শ্রীমঙ্গলে ছড়া পেরিয়ে স্কুলে যায় ওরা, চরম দুর্ভোগ

শ্রীমঙ্গলে ছড়া পেরিয়ে স্কুলে যায় ওরা, চরম দুর্ভোগ

শ্রীমঙ্গলে ছড়া পেরিয়ে স্কুলে যায় ওরা, চরম দুর্ভোগ
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ডুলুছড়া এলাকার বালিশিরা পাহাড় ব্লকের শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যেতে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। কখনও জঙ্গল মাড়িয়ে, কখনও আবার পাহাড়ি ছড়ার পানিপথ ভেঙে চলাচল করতে হচ্ছে তাদের। ভারী বর্ষণের সময় ছড়ায় ঢল এলে বন্ধ থাকে বিদ্যালয়ে যাওয়া। একই অবস্থা সেখানকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের।

ওই এলাকাটি পড়েছে শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নে। নিত্য এই দুর্ভোগ সহ্য করেই চলতে হচ্ছে শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসীকে। ভুগতে হয় জুম ও ফলচাষিদেরও। সম্প্রতি তাদের সঙ্গে যোগ হয়েছে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর ১১৩টি বাড়ির বাসিন্দা।

সেখানে বৃহস্পতিবার দেখা যায়, বৃষ্টির মধ্যে একদল শিশু ওই রাস্তা দিয়ে বিদ্যালয়ে যাচ্ছে। আশ্রয়ণের পাশের রাস্তায় তিনটি ভাঙন। একটিতে ফেলা গাছের টুকরা দিয়ে পারাপার করছে লোকজন। সেখানে দাঁড়িয়ে কয়েকজন খুদে শিক্ষার্থী। ভয়ে তারা রাস্তা পার হতে চাচ্ছে না।

গ্রামের বাসিন্দা মাসুদ রানা জানান, গোটা সড়ক বেহাল। এখানে কিছুই নেই। সামনের অবস্থা আরও ভয়াবহ। পরবর্তী ভাঙনটি পার হওয়ার জন্যও এমন বিকল্প ব্যবস্থা করেছেন স্থানীয়রা। সেখানে ছড়ার পানি মাড়িয়ে প্রায় দেড়শ গজ পথ অতিক্রম করে ডাঙায় উঠতে হয়। সেখান থেকে পার হতে হয় ডুলুছড়া ত্রিপুরাপল্লির শ্মশান ও দু’পাশের ঘন জঙ্গল। এই রাস্তা দিয়েই ছোট ছোট শিশু ডুলুছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত যায়।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অর্জুন দত্ত জানান, এই বিদ্যালয়ের বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই পাহাড়ি জনবসতির। বর্তমানে বিদ্যালয়ের তিন দিকের রাস্তা ভালো। শুধু ডুলুছড়ার যে অংশে মুসলিম বসতি রয়েছে (পাহাড় ব্লক), সে পাশে রাস্তা না থাকায় শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আসতে খুবই কষ্ট হয়।

বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাহিন মিয়া জানায়, প্রতিদিনই তাদের এ রাস্তা দিয়ে যেতে হয়। প্রায় সময় পড়ে গিয়ে কাপড় ও বইপত্র ভিজে যায়। একই কথা জানায় তৃতীয় শ্রেণির ইয়াছিন।

লেবু বাগানের মালিক শ্যামল দাশ জানান, রাস্তা ভাঙা থাকায় তাঁর বাগানের লেবু ও আনারস শহরে পাঠাতে অনেক কষ্ট সইতে হয়। রাস্তা ভালো না হওয়ায় পণ্য পরিবহন খরচও বেশি।

এদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর পাওয়া রুনা বেগম জানান, তাঁর স্বামী রিকশা চালান। এখানে রাস্তা যদি ভালো না হয়, তাহলে তারা কীভাবে জীবিকা নির্বাহ করবেন। তা ছাড়া স্বাভাবিক চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে স্থানীয়দের। একই কথা জানান সালমা বেগম নামে আরেক সুবিধাভোগী।

এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সন্দ্বীপ তালুকদার জানান, এখানে আশ্রয়ণের ১১৩টি ঘর দেওয়া হয়েছে। বর্ষায় এ রাস্তাটির কয়েক জায়গায় ভেঙেছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দ্রুত এ রাস্তাটি করে দেওয়া হবে। এরই মধ্যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এখানে কালভার্টসহ আরসিসি ঢালাই দিয়ে রাস্তা হবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

ডিএস/এসএ

Explore More Districts