সখীপুরে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ। স্থানীয় প্রশাসনকে সাত দিনের আল্টিমেটাম দিলেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। – News Tangail

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ নারী নির্যাতনকারী ইউপি চেয়ারম্যানের বিচার চেয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে সাত দিনের সময় বেঁধে দিলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।

তিনি আজ বুধবার বেলা ১১ টার দিকে টাঙ্গাইলের সখীপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি দেওয়ার পর তার বক্তব্যে এ সময় বেঁধে দেন।

উল্লেখ্য, গত শনিবার বিকেলে উপজেলার বহুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সরকার নূরে আলম মুক্তা একজন নারীকে মারধর করেন। ওই মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই রাতেই নির্যাতিত ওই নারী বাদী হয়ে সখীপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। ওই নারী গত পাঁচ দিন ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন।

নারী নির্যাতনের অভিযুক্ত ওই চেয়ারম্যানের বিচার দাবিতে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী আজ বেলা ১১ টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি দেন। এরপর বেলা ১২টার দিকে ওই নারীর চিকিৎসার খোঁজখবর নিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান।

এ সময় বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমি অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে এখানে এসেছি। আমি মূলত এসেছি যাতে এদেশের নারী সমাজ সম্মানে থাকে। একজন ইউপি চেয়ারম্যান হলেই যাতে নিজেকে সে জাতিসংঘের মহাসচিব না ভাবে। সে যেন না ভাবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জুবার্ডেন।

স্থানীয় প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, আজ পাঁচ দিন হয়ে গেল ওই নারী নির্যাতনকারী চেয়ারম্যান বীরদর্পে ঘুরে বেড়াবে অথচ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোন কাজ করবে না, তা হবে না।

তিনি আরও বলেন, সখীপুরে একজন নারী অপমানিত হয়েছেন মানে বাংলাদেশ অপমানিত হয়েছে। দেশ ভালো চলছে না। কারো যেন কোন দায়িত্ববোধ নেই। যারা রাষ্ট্র চালায় তাদের অধিকাংশকে ঝেটিয়ে বিদায় করা উচিত। কি আর বলব বঙ্গবন্ধু মরে গেছে, মাওলানা ভাসানী নাই। কাকে কি বলবো।

তিনি স্থানীয় প্রশাসনকে সাত দিনের সময় বেঁধে দিয়ে বলেন, এর সুষ্ঠু বিচার না হলে আমি রাস্তায় বসে পড়বো। একা হলেও বসে থাকবো।

স্থানীয় সংসদ সদস্য অনুপম শাহজাহান জয়কে উদ্দেশ্য করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, নির্বাচিত হওয়ার পরের দিন থেকে তুমি এখন সকলের। এই অঞ্চলের সকলের জান, মাল ও নারীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব তোমার। অথচ একজন নারী নির্যাতিত হওয়ার পাঁচ দিন অতিবাহিত হলেও ওই ইউপি চেয়ারম্যান দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী চুপ করে আছে।

এ সময় বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে তার সহোদর ছোট ভাই আজাদ সিদ্দিকী, উপজেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আব্দুস সবুর খান,  সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র সানোয়ার হোসেনসহ শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

এ প্রসঙ্গে সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ শাহিনুর রহমান  বলেন, গত শনিবার রাতে দেওয়া লিখিত অভিযোগটি গতকাল মঙ্গলবার রাতে সখীপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হিসেবে নথিভুক্ত হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ চলমান রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ হোসেন পাটোয়ারী বলেন, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর দেওয়া স্মারকলিপি হাতে পেয়েছি। এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।