স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামমুখর যাপিত জীবনের মূলচিন্তা ছিল সাধারণ মানুষের কল্যাণ, তাদের জীবনের মানোন্নয়ন। সেটা তিনি রাজনৈতিক জীবনের একেবারে শুরুতেই আরম্ভ করেছিলেন। আমরা যদি দেখি, ছাত্রজীবনের শুরু থেকেই তিনি কৃষক ও সাধারণ মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করেছেন। এমনকি ছাত্রাবস্থাতেও মানুষের বাড়ি থেকে মুষ্টিচাল সংগ্রহ করে সাধারণের সন্তানদের লেখাপড়ার সুযোগ করে দিতেন।
পরবর্তীকালে আমরা দেখেছি, বিভিন্ন সংকটে-বিপর্যয়ে বার বার তিনি সাধারণ মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন। ১৯৭৩ সালের দূর্ভিক্ষের সময় দারুণ মর্মাহত বঙ্গবন্ধু ক্ষুধার্ত মানুষদের কষ্ট লাঘবে লঙরখানা খুলে তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। একইভাবে ১৯৪৭ সালের দেশভাগের সময় যখন সীমান্তের দুই পাড়ের মানুষের স্থানান্তর শুরু হলো, তখনও মানুষের কষ্ট দূর করবার জন্য তিনি আসানসোল পর্যন্ত গিয়েছেন ত্রাণ শিবির পরিচালনা করতে। সুতরাং সাধারণ মানুষের দুঃখ-কষ্ট দূর করাটাই ছিল তাঁর জীবনের মূল লক্ষ্য এবং তাঁর আন্দোলনেরও মূল কথা। সেইঅর্থে অর্থনীতির মুক্তির বিষয়টি তাকে ভীষণভাবে নাড়া দিতো।
আমরা লক্ষ্য করলাম, বাংলাদেশে তাঁর রাজনীতি শুরুর পর্বে, অর্থাৎ কলকাতা থেকে যখন পূর্ব বাংলা এলেন তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ছাত্র হলেন-সেইসময়ে ভাষা আন্দোলনের শুরুর পর্বে যুক্ত হলেন এবং এর নেতৃত্ব দিলেন। ১৯৫২’র ভাষা আন্দোলনের সময় জেলখানা থেকেও তিনি সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং আমরণ অনশনেও যোগ দেন। আমরা এও লক্ষ্য করলাম, ঢাকার আরমানিটোলা ময়দানে একুশে ফেব্রুয়ারি ১৯৫৩ সালে ভাষা আন্দোলনের প্রথম বার্ষিকীতেই বঙ্গবন্ধু বলে উঠলেন, ‘ভাষার লড়াই শুধু ভাষার জন্য নয়, এ লড়াই সার্বিক মুক্তির লড়াই। রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির লড়াই।
সেই লড়াই তাঁর রাজনৈতিক জীবনেও দেখলাম আমরা। ওই সময়টায় তিনি ভূখা মিছিল করেছেন। নিরন্ন মানুষের খাদ্যের জন্য তিনি দাবি তুলেছেন। বিশেষ করে যখন স্লাইক্লোন বা কোন প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে; তখন দৌঁড়ে তিনি দূর্গতদের পাশে গিয়েছেন। তাদের রিলিফ দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চাপ সৃষ্টি করেছেন। ১৯৭০ সালের নভেম্বরের প্রলয়ংকারী ঘূর্নিঝড়ের পরপরই তিনি নির্বাচনী প্রচার স্হগিত করে উপদ্রুত এলাকায় ছুটে গেলেন দুঃখী মানুষের সেবা করার জন্য।একই ভাবে কৃষকদের স্বার্থ দেখার জন্য তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক সভায় বলিষ্ঠ বক্তৃতা করেছেন। বিশেষ করে পাকিস্তানের কনষ্টিটিউশনাল এসেম্বলিতে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘একজন গভর্নরের বেতন দেওয়া হয় ৬ হাজার রুপি আর আমার একজন কৃষক-শ্রমিক কত টাকা পান?’
