আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে শপথ গ্রহণ করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (চাকসু), হল ও হোস্টেল সংসদে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর একটার দিকে চাকসুর প্রতিনিধিদের শপথবাক্য পাঠ করান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও চাকসুর সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. ইয়াহ্ইয়া আখতার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে শপথপাঠের সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় সংসদে ২৬ জন প্রার্থী শপথ নেন। এছাড়া ১৪টি হল এবং ১ হোস্টেল সংসদ নির্বাচনে সর্বমোট ২৩৬ জন প্রতিনিধি শপথ গ্রহণ করার কথা থালেও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন না। চাকসু নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সংসদে ২৬ জন নির্বাচিত প্রতিনিধির মধ্যে ২৪ জনই বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সমপ্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল থেকে নির্বাচিত হয়েছেন।
কেন্দ্রীয় সংসদে শপথ নেন যারা: ভিপি হিসেবে শপথ নেন ছাত্রশিবির প্যানেল থেকে নির্বাচিত ইব্রাহিম হোসেন রনি এবং জিএস পদে সাঈদ বিন হাবিব। এজিএস পদে শপথ নেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের বিজয়ী প্রার্থী আইয়ুবুর রহমান তৌফিক।
১৮টি সম্পাদকীয় পদের মধ্যে ১৭টিতে ছাত্রশিবিরের প্রার্থীরা জয় পেয়ে শপথ নেন। তারা হলেন, খেলাধুলা ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক পদে মোহাম্মদ শাওন, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে হারেজুল ইসলাম, সহ–সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে জিহাদ হোসাইন, দপ্তর সম্পাদক পদে আব্দুল্লাহ আল নোমান, সহ–দপ্তর সম্পাদক পদে জান্নাতুল আদন নুসরাত, ছাত্রী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক পদে নাহিমা আক্তার দ্বীপা, সহ–ছাত্রী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক পদে জান্নাতুল ফেরদাউস রিতা, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক পদে মাহবুবুর রহমান।
এছাড়া গবেষণা ও উদ্ভাবন বিষয়ক সম্পাদক পদে তানভীর আনজুম শোভন, সমাজসেবা ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক পদে তাহসিনা রহমান, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক পদে আফনান হাসান ইমরান, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক পদে মোনায়েম শরীফ, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে মেহেদী হাসান সোহান, যোগাযোগ ও আবাসন বিষয়ক সম্পাদক পদে ইসহাক ভূঁইয়া, সহ–যোগাযোগ ও আবাসন বিষয়ক সম্পাদক পদে ওবায়দুল সালমান, আইন ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক পদে তাওহিদ রাব্বি, পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদক পদে মাসুম বিল্লাহ নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে শপথ নেন। সহ–খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে বিনির্মাণ শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেল থেকে নির্বাচিত হয়ে শপথ নেন তামান্না মাহবুব প্রীতি। এছাড়া ৫টি নির্বাহী সদস্য পদে শপথ নেন জান্নাতুল ফেরদাউস সানজিদা, সালমান ফারসি, সোহানুর রহমান ও আদনান শরীফ। তবে শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না কেন্দ্রীয় সংসদের নির্বাহী সদস্য আকাশ দাস।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ১০টি হল ও একটি হোস্টেল। ছাত্রীদের জন্য রয়েছে মাত্র ৫টি হল। ১৪ টি হল সংসদে ১৬ জন করে প্রতিনিধি এবং একটি হোস্টেল সংসদে ১২ জনসহ সর্বমোট ২৩৬ জন প্রতিনিধি নির্বাচিত হন। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে চাকসু, হল ও হোস্টেল সংসদের নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিনিধিত্বশীল ছাত্র সংসদ পেয়েছে। এই ছাত্র সংসদের মাধ্যমে তারা নিজেদের দাবি–দাওয়াগুলো উপস্থাপন করবেন। আর আজকে আমরা নির্বাচন কমিশন শপথ দেওয়ার মাধ্যমে আমাদের কাজ শেষ করলাম এবং হাফ ছেড়ে বাঁচলাম।
চাকসুর সভাপতি ও উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবি–দাওয়ার মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অন্যতম দাবি ছিল চাকসু নির্বাচন। সেই দাবি এখন পূরণ হয়েছে।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে চাকসুর সাবেক সহ–সভাপতি (ভিপি) জসিম উদ্দিন সরকার, মাজহারুল হক চৌধুরী, এস এম ফজলুল হক, শামসুজ্জামান হিরা ও জিএস মাহমুদুর রহমান মান্না উপস্থিত ছিলেন।


