সাতক্ষীরায় সাবেক এসপিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সাতক্ষীরায় সাবেক এসপিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নিউজ ডেস্ক :: সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী আজাহারুল ইসলামকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে পুলিশি হেফাজতে নির্যাতন, ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে পাঁচ ভরি সোনার গয়না ও ৩২ লাখ টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগে জেলার সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী মনিরুজ্জামানসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।

রোববার (১ সেপ্টেম্বর) ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ও মামা ভাগনে এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আজাহারুল ইসলাম সাতক্ষীরার আমলি আদালতে মামলাটি করেন। আদালতের বিচারক নয়ন বিশ্বাস মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবলুর রহমান খান, সাতক্ষীরা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও জেলা যুবদলের নেতা নাসিম ফারুক খান।

আদালতে মামলার আরজি থেকে জানা যায়, নাসিম ফারুক খানের সঙ্গে তৎকালীন এসপি কাজী মনিরুজ্জামান ও গোয়েন্দা পুলিশের ওসি বাবলুর রহমান খানের সুসম্পর্ক ছিল। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়ীদের পুলিশের ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায় করতেন নাসিম ফারুক খান। চাঁদার একটি অংশ কাজী মনিরুজ্জামানকে দিতেন। ভোমরা স্থলবন্দরের মামা ভাগনে এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী ও আমদানি ও রপ্তানিকারক আজাহারুল ইসলামের সঙ্গে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের কোটি কোটি টাকার ব্যবসার বিষয়টি জানতে পারেন নাসিম ফারুক খান। ২০২৩ সালের ২৪ মার্চ দুপুরে তাঁর (নাসিমের) চেম্বার অব কমার্সের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে ১০ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন তিনি। জমি ও বাড়ির সবকিছু বেচেও এই টাকা হবে না বলে জানান আজাহারুল ইসলাম। এতে নাসিম ফারুক খান ক্ষুব্ধ হয়ে গোয়েন্দা পুলিশকে দিয়ে তাঁকে ক্রসফায়ারে হত্যার হুমকি দেন।

মামলার আরজি থেকে আরও জানা যায়, একই বছরের ২৭ মার্চ রাত ১০টার দিকে বাবলুর রহমান খানের নেতৃত্বে পুলিশ আজাহারুল ইসলামকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। দুই দিন গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে রেখে তাঁকে নির্যাতন করা হয়। ২৯ মার্চ রাতে কাজী মনিরুজ্জামান, বাবলুর রহমান খান ও নাসিম ফারুক খান তাঁর চোখ বেঁধে ভোমরা কার্যালয়ে নিয়ে তালা ভেঙে সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের চেকের দুটি বইয়ের ১৩০টি পাতা ছিঁড়ে নেন তাঁরা। চোখ বাঁধা অবস্থায় গাড়িতে তুলে মারতে মারতে তাঁর (আজাহারুলের) বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। বাড়ি থেকে ৩২ লাখ টাকা চাঁদা ও পাঁচ ভরি সোনার গয়না নেন তাঁরা। একপর্যায়ে সেখান থেকে গোয়েন্দা পুলিশ হেফাজতে নিয়ে ২৯ মার্চ দিবাগত রাত দুইটার দিকে ১৬টি চেকের পাতায় স্বাক্ষর করিয়ে নেন। বাকি টাকা না দিলে অন্য লোককে দিয়ে চেক প্রত্যাখ্যানের (ডিজঅর্ডার) মামলার হুমকি দিয়ে ৩০ মার্চ সকালে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

বাদীর আইনজীবী শাহানা ইমরোজ বলেন, ব্যবসায়ী আজাহারুল ইসলামের মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

Explore More Districts