মহসিন মোল্যা, বিশেষ প্রতিবেদক-
ষড়যন্ত্রের শিকারে ১১ বছরের বকেয়া বেতন-ভাতাদি না পেয়ে শ্রীপুর উপজেলার কাজলী ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষকের মানবেতর জীবন যাপন।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত মাদ্রাসার জুনিয়র শিক্ষক মুন্সী মোঃ নাসিরুল ইসলাম এ প্রতিষ্ঠানে ২০০০ খ্রিঃ নিয়োগ পেয়ে ২০০২ খ্রিঃ এমপিও ভূক্ত হন। তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি দৈনিক নয়া দিগন্ত ও লোক সমাজ পত্রিকায় শ্রীপুর উপজেলা সংবাদদাতা হিসেবে কর্মরত। ২০১২ খ্রিঃ শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোপালগঞ্জের মিনা মাসুদউজ্জামান যার আইডি নং ৬৮৭৫ এর বিরদ্ধে তদানিন্তন সময়ে অর্থ আত্মসাতসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির সংবাদ নয়া দিগন্ত পত্রিকাসহ দেশের প্রায় ২০ থেকে ২২টি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এরই জের ধরে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আ’লীগ নেতা হারুন-অর-রশিদ এর সাথে আতাত করে ইউএনও ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে মাদ্রাসা অধিদপ্তর ০১/জি/১৭১/বিশেষ/০৮/১৪৫৭ স্মারকে ১৯/১২/২০১২ খ্রিঃ তারিখের পত্রে শিক্ষকের এমপিও বাতিল করেন। শিক্ষ উপয়ন্তর না পেয়ে উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে মহামান্য হাইকোর্টে একটি রিট দাখিল করেন যার নং ২৫৪৫/১২।
পিটিশনটি শুনানীর পর হাইকোর্ট বিভাগ উক্ত আদেশটি ৪ মাসের জন্য স্থগিত করেন এবং উক্ত ইউএনও ও আ’লীগ নেতাসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের বিরুদ্ধে সন্তোষজনক জবাব প্রদানের জন্য রুল জারী করেন। কিন্তু কোন
বিবাদী জবাব না দেওয়ায় মহামান্য হাইকোর্ট ডিভিশন রুলের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ঐ বেতন বাতিলের চিঠির কার্যকারিতা স্থায়ীভাবে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন। অতপর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব বাদী হয়ে মহামান্য হাইকোর্টের উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগে একটি লিভ টু আপিল দায়ের করেন যার নম্বর ১২৯৬/১৩।
আপিল বিভাগ আপিলটি শুনানীর পর ১৩/১১/১৩ খ্রিঃ তারিখে সচিবের দায়েরকৃত আপিলটি খারিজ করে দেন। দীর্ঘ দিন মামলাটি পরিচালিত হয়ে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক ২৮/০১/২০২০ খ্রিঃ তারিখে উক্ত মামলাটি শিক্ষকের অনুকুলে রুল এবসুলেট করে রায় ও আদেশ দেন। মামলাটির রায় ও আদেশের কপি সংযুক্ত করে এ শিক্ষক তার সকল বকেয়া বেতন-ভাতাদি প্রাপ্তির জন্য অধিদপ্তরে আবেদন করলে অধিদপ্তর ফেব্রুয়ারী/২০১২ হতে জানুয়ারী/২০২৩ পর্যন্ত মোট ১৩২ মাসের বকেয়া বেতন-ভাতাদি প্রদান না করে শুধুমাত্র ফেব্রুয়ারী/২০২৩ খ্রিঃ মাসের বেতন-ভাতাদি প্রদান করে এমপিও ছাড়করণ করেন। শিক্ষক দীর্ঘ দিন মামলাটি পরিচালনা করে অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত মহামান্য হাইকোর্টের রায় ও আদেশ অনুকূলে আসা সত্বেও ১১ বছরের বকেয়া বেতন-ভাতাদি না পেয়ে শিক্ষক তার পরিবার পরিজন নিয়ে অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সেই সাথে উক্ত বেতন-ভাতাদি প্রাপ্তির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষেপ হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
পোষ্ট শেয়ার করুন