শ্রম দপ্তরের পত্রের ৩মাসেও আউটসোর্সিং কর্মচারীদের মজুরী পরিশোধ করা হয়নি

শ্রম দপ্তরের পত্রের ৩মাসেও আউটসোর্সিং কর্মচারীদের মজুরী পরিশোধ করা হয়নি

২১১ কর্মচারীকে মজুরীবিহীন
পার করতে হচ্ছে দু’টি ঈদ

স্টাফ রিপোর্টার ঃ সাত দিনের সময় দেয়া পত্রের তিন মাস হতে চলেছে। কিন্তু এখনও পরিশোধ হয়নি আউটসোর্সিং কমচারীদের পাওনা। আবার পত্র দিয়েই দায়িত্ব শেষ করেছেন শ্রম দপ্তরের কর্মকর্তারা। বিষয়টি অনেকটা অমানবিক হলেও খুলনার সিভিল সার্জন দপ্তরের আওতাধীন ২১১ জন আউটসোর্সিং কর্মচারীর দিন কাটছে অনেকটা অসহায় অবস্থায়।
এদিকে, আউটসোর্সিং ঠিকাদার চলমান কাজের জন্য কিছু কর্মচারীকে গতকাল মজুরী দিলেও এর আগে যারা পাঁচ মাসের মজুরী পাবে তাদের বিষয়টি নিয়ে কোন মাথা ঘামাচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। যে কারণে একই প্রতিষ্ঠানে পুরনো বকেয়ার হদিস না মিললেও চলমান কিছু শ্রমিককে মজুরী দেয়ায় পূর্বের শ্রমিকদের আদৌ বকেয়া দেয়া হবে কি না সেটি নিয়েও প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
গত ২৮ মার্চ পত্র দিয়ে সাত কর্মদিবসের মধ্যে আউটসোর্সিং কর্মচারীদের মজুরী পরিশোধের অনুরোধ জানিয়েছিল খুলনার কল কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। মজুরী পরিশোধ না করায় আউটসোর্সিং কর্মচারীদের গত ঈদের ন্যায় আগামী ঈদ-উল-আযহাও নিদারুল কষ্টে কাটতে পারে বলে তারা মনে করছেন। অথচ শ্রম দপ্তরের কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে ঈদ-উল-ফিতরের পর ব্যবস্থা নেয়ার কথা বললেও এখনও কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
তবে গতরাতে খুলনার বিভাগীয় শ্রম পরিচালক মো: মিজানুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে কল কারখানা প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তর যে পদক্ষেপ নিয়েছে সেটি এখনও সঠিক আছে বলে তদন্তে প্রতীয়মান হয়েছে। বিষয়টি এখন আইনী পদক্ষেপ নেয়ার প্রক্রিয়ায় আছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিষ্ঠান কল কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের খুলনার উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়ের শ্রম পরিদর্শক(সাধারণ) শিউলি বিশ^াস ও তাপস কুমার মীরবর স্বাক্ষরিত ১২১০(৪) নম্বর স্মারকের পত্রে উল্লেখ করা হয়, খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলার দামোদরের মেসার্স তাকবীর এন্টারপ্রাইজের আওতায় খুলনার সিভিল সার্জনের আওতাধীন বিভিন্ন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে বেশকিছু আউটসোর্সিং কর্মচারী দীর্ঘ ১৮ মাস কাজ করার পর ১৩ মাসের বেতন দেয়া হলেও পাঁচ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। এছাড়া জনবল সরবরাহের কাজটি বর্ধিত করার নামে প্রতিটি কর্মচারীর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা করে কেটে নেয়া হয়। এমন অভিযোগ করে উক্ত দপ্তরের মহাপরিদর্শক ও খুলনা শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক বরাবর পৃথক দু’টি অভিযোগ করা হয়। উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২৭ মার্চ সোমবার বেলা ১১টায় ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের আহবান জানিয়ে উক্ত দপ্তর থেকে পত্র দেয়া হয়। কিন্তু সভায় আউটসোর্সিং কর্মচারীরা উপস্থিত থাকলেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক মো: ইকতিয়ার উদ্দীন অথবা তার কোন প্রতিনিধি সেখানে উপস্থিত হননি। তথ্য প্রমাণে দেখা যায়, দরপত্রের মেয়াদ বর্ধিত না করা সত্বেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদেরকে পাঁচ মাস বিনা বেতনে বিভিন্ন পদে কর্মে নিয়োজিত রাখেন। সার্বিক বিবেচনায় ঠিকাদারের কাছে আউটসোর্সিং কর্মচারীরা পাঁচ মাসের বেতন পাবেন।
এমন অবস্থায় শ্রম ২০০৬ এর ১২৩(১) ধারা মোতাবেক কোন শ্রমিকের মজুরীকাল শেষ হবার পরবর্তী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তার মজুরী পরিশোধের বিধান রয়েছে। কিন্তু উক্ত ঠিকাদার শ্রম আইনের ওই ধারা লংঘন করেছেন। এমতাবস্থায় পত্র জারির সাত কর্মদিবসের মধ্যে শ্রমিকদের পাঁচ মাসের মজুরী পরিশোধ করে উক্ত দপ্তরে তার রেকর্ড দাখিলের জন্য বলা হয়। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও পত্রে উল্লেখ করা হয়।
এ ব্যাপারে গতরাতে উক্ত দপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক নবীন কুমার হাওলাদারকে ফোন দেয়া হলে তার মোবাইলটি রিসিভ হয়নি। পরে তার হোয়াটসএ্যাপ নাম্বারে এসএমএস দিয়েও কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

Explore More Districts