মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’র ১৫০০ তম শুভাগমনে পবিত্র ঈদ–এ মিলাদুন্নবী (দ.) উপলক্ষে আনজুমান–এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট, ঢাকা শাখা প্রতিবছরের মতো গতকাল বুধবার বর্ণাঢ্য জুলুছ বের করেছে। আওলাদে রাসুল, রাহনুমায়ে শরীয়ত ও ত্বরিকত, পীরে বাঙাল, হযরতুল আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ (মাদ্দাজিল্লুহুল আলী)’র নেতৃত্বে এ জুলুছে হাজার হাজার আশেকে–রাসূলগণের অংশগ্রহণে হাতে কলেমা খচিত বিভিন্ন রং–বেরংয়ের পতাকা নিয়ে ইয়া নবী সালাম আলাইকা, মুস্তফা জানে রহমত ও ইসলামিক সঙ্গীত ভিন্ন আবহ তৈরী করে। ঢাকার মোহাম্মদপুরস্থ কাদেরিয়া তৈয়্যেবিয়া আলিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গন হতে বর্ণাঢ্য র্যালি শুরু হয়ে শাহজাহান রোড, ইকবাল রোড, মোহাম্মদপুর পোস্ট অফিস মোড় হয়ে মোহাম্মদপুর টাউন হল, বাস স্ট্যান্ড, নুরহাজান রোড, কেন্দ্রীয় কলেজ মোড় ঘুরে শিয়া মসজিদ, রিং রোড, আদাবর সম্পা মার্কেট থেকে ইউটার্ন নিয়ে সাফরা মসজিদ টিক্কাপাড়া হয়ে মোহাম্মদপুরস্থ কাদেরিয়া তৈয়্যেবিয়া আলিয়া (কামিল) মাদ্রাসায় গিয়ে বিশাল মাহফিলে পরিণত হয়। এতে বিশেষ মেহমান ছিলেন– সাহেবজাদা হুজুর কেবলা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ্ (মাদ্দাজিল্লুহুল আলী) এবং সাহেবজাদা হুজুর কেবলা সৈয়্যদ মেহমুদ আহমদ শাহ্ (মাদ্দাজিল্লুহুল আলী)।
কাদেরিয়া মাদ্রাসা ময়দানে জুলুছোত্তর নুরানী মাহফিলে আল্লামা পীর সৈয়দ সাবির শাহ (মাদ্দাজিল্লুহুল আলী) বক্তব্যে বলেন, আল্লাহপাকের নিয়ামতসমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ নিয়ামত হাবিবের সৃজন। তাঁর সৃজনে ধন্য করেছেন সমগ্র সৃষ্টি জগৎকে। যাঁর সম্পর্কে স্বয়ং আল্লাহ বলেন, আপনাকে সৃষ্টি না করলে কিছুই সৃষ্টি করতাম না (আল হাদিস)। আমি আপনাকে সমগ্র সৃষ্টির জন্য রহমত স্বরূপ পাঠিয়েছি। আল্লাহর রহমত ও করুণা প্রাপ্তির কারণে খুশি উদযাপন করা সকল সঞ্চিত এবাদত হতেও উত্তম এবং নবীজির শুভ জন্ম সংবাদে দাসীকে মুক্ত করে আনন্দ বহিঃ প্রকাশ করায় আবু লাহাবের মত অভিশপ্ত কাফেরও প্রতি সোমবার ভয়াবহ শাস্তি হতে কিছুটা পরিত্রাণ পায়। একজন কাফের হয়েও মিলাদুন্নবী অর্থাৎ নবীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’র জন্ম উপলক্ষে খুশী প্রকাশের কারণে আবু লাহাব যদি আল্লাহর এমন করুণা লাভ করে, তবে আমরা কেন এ মহান নেয়ামত থেকে বঞ্চিত হব?
মাহফিলে স্বাগত বক্তব্য দেন, ঢাকা আনজুমানের চেয়ারম্যান হাজী মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন, কেন্দ্রীয় আনজুমানের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মনজুর আলম (মনজু), সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, ঢাকা আনজুমানের সেক্রেটারি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় আনজুমানের জয়েন্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ সিরাজুল হক, ফাইন্যান্স সেক্রেটারি মোহাম্মদ কমর উদ্দীন (সবুর), প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন সেক্রেটারি মোহাম্মদ গোলাম মহিউদ্দীন, সদস্য সাদেক হোসেন (পাপ্পু), মুখপাত্র অ্যাড. মোছাহেব উদ্দীন বখতিয়ার, ঢাকা আনজুমানের জয়েন্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ আব্দুল মালেক বুলবুল, অ্যাসিসটেন্ট সেক্রেটারি এস এম গোলাম কিবরিয়া, অর্থ–সম্পাদক শোয়েবুজ্জামান চৌধুরী তুহিন, সদস্য হাজী নুরুল আমিনসহ ঢাকা আনজুমান ও গাউসিয়া কমিটির নেতৃবৃন্দ ছাড়াও ঢাকা–চট্টগ্রামসহ সারাদেশের হাজারো নবীপ্রেমিক।
মাহফিলে ঈদ–এ–মিলাদুন্নবী (দ.)’র তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য দেন, কাদেরিয়া তৈয়্যেবিয়া আলিয়া (কামিল) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতী মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন আল–আযহারী, মাওলানা মুনিরুজ্জামান, মুফতী মাহমুদুল হাসানসহ বরেণ্য ওলামায়ে কেরাম। মাহফিল পরিচালনা করেন উপাধ্যক্ষ মুফতী আবুল কাশেম মোহাম্মদ ফজলুল হক।
মাহফিলে বক্তারা বলেন, অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গঠনে প্রিয় নবীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)’র আদর্শিক চেতনার বিকল্প নেই। যেখানে অশান্তি, জঙ্গিবাদ উপস্থিত তার বিপরীতে প্রিয় হাবিবের দর্শনই যথেষ্ট। সর্বত্র রাসূলের (দ.) দর্শন থেকে যোজন দূরে থাকার কারণে মানুষ পথভ্রষ্ট হচ্ছে। অশান্তি, অন্যায়ে ভরপুর আরব জাহানকে শান্তির নীড় তৈরিতে হাবিবের প্রচেষ্টা কখনো ব্যর্থ হয়নি। সর্বত্র যিনি সফল তিনি হলেন আমাদের নবী (দ.)। সুতরাং যিনি সফলতার চাবিকাঠি, তাঁর অনুস্মরণই সকল সমস্যার সমাধান নিহীত। শেষে খতমে গাউসিয়া ও মিলাদ শরীফ শেষে বাংলাদেশসহ সমস্ত মুসলিম উম্মার শান্তি কামনায় দোয়া করেন হযরতুল আল্লামা পীর সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ (মাদ্দাজিল্লুহুল আলী)। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।