তার বাদী হয়ে নিহত লামিয়ার স্বামী ইয়াছিন আলী, তাঁর বাবা দুলাল মিয়া এবং বোন শিমু আক্তারকে আসামী করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।