চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কেরানীহাট এলাকায় মহাসড়কের দু’পাশে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার পর রাত পোহাতেই আবারও দখল হয়ে যায় সেই সরকারি জায়গাগুলো। এতে স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম ক্ষোভ ও হতাশা।
গত শনিবার (১৪ জুন) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসন, হাইওয়ে পুলিশ, থানা পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর যৌথ উদ্যোগে কেরানীহাট এলাকায় বড় ধরনের উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠা শতাধিক অবৈধ দোকান-পাট, ফুটপাত দখলদার এবং এলোমেলোভাবে পার্কিং করা যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। চালক ও মালিকদেরকে সতর্ক করে দেওয়া হয় ভবিষ্যতে সড়ক দখল না করার জন্য।
তবে স্থানীয়রা জানান, প্রশাসনের অভিযান শেষ হতে না হতেই রাতেই আবার পুরনো রূপে ফিরে আসে দখলদাররা। একই জায়গায় আবার বসানো হয় অবৈধ দোকানপাট, ফুটপাত ও রাস্তার পাশ দখল করে চলে বেচাকেনা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের অভিযোগ, কেরানীহাটের মহাসড়কের দু’পাশে ৪০ থেকে ৭০ ফুট পর্যন্ত সরকারি খাস জমি রয়েছে, যা দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় বিভিন্ন ব্যক্তি ও সিন্ডিকেট দখলে রেখেছে। রাজনৈতিক প্রভাব ও দলীয় নাম ব্যবহার করে এইসব জায়গা ভাড়া দিয়ে নিয়মিত আয় করছে কিছু ব্যক্তি, অথচ সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব।
তারা বলেন, এর আগেও ২০২৪ সালের ৬ মার্চ কেরানীহাট এলাকায় একইভাবে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছিল। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই আবার দখল হয়ে যায় রাস্তার পাশের জায়গাগুলো। ফলে প্রশাসনের অভিযান কার্যকর হলেও তা টেকসই হচ্ছে না।
এ বিষয়ে সাতকানিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারিস্তা করিম সিটিজিনিউজকে বলেন, “আমরা জানতে পেরেছি, অভিযান শেষে কিছু অবৈধ দোকান আবার বসেছে। দুই এক দিনের মধ্যেই আবারও উচ্ছেদ করা হবে।”
দোহাজারী হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুব আলম সিটিজিনিউজকে বলেন, “আমরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত। ইউএনও মহোদয় ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। মাইকিং করে জনগণকে সচেতন করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে এবং খুব দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয় জনসাধারণ ও ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন, শুধু উচ্ছেদ নয়—দখলমুক্ত জায়গাগুলো পুনরায় দখল যেন না হয়, সেজন্য স্থায়ী নজরদারি ও কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তারা কেরানীহাটকে যানজটমুক্ত, দখলমুক্ত ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশে রূপান্তরের দাবি জানিয়েছেন।
এমজে/সিটিজিনিউজ