সাংবাদিক মেহেদীর পরিবারে শোকের মাতম

সাংবাদিক মেহেদীর পরিবারে শোকের মাতম

২৪ July ২০২৪ Wednesday ৯:২৮:১৮ PM

Print this E-mail this


বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:

সাংবাদিক মেহেদীর পরিবারে শোকের মাতম
নানীর কোলে মেহেদি হাসানের রড় মেয়ে নিশা দাদীর কোলে ছোট মেয়ে আনিশা। ও দাদা মোশারেফ হোসেন

কোটা বিরোধী আন্দোলনের সময় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে গত ১৮ জুলাই বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার দিকে যাত্রাবাড়ি ফ্লাইওভার এলাকায় পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারায় সিনিয়র রিপোর্টার মেহেদি হাসান (৩২)।

মেহেদি হাসানের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ধুলিয়া ইউয়িনের ১নং ওয়ার্ডের হোসনাবাদ গ্রামে। তার বাবার নাম মোশারেফ হোসেন (৫৫)। মোশারেফ হোসেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের ওয়ার্ড সভাপতি। সাংবাদিক মেহেদির স্ত্রী ফারজানা আক্তার পপিসহ নিশা আক্তার নামে তিন বছরের ও আনিশা নামে ৭ মাসের দুই মেয়ে রয়েছে।
মেহেদি ঢাকায় স্ত্রী সন্তান নিয়ে ঢাকায় স্থায়ী ভাবে বসবাস করতেন।

বৃহস্পতিবার ছেলে মেহেদি হাসানের মৃত্যু সংবাদ শুনে মা মাহমুদা বেগম (৪৫) বারবার মুর্ছা যাচ্ছিলেন। পরিবার জুরে চলছে শোকের মাতম। শুক্রবার গভীর রাতে মেহেদির লাশ বাউফলের নিজ বাড়িতে পৌছালে এলাকায় নেমে আমে আসে শোকের ছাঁয়া। স্ত্রী ফারজানা ইসলাম পপি আক্তারও (২৫) স্বামী মেহেদি হাসানের মৃত্যুর পর
নির্বাক হয়ে গেছেন।

মেহেদি হাসানের লাশ শনিবার সকাল ৮টায় জানাযা শেষে তার নিজ বাড়ির সামনে দাফন করা হয়। জানাযায় স্থানীয় গণ্যমান্যসহ বাউফল প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি হারুন অর রশিদ, সাবেক সাধারন সম্পাদক কৃষ্ণ কর্মকার, এবিএম মিজানুর রহমান ও অহিদুজ্জামান ডিউকসহ উপজেলা ও জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

জানাযা শেষে মেহেদির মা মাহমুদা বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমার খোকার বুকটা পুলিশের গুলিতে ঝাঝরা হয়ে গেলো। কি অপরাধ ছিল ওর। কেন ওকে হত্যা করা হলো। সাংবাদিকতাই কি ওর অপরাধ ছিল। তার অবুজ দুটি শিশু সন্তান। কি হবে ওদের ভবিষ্যৎ। ওরা যে বাবা হারা হলো সে বুঝই এখন পর্যন্ত ওদের হয়নি।
আমি এ হত্যার বিচার চাই।

মেহেদির বাবার মোশারেফ হোসেন বলেন, আমার ছেলের মৃত্যু রহস্যময়। তার ধারনা কোন ষরযন্ত্রের স্বিকার হয়ে আমার ছেলে খুন হয়েছে। সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে আমার ছেলে হত্যাকারীর বিচার চাই।

স্ত্রী ফারজানা আক্তার বলেন, ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার সব শেষ বিকাল ৫টায় আমার সঙ্গে তার শেষ কথা হয়। তিনি শুধু বলছিলেন, পরিস্থিতি ভালো না। আমার জন্য দোয়া কইরো। আমার জীবনের সকল স্বপ্ন শেষ হয়ে গেলো। কি হবে আমার অবুজ শিশু দুটির।

এ দিকে একই দিনে উপজেলায় আরো তিন জনের লাশ দাফন করা হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহŸবায়ক সূর্যমনি ইউনিয়নের ইন্দ্রকুল গ্রামের নবীন তালুকদার, নবীন তালুকদার ঢাকার পল্টন এলাকায় গুলিতে নিহত হয়।

মদনপুর গ্রামে দাফন করা হয় মো. জাহাঙ্গির হোসেন নামে এক শ্রমিককে। তিনি ঢাকার রায়েরবাগ এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন। তিনি পেশায় ভ্যান চালক ছিলেন। ধুলিয়া ইউনিয়নের ভরিপাশা গ্রামে মো. আমিন (১৬) নামে এক কিশোরের লাশ দাফন করা হয়েছে। আমিন রায়েরবাগ এলাকায় একটি কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। ঘটনার দিন মোবাইল ফ্লেক্সিলোড করতে বের হলে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়।

সম্পাদনা: আমাদের বরিশাল ডেস্ক



শেয়ার করতে ক্লিক করুন:

Explore More Districts