কলকাতা: নতুন বছরের শুরুতেই নতুন ফিচার নিয়ে আত্মপ্রকাশ করে জনপ্রিয় ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম WhatsApp। কিন্তু এই অ্যাপ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় চলতি বছরের শুরু থেকেই। WhatsApp তার নতুন গোপনীয়তা নীতি (Privacy Policy) আপডেট করার বিপাকে পড়তে হয় সমস্ত ব্যবহারকারীদের। কিন্তু হাজার বিতর্কের মাঝেও নিজের গোপনীয়তা নীতি নিয়ে কোনও রকম কথা শুনতে নারাজ WhatsApp। কোম্পানির তরফে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয় তাঁদের নতুন নীতি গ্রাহকরা মানতে বাধ্য থাকবে। আর যদি কোনও ব্যবহারকারী তা না মানেন তবে বহু ফিচার থেকে তাদের বঞ্চিত রাখা হবে।
নতুন এই গোপনীয়তা নীতি এবং ব্যবহারের শর্তাদিকে, WhatsApp-এর তরফে কেবলমাত্র আপডেট বলেই উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু Facebook-মালিকানাধীন এই অ্যাপ কী ভাবে আপনার ডেটা পরিচালনা করার পাশাপাশি তা Instagram এবং Facebook Messenger-সহ একাধিক অ্যাপ্লগুলিতে একীকরণের অনুমতি দেয়? WhatsApp-এর এই গোপনীয়তা নীতি প্রসঙ্গে ভারতে সমালোচনার মুখে পড়তে হয় এই কোম্পানিকে।
WhatsApp-এর এই নতুন গোপনীয়তা নীতি প্রত্যাহার করার জন্য ফের ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের তরফে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে জবাব চাওয়া হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। যদি এই কোম্পানির তরফে কোনও জবাব না মেলে তবে, আইনি পথে হাঁটবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছে কেন্দ্র। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের অভিযোগ, “এটি দায়িত্বজ্ঞানহীন, WhatsApp-এর তরফে ভারতীয় ব্যবহারকারীদের উপর থেকে এই অন্যায় শর্ত আরোপের অবস্থানটি বদল করা উচিত।’
১৫ মে WhatsApp-এর নতুন গোপনীয়তা নীতিকে কর্যকর করার পর সে বিষয়ে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ভারতের করা আবেদন প্রসঙ্গে জবাব চেয়ে দিল্লি হাইকোর্ট ভারত সরকারের কাছে জবাব চেয়েছে। ভারতের তরফে অভিযোগ করা হয়, এই নতুন গোপনীয়তা নীতি ভারতের সংবিধানের আওতায় ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন করেছে। প্রধান বিচারপতি ডিএন প্যাটেল এবং বিচারপতি জ্যোতি সিংয়ের একটি বেঞ্চ কেন্দ্রীয় সরকার, WhatsApp এবং মূল সংস্থা Facebook-কে প্রতিক্রিয়া জানাতে নোটিস জারি করে।
সম্প্রতি গোপনীয়তা নীতি আপডেট গ্রহণ করার জন্য ব্যবহারকারীদের ১৫ মে-র তারিখের সময়সীমা বাতিল করে WhatsApp। গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই সংস্থার তরফে বলা হয়, যদি কেউ এই গোপনীয়তা নীতি গ্রহণ না করে তবে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তাদের অ্যাপের অনেক কার্যকারিতা বন্ধ করে দেওয়া হবে। তাদের সেক্ষেত্রে তখন সীমিত কার্যকারিতার মধ্যে রাখা হবে। WhatsApp-এর এই সীমাবদ্ধতার তালিকায় রয়েছে চ্যাট (chat), নোটিফিকেশন (notifications) এবং কলের (calls) মতো সুবিধাগুলিকে। সুতরাং কোম্পানির নতুন আপডেট গ্রহণ না করলে এই সুবিধাগুলি থেকে বঞ্চিত করা হবে ব্যবহারকারীদের। বহারকারীরা ‘Agree’ অপশনে ক্লিক করে এই নতুন নীতি গ্রহণ করতে পারবেন।
প্রথমে ৮ ফেব্রুয়ারি WhatsApp-এর গোপনীয়তা নীতি বাস্তবায়নের প্রথম তারিখ থাকলেও পরে নানা বিতর্কের সম্মুখীন হওয়ায় তা পরিবর্তন করে ১৫ মে করা হয়। এখন সেই তারিখও পিছিয়ে দিয়েছে WhatsApp। তবে ভারত যে কোনও ভাবেই এই নীতি মানতে নারাজ তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না!