
নড়াইলকণ্ঠ: নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নের বিভিন্ন সরকারি রাস্তার পাশে লাগানো সামাজিক বনায়নের মেহগনি ও রেন্টি প্রজাতির গাছগুলো অনুমোদন ছাড়াই কেটে বিক্রি করা হয়—এমন অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় নড়াইল সদর উপজেলা (ভূমি) অফিসের পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা চেয়ারম্যানকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছেন বলে নিশ্চিত করেছে প্রশাসনিক সূত্র।
তবে চার্জশিটভুক্ত আসামি হয়েও তিনি এখনও চেয়ারম্যান পদে বহাল থেকে দায়িত্ব পালন করছেন, যা প্রশাসনিক নীরবতার একটি স্পষ্ট উদাহরণ বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীরা পরস্পর যোগসাজশে সরকারি রাস্তার ধারের গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। গাছ থাকার ফলে রাস্তার মাটি ভাঙন প্রতিরোধ হতো—কিন্তু গাছ কেটে ফেলার পর এখন এলাকাবাসীকে ভাঙন ও চলাচলের দুর্ভোগ ভোগ করতে হচ্ছে।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা আক্তারুজ্জামান বলেন, “আমরা বাধা দিতে গিয়েছিলাম, কিন্তু তারা বলেছে উপর মহলের নির্দেশেই গাছ কাটা হচ্ছে।”
আরেকজন আলাল উদ্দিন জানান,“ফেসবুকে প্রতিবাদ জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি। তারা বলেছে, ‘উপর থেকে নির্দেশ এসেছে।’”
এদিকে পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা বলেছেন, সরকারি অনুমতি ছাড়া গাছ কাটার ঘটনা সম্পূর্ণ অবৈধ ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। তারা এ ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
বন বিভাগের নিয়ম অনুযায়ী সরকারি রাস্তার গাছ বিক্রির জন্য অবশ্যই বন বিভাগের অনাপত্তিপত্র ও মূল্য নির্ধারণ প্রয়োজন। কিন্তু শাহাবাদ ইউনিয়নের ঘটনাটিতে এসব প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন নড়াইল সদর ফরেস্ট রেঞ্জার কাজী ইশতিয়াক রহমান।
তিনি বলেন, “বন বিভাগের কোনো অনুমতি ছাড়াই গাছ কাটা হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ অবৈধ।”
অভিযুক্ত চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,
“আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। কে বা কারা গাছ কেটেছে, আমি জানি না।”
তবে চার্জশিট দাখিলের পরও কেন তিনি এখনো চেয়ারম্যান পদে বহাল—তা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে নীরবতা নিয়েই চলছে জনমতের সমালোচনা।

