
সফল জননী ক্যাটাগরিতে ফরিদপুরের শ্রেষ্ঠ জয়িতা নির্বাচিত হয়েছেন সদরপুর উপজেলাধীন বাবুর চর গ্রামের সুফিয়া বেগম। আগামী ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া দিবসে তার হতে সম্মাননা স্মারক ও সনদ তুলে দেওয়া হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সুফিয়া বেগম ১৯৬০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। পড়াশোনার প্রতি প্রচন্ড আগ্রহ থাকলেও দুর্গম চরাঞ্চলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাব ও পারিবারিক অভাব অনটনের কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরে আর পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি। পরিবারের ইচ্ছায় অল্প বয়সেই বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয় তাকে। সংসার জীবনে সে ৪ ছেলে ও ৩ মেয়ের জননী। নিজে পড়াশোনা করতে না পারলেও ছেলে মেয়েদের নিয়ে তার অনেক স্বপ্ন ছিল। স্বামী আ: হাকিম শিকদার পেশায় একজন সরকারি কর্মচারী। অল্প আয়ের সংসারে ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়াটা সহজ ছিল না। কিন্তু অদম্য ইচ্ছা শক্তি এবং আন্তরিক প্রচেষ্টা ছিল তার। তাই সংসার ও সন্তানদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে স্বামীর আয়ের পাশাপশি সে বাড়ির আঙিনা, পতিত জায়গায় শাক সবজি আবাদ, হাস-মুরগি, গরু-ছাগল পালন করে অর্থ উপার্জনের উদ্যোগ নেন। অভাবের মধ্যেও তিনি সব সময় ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা চালিয়ে নিতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন। নিজের শখ আহ্লাদ বিসর্জন দিয়ে সন্তানদের শিক্ষিত ও প্রতিষ্ঠিত করে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন।
সুফিয়া বেগমের সেই প্রচেষ্টা সফল হয়েছে। তার ছেলে মেয়েরা এখন ব্যাংক, ব্যবসা, সরকারি ও বেসরকারি চাকরিতে সুনামের সাথে কাজ করছেন। সন্তানদের নিজ নিজ কাজের পাশাপাশি দেশ ও সমাজের জন্য কাজ করার অনুপ্রেরণা দিচ্ছেন। তিনি নিজেও স্থানীয় সামাজিক সংগঠন “আলোকধারার” পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আছেন।
জীবন সংগ্রামের একজন সফল নারী এবং রত্নগর্ভা মা হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে সুফিয়া বেগমকে শ্রেষ্ট জয়িতা স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আগামী ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া দিবসে তার হতে সম্মাননা স্মারক ও সনদ তুলে দেওয়া হবে।