পাহাড়ি এলাকায় কৃষি কাজ, নিত্য প্রয়োজনীয় পানি ও আমিষের অভাব পূরনের লক্ষ্যে বান্দরবানের লামা উপজেলায় পতিত জায়গায় গোধা বাঁধ নির্মানের মাধ্যমে মাছ এবং হাঁস চাষের উদ্যোগে নিয়েছে বেসরকারী সংস্থা কারিতাসের এগ্রো ইকোলজি প্রকল্প। উপজেলার লামা সদর ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি চিউনী বৈদ্যপাড়া, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের হারগাজা ও ইয়াংছা এলাকায় তিনটি গোধা বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সংস্থাটি।
এসব গোধা বাঁধ নির্মাণ হলে এলাকায় মাছ চাষের মাধ্যমে আমিষের অভাব, কৃষিকাজ ও দৈনন্দিন গৃহস্থলীর কাজে ব্যবহৃত পানি সংকট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, সাধারণত বছর জুড়ে পাহাড়ি এলাকায় পানি সংকট থাকে। বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে ঝিরি, ঝর্ণা, পুকুর, নদীর পানি শুকিয়ে যায়। এ কারণে পাহাড়ি এলাকায় পানি সংকট আরো তীব্র আকার ধারণ করে। তাই রুপসীপাড়া ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি এলাকার পতিত পুকুর পুন;খননের পর এবার গোধা বাাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় কারিতাসের এগ্রো ইকোলজি প্রকল্প। এ জন্য গঠন করা হয় ১০ বছর মেয়াদি প্রতি গোধা বাঁধ ভিত্তিক ১৫ সদস্য বিশিষ্ট ৩টি মৎস্যচাষি দলও। এ সদস্যগণ গোধার মাছ ও হাঁস চাষের মাধ্যমে আগ্রহ সৃষ্ট্রি পাশাপাশি নিজেদের স্বাবলম্বী করে তুলতে পারবেন। এ ধারাবাহিকতায় সোমবার চিউনী বৈদ্য পাড়ার বোখাইন মার্মার পতিত জায়গায় গোধা বাঁধ নির্মাণ কাজের উদ্ভোধন করেন প্রকল্পের মাঠ কর্মকর্তা মো. মামুন সিকদার।
এই বিষয়ে আরও
এ সময় হিউম্যানটারিয়ান ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা বীর সিংহ চাকমা, চিউনী বৈদ্য পাড়া কারবারী উচিং মার্মাসহ প্রকল্পের মাঠ সহায়ক ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। ইতিমধ্যে গোধা বাঁধের উপকারভোগীদের মাছ ও হাঁস চাষের ওপর প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে বলে জানান প্রকল্পের কর্মকর্তারা।
পতিত জায়গার মালিক বোখাইন মার্মা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমার কিছু জায়গা অকেজো পড়েছিল। বর্ষা মৌসুমে ঝিরি বা কুয়ায় পানি থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে মোটেও পানি থাকেনা। আশপাশে আর কোন জলাশয় না থাকায় প্রতিবছর এলাকার মানুষকে তীব্র পানি সংকটে ভুগতে হত। পরে এলাকাবাসীর আবেদনের প্রেক্ষিতে কারিতাসের এগ্রো ইকোলজি প্রকল্প কর্মকর্তারা পতিত জায়গায় গোধা বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেন। গোধা বাঁধ নির্মাণ হলে মৎস্য চাষিদল সদস্যের পাশাপাশি এলাকার সকল শ্রেণীর মানুষ এর সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
পতিত জায়গায় গোধা বাঁধ নির্মাণের সত্যতা নিশ্চিত করে লামা সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন বলেন, আমার ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকায় গোধা বাঁধ নির্মাণ করা হলে এলাকার মানুষ উপকৃত হবে। কারিতাসের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।
এ বিষয়ে কারিতাস এগ্রো ইকোলজি প্রকল্পের উপজেলা মাঠ কর্মকর্তা মো. মামুন সিকদার বলেন, কারিতাসের অর্থায়নে কৃষি কাজ, নিত্য প্রয়োজনীয় পানি এবং মাছ চাষের মাধ্যমে আমিষের অভাব পূরনের লক্ষ্যে লামা সদর ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি চিউনী বৈদ্যপাড়ায় গোধা বাাঁধ নির্মানের পর ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের হারগাজা ও ইয়াংছা এলাকায়ও দুইটি গোধা বাঁধ নির্মানের পরিকল্পনাও রয়েছে।