তিনি আরও বলেছেন, জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ করতে হবে। প্রজাদের জমি দিতে হবে। একজন কৃষকপ্রেমী প্রকৃত জননেতা হিসেবে তিনি প্রবলভাবে সমাজের বৈষম্য দূর করার পক্ষে ছিলেন। সেই কারণেই ১৯৫৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের ঘরে গেছেন, দুঃখের কথা শুনেছেন। পরবর্তীতে যখন কৃষি ও সমবায় মন্ত্রী হলেন সেই দুঃখ দূর করবার আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। যখন টি-বোর্ডের চেয়ারম্যান হলেন, তখন চা শ্রমিকদের স্বার্থ দেখার জন্য অনেক কাজ করেছেন তিনি।
বঙ্গবন্ধু আবারও যখন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী হলেন; তখন পূর্বপাকিস্তানের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তাদের কিভাবে সাহায্য করা যায় তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে নেগোশিয়েট করলেন। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে একটি ফান্ড এনে এই উদ্যোক্তাদের দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। এছাড়া কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রী হিসেবে তিনি যেটা করেছিলেন তা হচ্ছে-তখন সবাইকে করাচি যেতে হতো আমদানি বা রপ্তানির বাণিজ্যিক লাইসেন্স নেওয়ার জন্য। সেই বানিজ্যিক দপ্তরকে তিনি পূর্বপাকিস্তানে নিয়ে আসেন।
এই ভাবেই তিনি সাধারণের পক্ষে কাজ করেছেন, দুই অর্থনীতির বিষয়টি তুলে এনেছেন। অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে কাজ করেছেন। বঙ্গবন্ধুই দুই অঞ্চলের অর্থনৈতিক সাম্যের কথা বলেছেন। অর্থনৈতিক যে বৈষম্য তা দূর করতে ছয় দফার মধ্যেই আমাদের এই অঞ্চলের বাণিজ্যে ভারসাম্য আনতে জোর দেন বঙ্গবন্ধু। পাট রপ্তানির টাকা পূর্বপাকিস্তানে রাখার জন্য এখানে একটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠার কথা তিনিই বলেছিলেন এবং পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে পশ্চিম পাকিস্তানের যে লেনদেন হয় তার মধ্যে তাতে পূর্ব পাকিস্তানের পক্ষে আনার জন্য নানা রকম উদ্যোগের কথা বলেছেন। এসব থেকেই মনে হয়, বঙ্গবন্ধু পুরোপুরি অর্থনৈতিক মুক্তির কথা বলতেন।
বলার অপেক্ষা রাখে না, অর্থনৈতিক মুক্তির পক্ষেই তাঁর ঐতিহাসিক ছয় দফাকে দাঁড় করিয়েছিলেন। যদিও ছয় দফা শেষ পর্যন্ত দাঁড়িয়ে গেল এক দফায়, বাংলাদেশের মুক্তি। সেই সময়ও তিনি নির্বাচনে জিতে ছয় দফাভিত্তিক সংবিধান করতে চেয়েছিলেন। সেখানে অধ্যাপক নূরুল ইসলাম, অধ্যাপক রেহমান সোবহান মতো অর্থনীতিবিদের যুক্ত রেখে একটা খসড়া সংবিধান করার চেষ্টা করেছিলেন। পরবর্তীতে স্বাধীন দেশে তিনি যে উন্নয়নের অভিযাত্রা শুরু করলেন, সেখানে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিলেন কৃষিকে। তিনি বলতেন, ‘আমার কৃষক বাঁচলে, দেশ বাঁচবে।’
কৃষকের জন্য খাজনা মওকুফ করে দিলেন ২৫ বিঘা পর্যন্ত, ১০ লক্ষের মতো কৃষককে তিনি সার্টিফিকেট মামলা থেকে মুক্তি দিলেন। এরপরই বঙ্গবন্ধু জোর দিলেন সবুজ বিপ্লবে। উন্নতমানের বীজ, সার-সেচযন্ত্র বিদেশ থেকে আনার ব্যবস্থা করলেন। বন্যা প্রতিরোধ প্রকল্প নিয়ে বানভাসী মানুষদের রক্ষায় পদক্ষেপ নিলেন। অন্যদিকে, শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষায় তিনি পাকিস্তানিদের ফেলে যাওয়া পরিত্যাক্ত কারখানাগুলোকে জাতীয়করণ করে পরিচালনার চেষ্টা