রোগা গরু জবাই, ৭০ হাজার টাকায় কিনলেন কসাই আনু

রোগা গরু জবাই, ৭০ হাজার টাকায় কিনলেন কসাই আনু

চাঁদপুর শহরের চক্ষু হাসপাতালে ঠিক উল্টো পাশে একটা কালো রঙের গরু। মাটিতে পড়ে আছে, নার্ভ ভুড়ি বের হয়ে এসেছে বাইরে। নিঃশ্বাস চলছে টানটান, মৃত্যু যেন দরজায় দাঁড়িয়ে কড়া নাড়ছে। খামারি আইয়ুব জানতেন, এই গরু আর বেশিক্ষণ টিকবে না। তাই শেষ সময়ে গরুটিকে জবাই করে দেন তিনি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সরজমিনে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়।

দাম ছিল দেড় লাখ টাকার মতো। কিন্তু সুযোগ নিতে পিছপা হল না বিপনীবাগের মাংস ব্যবসায়ী আনু গাজী। মাত্র ৭০ হাজার টাকায় গরুটি কিনে ফেললেন। এমনকি আগেভাগেই ১০ হাজার টাকার বায়নাও দিয়ে রাখলেন।

কিন্তু সমস্যা বাধল তখন, যখন গুজব ছড়িয়ে পড়ল একটি অসুস্থ গরু জবাই করে বাজারে মাংস বিক্রির চেষ্টা চলছে। সাংবাদিকরা ছুটে গেলেন ঘটনাস্থলে। তখনও গরুটি কাটা হচ্ছিল। পাশে দাঁড়িয়ে ছিল অটোরিকশা মাংস বাজারে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছিল পুরোদমে।

সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেতেই পালিয়ে গেলেন ব্যবসায়ী আনু গাজী। খামারি আইয়ুব তাকে ফোনে জানালে সে শুধু বলল—“দেখছি, সমাধান করছি।”

তবে পালিয়ে বাঁচা গেল না। বাজারে গিয়ে সাংবাদিকরা খুঁজে বের করলেন আনুকে। প্রথমে সে গরু কেনার কথা অস্বীকার করল। কিন্তু যখন তার লোকজন স্বীকার করে ফেলল পুরো ঘটনাটা, তখন আর মুখে কথা রইল না তার।

এই প্রথম না, আগেও তাকে ধরা পড়তে দেখা গেছে মরা গরু কিনে বাজারে এনে বিক্রি করার সময়। তার বিরুদ্ধে এর আগেও চোরাই ও রোগাক্রান্ত গরু বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।

এই ঘটনা কেবল প্রতারণা নয়, মানুষের জীবনের সাথে নির্মম খেলা। একজন বিক্রেতা যদি মুনাফার লোভে মৃত্যুপথযাত্রী গরুর গোশত বাজারে তোলে, তাহলে নিরাপদ খাদ্যের স্বপ্নটাই ভেঙে যায়।

এখন প্রতারিত ক্রেতারা চাচ্ছেন—এই ঘটনার যেন সঠিক বিচার হয়। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি উঠেছে চারপাশে।

সিনিয়র স্টাফ করেসপন্ডেট, ১০ জুলাই ২০২৫

Explore More Districts