শ্রীপুরে কাঁচা বাজারে আগুন, নাভিশ্বাস ক্রেতাদের

শ্রীপুরে কাঁচা বাজারে আগুন, নাভিশ্বাস ক্রেতাদের

মহসিন মোল্যা, বিশেষ প্রতিবেদক-

শ্রীপুরে হঠাৎ  প্রভাব পড়েছে নিত্যপণ্যের কাঁচা বাজারে। ফলে নাভিশ্বাস উঠছে ক্রেতাদের। সবকিছুর দাম ঊর্ধ্বগতির জন্য মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষের বেঁচে থাকা দায় হয়ে পড়েছে৷ অন্যদিকে বিক্রেতাদের আক্ষেপ আগের মতো বিক্রি নেই। অনেকে বাজারে এসে কাঁচা বাজার না করেই ফেরত চলে যাচ্ছেন। আবার কেউ বাধ্য হয়ে বেশি দামে বাজার করে নিয়ে যাচ্ছেন। শুক্রবার  সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলার কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

গত কয়েকদিন ধরে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কাচা মরিচ, ডিম ও সবজির দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি কাচা মরিচের দাম বেড়ে হয়েছে ৪০০ টাকা। পাশাপাশি অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে ডিম ও সবজির দাম। প্রথমবারের মতো ফার্মের মুরগির এক ডজন ডিমের দাম রেকর্ড মূল্যে ১৮০ টাকায় উঠেছে। অর্থ্যাৎ প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। যা সপ্তাহ খানেক আগে ৫০ টাকা থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দু’সপ্তাহ ধরে বেশিরভাগ কাচা মরিচের কেজি বিক্রি হয়েছে ৪০০ টাকায়। যেখানে গত দু’সপ্তাহ আগে কাচা মরিচের কেজি ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা, সেখানে দু’সপ্তাহের ব্যবধানে সেটি কেজি প্রতি প্রায় ২৮০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা বাড়াকে অস্বাভাবিক বলছেন ক্রেতারা। এছাড়া প্রতি কেজি আলু ৬০ টাকা, পটল প্রতি কেজি ৮০ টাকা, কচু প্রতি কেজি ৮০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, প্রতি কেজি ঢেড়স ৮০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ১২০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৮০ টাকা, মাঝারি লাউ প্রতি পিচ ১০০ টাকা, ফুলকপি প্রতি কেজি ১২০ টাকা ও বাঁধাকপি প্রতি কেজি ১২০ টাকা, পেঁয়াজ ১২০, শসা ৮০ টাকা, প্রতি কেজি মুলা ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলার খামারপাড়া বাজারের কাচামাল ব্যবসায়ী ফিরোজ মোল্যা বলেন, প্রচুর বৃষ্টি ও পাইকারি দাম বৃদ্ধির কারণে প্রতিদিনই কাচা মরিচ ও সবজির দাম বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে দাম আরো বাড়বে এমনটা আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া পরিবহন খরচও বেড়ে যাওয়ায় নিরুপায় হয়েই দাম বাড়ানো হয়। তবে হঠাৎ  নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাজারে বিক্রিও কমেছে।

অন্যদিকে বাজারে ফার্মের মুরগীর ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। আর মুদি দোকানে প্রতি পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা দরে। যেখানে মাত্র এক সপ্তাহ আগে ডিমের ডজন ছিল ১৫০  টাকা। যার প্রতি হালি বিক্রি হতো ৫০ টাকায়।

ডিমের দাম বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কাজলি বাজারের মুদি ব্যবসায়ী মো. সেলিম মোল্লা বলেন, গত কয়েকদিনে মুরগির খাবারের দাম বেড়েছে।  পাইকারি বাজারে ডিমের দাম বেশি তাই  স্বাভাবিকভাবেই খুচরা বাজারে ও দাম বেশি।

ক্রেতারা বলছেন, সরকার পরিবর্তন ও প্রচুর বৃষ্টির কারণে বেড়ে যাওয়ায় কাচা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। বিভিন্ন দ্রব্যের দাম লাগামহীন। সবকিছুর দাম বাড়লেও আমাদের উপার্জন বাড়েনি। বাজারে নিত্যপণ্যের দাম এত বেশি যে বাজারে যেতেই ভয় হয়। আমরা সাধারণ মানুষগুলো আছি মহা বিপদে। বাজার মনিটরিং না থাকার কারণে হু হু করে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। এ সময় সাধারণ ক্রেতারা বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে দ্রুত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি জানান।

উপজেলার বাজারগুলোতে ছোট মাছ নেই বললেই চলে। যা আছে তাও সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। আবার বড় মাছের দাম অনেক বেশি। ইলিশের ভরা মৌসুমেও দাম ধরাছোঁয়ার বাইরে। প্রায় প্রতিটি সবজি ৮০ টাকা থেকে ১২০ টাকার নিচে পাওয়ায় যাচ্ছে না। এছাড়া গরু ও ছাগল ও দেশী ও ব্রয়লার মুরগীর মাংসের দাম বাড়েনি। এছাড়া বেড়েছে সকল প্রকার চাল ও তেলের দাম।

Explore More Districts