করলেন। তার মানে এই নয় যে, তিনি ব্যক্তি খাতের বিরুদ্ধে ছিলেন। ১৯৭৫ সালে আমরা দেখব, বঙ্গবন্ধু ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগের সীমারেখা ২৫ লাখ থেকে ৩ কোটিতে উন্নীত করলেন এবং প্রাইভেট সেক্টরে পাকিস্তানিদের অনেক বাজেয়াপ্ত ইউনিট স্বাধীন বাংলাদেশের প্রাইভেট সেক্টরের হাতে তুলে দিলেন। ধীরে ধীরে তিনি হয়ত পাবলিক-প্রাইভেট সেক্টর মিলিয়েই একটি কল্যাণকর পন্থা তৈরি করার পক্ষেই ছিলেন। তাঁর প্রদত্ত সংবিধানে মানুষের খেয়ে পড়ে বাঁচার যে নিশ্চয়তার অঙ্গিকার করা হয় সেটিই প্রমাণ করে তাঁর সাম্য ও সমানাধিকারের প্রশ্নে সুদৃঢ় অবস্থান।
তবে বাস্তবতা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু মনেপ্রাণে চাইলেও রাষ্ট্রের কাঠামোগত যে সীমাবদ্ধতা, আমলাতন্ত্র; বিশেষ করে মজুদদারদের দৌরাত্ম্যে (যাদের আমরা এখন সিন্ডিকেট বলি)- তিনি পেরে উঠছিলেন না। তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলিষ্ঠকণ্ঠে বলেছিলেন, ‘আমি চূড়ান্ত আঘাত হানতে চাই ঘুণেধরা এই সমাজ ব্যবস্থাকে।’ মুনাফাখোরী-মজুদধারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি একটি অভিন্ন সিস্টেম করতে বন্ধপরিকর ছিলেন, যাতে সাধারণ মানুষরাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে। সেজন্যই তিনি দ্বিতীয় বিপ্লবের আওতায় সমবায়ের দিকে এগুচ্ছিলেন। তিনি ঘোষণা করেছিলেন, যে কৃষক উৎপাদন করবে সে একভাগ, বিতরণকারী একভাগ ও জমির মালিক পাবে একভাগ-এরকম তেভাগা সিস্টেম তিনি দাঁড় করাবার চেষ্টা করেছিলেন। মূল উদ্দেশ্য ছিল সাধারণ মানুষকে ক্ষমতায়িত করা। তাদের হাতে সার্বিক ক্ষমতা দেওয়া। একইভাবে সদ্য স্বাধীন দেশে বঙ্গবন্ধু খাদ্য নিরাপত্তায় সবচেয়ে জোর দিয়েছিলেন। তিনি বলতেন, ‘একটি স্বাধীন দেশের রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীর জন্য এটা খুবই লজ্জাকর যে বাইরের দেশ থেকে খাবার ভিক্ষা করতে হয়। এটা থেকে আমরা সরে আসতে চাই। আমাদের খাবার আমাদেরই উৎপাদন করতে হবে।’
খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দিকে বঙ্গবন্ধুর খুবই নজর ছিল। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের দিকেও তিনি সমান নজর দিয়েছেন। তিনি সব সময় সাধারণ মানুষকে উন্নয়নের অংশীজন মনে করতেন। তিনি বলতেন, ‘আমার আছে মাটি, আমার আছে মানুষ। কেন পারব না, নিশ্চয়ই পারব।’ মোদ্দাকথা স্বদেশী কায়দায় একটি উন্নয়নের দর্শন তিনি সামনে নিয়ে এসেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর এই উন্নয়ন ভাবনায় মানুষই মুখ্য, মানুষই প্রথম। সেজন্যই তিনি মাত্র সাড়ে তিন বছরে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিলেন। দেশের অর্থনীতি অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিল। মাথাপিছু আয় সাড়ে তিনগুণ বেড়ে গিয়েছিল। অর্থনীতির আকার বেড়েছিল আড়াই গুণ।
১০ জানুয়ারি ১৯৭২-পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত দেশের মাটিতে পা দিয়ে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আবেগতাড়িত বঙ্গবন্ধু উচ্চারণ করেছিলেন সাধারণ মানুষের জন্য তাঁর হৃদয়ের গভীর ভালোবাসার কথা। বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মানুষ পেট ভরে ভাত না পায়, এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মা-বোনেরা কাপড় না পায়, এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি এদেশের যুবক যারা আছে তারা চাকরি না পায়।‘-এই ছিল বঙ্গবন্ধুর সাম্যের বাংলাদেশের মর্মবাণী।
