‘লোক দেখানো’ প্রকল্পে কোটি টাকা ব্যয়, অচল পড়ে বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন

‘লোক দেখানো’ প্রকল্পে কোটি টাকা ব্যয়, অচল পড়ে বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন

১ September ২০২৫ Monday ৪:০১:৪৭ PM

Print this E-mail this


পিরোজপুর প্রতিনিধি:

‘লোক দেখানো’ প্রকল্পে কোটি টাকা ব্যয়, অচল পড়ে বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন

শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে পিরোজপুরের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপন করা হয়েছিল ডিজিটাল বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন। তবে ৬ বছর ধরে মেশিনগুলো অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপিত হলেও হাজিরা মেশিনগুলো আসছে না কোনো কাজেই। প্রকল্প বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে দুর্নীতির কারণেই এ উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্কুল লেভেল ইমপ্রুভমেন্ট প্ল্যান (স্লিপ) প্রকল্পের আওতায় ২০১৯ সালে জেলার ৯৮৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হাজিরা মনিটরিংয়ের জন্য এসব বায়োমেট্রিক মেশিন বসানো হয়। প্রতিটি বিদ্যালয় থেকে নেয়া হয়েছিল ২০ হাজার টাকা করে। তবে মেশিনগুলো কার্যকর ছিল মাত্র ৫ থেকে ৬ মাস। এরপর থেকে তা অচল হয়ে পড়ে।

অধিকাংশ বিদ্যালয়ে এখন আর বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন দেখা না গেলেও কিছু বিদ্যালয়ের দেয়ালে এখনও ঝুলছে সেসব মেশিন। কিন্তু নেই কোনো ইন্টারনেট সংযোগ। শিক্ষক ও অভিভাবকদের অভিযোগ, নিম্নমানের মেশিন সরবরাহ এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে দুর্নীতির কারণে এ অবস্থা হয়েছে।

পিরোজপুর সদর উপজেলার মাছিমপুর এলাকার অভিভাবক জহিরুল হক বলেন, ‘বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিনগুলো স্থাপনের পর থেকেই কোনো কাজে আসেনি। প্রকল্পের মাধ্যমে শুধু অর্থ লুটপাট হয়েছে। যারা এভাবে রাষ্ট্রের টাকা আত্মসাৎ করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।’

একই উপজেলার রাজারহাট এলাকার অভিভাবক খালিদ আবু জানান, ‘হাজিরা মেশিনগুলোর রক্ষণাবেক্ষণে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। প্রকল্পটি ছিল লোক দেখানো। প্রতিটি মেশিনের দাম ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা হলেও ২০ হাজার টাকা নেয়া হয়। অথচ কোনো ভাউচারও দেয়া হয়নি।’

এ বিষয়ে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোল্লা বক্তিয়ার রহমান বলেন, ‘বায়োমেট্রিক মেশিনগুলো বর্তমানে চালু আছে কিনা জানা নেই। খোঁজ নিয়ে বলা যাবে। প্রকল্পটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হলে শিক্ষকদের হাজিরা মনিটরিং এবং উপস্থিতি নিশ্চিত করা যেত। কর্তৃপক্ষ যদি পুনরায় চালুর নির্দেশ দেয়, তাহলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে আপাতত বিকল্প ব্যবস্থায় শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হচ্ছে।’

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে স্লিপ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে জেলার ৯৮৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন কেনা হয়েছিল।

সম্পাদনা: আমাদের বরিশাল ডেস্ক


শেয়ার করতে ক্লিক করুন:

Explore More Districts