এ উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আয়োজিত কর্মসূচিতে ছিল র্যালি, হুইল চেয়ার বিতরণ এবং আলোচনা সভা।সকালে জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞার নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য একটি র্যালি শুরু হয়। র্যালিটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রদক্ষিণ করে পূর্বের স্থানে এসেই শেষ হয়। র্যালিতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকবৃন্দ, সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক, বিভিন্ন এনজিও, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অটিজম পরিবারসহ শতাধিক মানুষ অংশ নেন। পরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রাঙ্গণে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জেলা প্রশাসক ১০ জন অটিজম ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ করেন। এ সময় তিনি সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। সবার পরিবারের খোঁজখবর নেন। জেলা প্রশাসক কাছে গিয়ে সবার সঙ্গে আন্তরিকভাবে কথা বলায় সবার মাঝে চোখেমুখে আনন্দ ফুটে উঠে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ৬৬ বছর বয়সী শারীরিক প্রতিবন্ধী ইসমাইল হোসেন বলেন, জেলা প্রশাসক শুধু প্রশাসনিক ব্যক্তি নন, তিনি এক মানবিক হৃদয়ের মানুষ। তিনি চেয়ার ছেড়ে আমাদের কাছে এসে ভালো মন্দ জানতে চেয়েছেন। আমার সংসার কীভাবে চলছে তিনি জানতে চেয়েছেন। এতোদিনের এটা কেউ জানতে চায়নি। আজ একজন নিজে জানতে চাইলেন। আমি তাতেই খুশি।
৪৮ বছর বয়সী আরেকজন শারীরিক প্রতিবন্ধী শাহজাহান বলেন, এই হুইলটা চেয়ার আমার চলার পথ বাড়িয়ে দিলো। আমি এখন অনেক জায়গায় যেতে পারবো।
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরা আমাদের বোঝা নয়। তাদের মাঝে লুকিয়ে থাকতে পারে অসাধারণ প্রতিভা। আমাদের উচিত তাদের পাশে দাঁড়ানো ও বিকাশে সহায়তা করা।
তিনি বলেন, আমাদের চারপাশের সবার উচিত তাদের সঙ্গে সহানুভূতিশীল আচরণ করা। কোনোভাবেই তারা যেন কষ্ট না পায় সেদিকে খেয়াল রাখা।
পরে আয়োজিত আলোচনা সভায় বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণকারীদের মতে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের এই ব্যতিক্রমী আয়োজন ছিল সহানুভূতি, মানবতা ও অন্তর্ভুক্তির জীবন্ত দৃষ্টান্ত। এ ধরনের উদ্যোগ সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে এবং অটিজম বিষয়ে সচেতনতা আরও জোরদার হবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।