বঙ্গবন্ধু প্রাদেশিক একটি সরকারকে কেন্দ্রীয় সরকারে শুধু সার্থকভাবে রূপান্তরই শুধু করেননি, ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে শক্তিশালীও করেছিলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে অনেক ক্ষমতা দিয়েছিলেন। সবাইকে নিয়ে বাংলাদেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, যেখানে মানুষের মুক্তি আসবে। এই মুক্তি দারিদ্র্য থেকে মুক্তি। দ্ব্যর্থহীন ভাবেই বলা যাবে, বঙ্গবন্ধুর সেই প্রচেষ্টা যথেষ্ট ভালো ভাবেই এগুচ্ছিল। ৮০ শতাংশ দারিদ্র্য হার নিয়ে তিনি শুরু করেছিলেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে মর্মান্তিকভাবে হত্যার কারণে সেই অগ্রগগি অনেকটা পিছিয়ে গেল।
বর্তমানে বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এই সময়ে এসে বলা যায়, দারিদ্র্য নিরসনে বাংলাদেশের অসাধারণ সাফল্য এসেছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, ১৯৯১-৯২ এ যখন আমাদের দারিদ্র্যের হার ছিল প্রায় ৫৭ শতাংশ, ২০১০ সালে এসে তা ৩১.৫ শতাংশ হয়ে গেছে। ২০১৬ সালে ২৪.৩ শতাংশ, ২০২২ সালে ১৮.৬ শতাংশ হয়েছে। এক্সট্রিম প্রোবার্টি ১৯৯১-৯২ সালে ৪১ শতাংশ ছিল, সেটা ২০২২ সালে ৫.৬ শতাংশে নেমে এলো, এর মানে আমরা অর্থনৈতিক মুক্তির কথা আলাপ করছি, আবার কাজও করছি।
কিন্তু যেটি সমস্যা হয়ে গেছে, বঙ্গবন্ধু যেটি খুবই অপছন্দ করতেন-সেটি হলো বৈষম্য। অর্থনৈতিক বৈষম্য অনেক বেড়ে গেছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, বৈষম্যের যে সূচক ‘জিনি’ এখন পয়েন্ট ৫-এ পৌছে গেছে। তার মানে একেবারে ডেঞ্জার জোনে পৌছে গেছি আমরা। অথচ এটা ১৯৯১ সালেও ছিল পয়েন্ট ৩৯। এখন লক্ষ্য করছি, সার্বিক বৈষম্য অনেক বেড়ে গেছে। উপরের দিকে ১০ শতাংশ মানুষ তাদের হাতে ১৯৯১-৯২ সালেও ২৯ শতাংশ আয় বা সম্পদ ছিল। সেটা এখন বেড়ে ৪১ শতাংশ হয়ে গেছে। আবার গরীব যাঁরা নীচের দিকে ১০ শতাংশ, তাদের হাতে যে আয় ছিল প্রায় আড়াই শতাংশ তা কমে ১.৩ শতাংশে নেমে গেছে।
মানে দাঁড়াচ্ছে, নীচের দিকের মানুষের আয় রোজগার উপরের দিকে চলে যাচ্ছে। এটা বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক মুক্তির যে স্বপ্ন ছিল তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই জন্য এ জায়গাতে আমাদের পুরো কর ব্যবস্থাকে আরও অনেক প্রত্যক্ষধর্মী করতে হবে। অনেক বেশি সম্পদ করও ধনীদের দিতে হবে। গরীবদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি আরও বাড়াতে হবে। বাড়াতে হবে তাদের জন্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে বিনিয়োগ। এই জায়গাগুলোতে কাজ করার অনেক বাকি আছে। সত্যি সত্যি যদি আমরা বঙ্গবন্ধুর সাম্যের বাংলাদেশ, তাঁর বহুল উচ্চারিত ‘সোনার বাংলা’ গড়তে চাই তাহলে অর্থনৈতিক বৈষম্য কমাতেই হবে। এই সংগ্রামে সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তিখাত ও সমাজের সকল অংশিজনকে এগিয়ে আসতে হবে। তবেই সার্থক হবে স্বাধীনতা বা বিজয় দিবস উদযাপন।
লেখক: ইমেরিটাস অধ্যাপক, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাবেক গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক