এই দুটি খবরের শুধু শিরোনাম বিবেচনায় নিলে বিভ্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আছে। কারণ, প্রথমোক্ত খবরের শিরোনাম, ‘সুখী দেশের তালিকায় সাত ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ’। পরেরটি ‘বিশ্বে সপ্তম দুঃখী দেশ বাংলাদেশ’। অর্থাৎ দুটি শিরোনামের তথ্য পরস্পরবিরোধী। একটিতে মনে হয় দেশ সুখের দিক থেকে এগিয়েছে, আরেকটিতে মনে হয় পিছিয়েছে। কিন্তু বিস্তারিত তথ্য থেকে জানা যায়, এই দুই সংস্থার জরিপের সুখের পরিমাপক দুই ধরনের।
জাতিসংঘ সুখী দেশের তালিকা করার ক্ষেত্রে মানুষের সুখের নিজস্ব মূল্যায়নকে পরিমাপক হিসেবে ধরেছে। প্রতিটি দেশের মানুষের ব্যক্তিগত সুস্থতার অনুভূতি, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, জিডিপি ও দুর্নীতির মাত্রাও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছিল। আর গ্যালাপের জরিপে ব্যক্তির শারীরিক ব্যথা–বেদনা, উদ্বেগ, দুঃখ, মানসিক চাপ এবং ক্ষোভের বিষয়কে আমলে নেওয়া হয়েছে।
সুখী বা দুঃখীর তালিকাকে কেউ সন্দেহের চোখে দেখতে পারেন, কারণ সুখের অব্যয় সংজ্ঞা নিরূপণ অসম্ভব। বিষাদ এবং অ-সুখ সব সময় সমার্থক নয়। কেউ হয়তো প্রবল উচ্চাকাঙ্ক্ষী, সে যা পেয়েছে তা হয়তো অনেক, কিন্তু সে আরও চায়। এই মানুষটি বিষণ্ন নয়; কিন্তু সে অতৃপ্ত; অতএব অসুখী। তার সেই অ–সুখ তাকে সতত পরবর্তী প্রতিষ্ঠার প্রতি ধাবিত করে, তাকে উদ্দীপ্ত করে। সে হয়তো সুখ চায় না, জয় চায়। সেই অর্থে এই অতৃপ্তি বা অ–সুখকে প্রগতির জন্য ইতিবাচক বিবেচনা করা যেতে পারে।