সাড়ে দশটায় শুরু দেড়টায় ছুটি

সাড়ে দশটায় শুরু দেড়টায় ছুটি

ধর্মপাশা প্রতিনিধি
দুই শিফটের সরকারি প্রাথমিক সকাল নয়টায় পাঠদান শুরু এবং বিকেল চারটায় ছুটি হওয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু ধর্মপাশা উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের বাখরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সকাল সাড়ে দশটায় পাঠদান শুরু এবং দুপুর দেড়টার দিকে ছুটি হয়ে যায়। শিক্ষকেরা বিদ্যালয়ে পৌঁছে কোনো রকমে পাঠদান করে তড়িতড়ি করে চলে যান। দীর্ঘদিন এভাবেই চলছে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পাঠদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। গত বুধবার দুপুর দেড়টার মধ্যে ওই বিদ্যালয় ছুটি হয়ে যাওয়ায় বাখরপুর গ্রামের কলেজ পড়–য়া বসিউজ্জামান দূর্জয় নামের এক শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ের এমন চিত্র ফেসবুকে লাইভ করেন এবং দীর্ঘদিন ধরে পাঠদান ব্যহত হওয়ার বিষয়টি বর্ণনা করেন। মূহুর্তেই সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে ওই বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম নিয়ে শুরু হয় বিরূপ প্রতিক্রিয়া। তবে প্রধান শিক্ষক দাবি করেছেন তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয় বরং; পূর্ব শত্রুতার জেরে এমন ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে বিদ্যালয়ের এমন চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এবং দুপুরের মধ্যে বিদ্যালয় ছুটি হওয়ার ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ দুই সহকারী শিক্ষককে শোকজ করেছেন উপজেলা প্রাথমিক কর্মকর্তা।
১৯৩১ সালে প্রতিষ্ঠিত বাখরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১৭৯ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। আর ৪ জন শিক্ষকের মধ্যে ১ জন শিক্ষককে কয়েক মাস আগে অন্য একটি বিদ্যালয়ে প্রেষণে পাঠানো হয়েছে। বতর্মানে প্রধান শিক্ষক মোফাজ্জল হোসেন তালুকদার, তাঁর স্ত্রী সহকারী শিক্ষক রিপ্তা আক্তার ও আরেক সহকারী শিক্ষক শেফালী আক্তার পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের পাঠদান নির্ধারিত সময়ের পরে ও নির্ধারিত সময়ের আগেই ছুটি হচ্ছে। এতে করে শিক্ষার্থীরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থী বসিউজ্জামান দূর্জয় বলেন, ‘বেশ কিছুদিন যাবত খেয়াল করছি সকাল সাড়ে দশটার দিকে বিদ্যালয় খোলা হয় এবং দেড়টার দিকে ছুটি হয়ে যায়। একটি সরকারি বিদ্যালয় এভাবে চলতে পারেনা।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোফাজ্জল হোসেন তালুকদার বলেন, ‘আমি দাপ্তরিক কাজে উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ে টিইও স্যারের কাছে ছিলাম। সহকারী শিক্ষক রিপ্তা আক্তার করোনার বুস্টার ডোজ নিতে উপজেলা সদরে গিয়েছিলেন এবং শেফালী আক্তারকে বিদ্যালয়ের দায়িত্ব দিয়ে আসলেও তাঁর (শেফালী) সন্তানের অসুখের খবর শুনে দুপুর ১টার দিকে চলে যায়। সেই সুযোগে ভিডিও করা হয়েছে। কেউ বলতে পারবে না কোনোদিন এমনটি হয়েছে।’
উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘সহকারী শিক্ষক রিপ্তা আক্তার বুস্টার ডোজ গ্রহণের জন্য ছুটি নিয়ে যাননি।’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মানবেন্দ্র দাস বলেন, ‘বুধবার নির্ধারিত সময়ের আগে বিদ্যালয় ছুটি এবং এ বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় তিন শিক্ষককেই শোকজ করা হয়েছে। তাঁদেরকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।’

Explore More Districts