রাজবাড়ীর মালিক সমিতির পাশের পূজামন্ডপ ভাংচুরের ঘটনা উদঘাটন, রানাপদ সরকার গ্রেপ্তার |

রাজবাড়ীর মালিক সমিতির পাশের পূজামন্ডপ ভাংচুরের ঘটনা উদঘাটন, রানাপদ সরকার গ্রেপ্তার |

রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :

রাজবাড়ী জেলা শহরের বাস মালিক সমিতির পাশে স্থাপিত দূর্গা পূজামন্ডপ ভাংচুরের ঘটনা উদঘাটন করেছে জেলা পুলিশ। অতিদ্রুত সময়ে এই ক্লুলেস মামলা উদঘাটন এবং আসামি গ্রেপ্তারের ঘটনায় প্রসংশায় ভাসছেন রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মোছাঃ শামিমা পারভীন। এদিকে, ওই ঘটনায় পুলিশ রানাপদ সরকার (২৬) কে গ্রেপ্তার করেছে। রানাপদ রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর ইউনিয়নের খোলাবাড়ীয়া গ্রামের রতন কুমার সরকারের ছেলে। সে রাজবাড়ী সরকারী আদর্শ মহিলা কলেজের সামনে অবস্থিত সমমনা ফটোকপি দোকানের কর্মচারী এবং তারা আওয়ামীলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান শরিফের ভাই আরিফের বাড়ীর ভাড়াটিয়া। রানাপদ বিজ্ঞ আদালতে উক্ত প্রতিমা ক্ষতিগ্রস্ত করার বিষয়ে মৌঃ জাঃবিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানদশী প্রদান করে। প্রতিবন্ধী বিবেচনায় বিজ্ঞ আদালত রাকে তার পরিবারের জিম্মায় প্রবান করার আদেশ দেন।
ঘটনার বিবরন- শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজবাড়ী সদর থানাধীন জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ অফিস সংলগ্ন সজ্জনকান্দা মধ্যপাড়ায় সার্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটির উদ্যোগে একটি অস্থায়ী দুর্গাপুজা মন্দির তৈরী করা হয়। উক্ত মন্দিরে দেবী দুর্গাসহ মোট ৫ টি দেব-দেবীর প্রতিমা তৈরী করা হয়। গত ৮ ডিসেম্বর রাত দেড়টা হতে ওই দিন বেলা ১১টার মধ্যে যে কোন সময় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি/ব্যাক্তিরা উক্ত মন্দিরের ৫ টি দেব-দেবীর প্রতিমার অংশবিশেষ ভেঙ্গে ফেলে, যা স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার করাসহ তাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে। অস্ত্র বিষয়ে রাজবাড়ী সদর থানার সাধারণ ডায়রী (জিডি নং- ৩৭৬, তারিখ-০৮/১০/২০২৪) লিপিবদ্ধ করা হয়। এই ঘটনায় রাজবাড়ী সদর থানায় মামলা (নং-০৬, তারিখ- ০৯/১০/২০২৪ ধারা-২৯৫/২৯৭ পেনাল কোড, ১৮৬০) দায়ের করা হয়।

রাজবাড়ী জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার মোছাঃ শামিমা পারভীন এর সার্বিক দিক নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে রাজবাড়ী সদর থানা ও জেলা গোয়েন্দা শাখার একাধিক টিম মামলার রহস্য উদঘাটনের কাজে নামে। অনুসন্ধান ও তদন্তের একপর্যায়ে উক্ত পুজা মন্ডপসহ সংলগ্ন স্থানের বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করা হয়। পর্যবেক্ষণকালে কমলা রংয়ের টি-শার্ট এবং কালো ট্রাউজার পরিহিত একজন ব্যক্তিতে সন্দেহভাজন হিসেবে সনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা গোয়েন্দা শাখার পুলিশ পরিদর্শক মফিজুল ইসলাম-এর নেতৃত্বে সঙ্গীয় অফিসার-ফোর্স অভিযান পরিচালনা করে গত ৬ অক্টোবর রাত অনুমান ১১টার ৫০ মিনিটে রানাপদ সরকারকে সজ্জনকান্দার মন্দির সংলগ্ন ভাড়া বাসা হতে আটক করে। আটককৃত ব্রানাপদ সরকারকে জিজ্ঞাসাবাদ কালে সে জানায়, পূজার ফুল সংগ্রহের জন্য ওই দিন ভোর সময় মন্দির সালয় এলাকায় যায়। ফুল সংগ্রহ শেষে কৌতূহল বশতঃ সে উক্ত মন্দিরে প্রবেশ করে। মন্দিরে প্রবেশের সময় সে গনেশ প্রতিমার সাথে ধাক্কা খায় এবং উক্ত প্রতিমার মাথা ভেঙ্গে ফেলে। এ সময় সে মন্ডপে থাকা বিভিন্ন দেব দেবীর প্রতিমা স্পর্শ করে। একপর্যায়ে যে অবচেতন মনে বিভিন্ন প্রতিমা ক্ষতিগ্রস্ত করে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, রানাপদ সরলার একজন অচ্ছল প্রতিবন্ধী। সে উপজেলা সমাজসেবা অফিস হতে প্রতি মাসে ৫০০ টাকা ভাতা গ্রহণ করেন। রানাপদ সরকারকে বৃহস্পতিবার রাজবাড়ী জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিক্টেট আদালত-০২ এ হাজির করা হলে সে বিজ্ঞ আদালতে উক্ত প্রতিমা ক্ষতিগ্রস্ত করার বিষয়ে ফৌঃ জাঃবিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানন্দী প্রদান করে। প্রতিবন্ধী বিবেচনায় বিজ্ঞ আদালত রাকে তার পরিবারের জিম্মায় প্রবান করার আদেশ দেন।

রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মোছাঃ শামিমা পারভীন বলেন, এ ঘটনার সাথে আরো কেউ সম্পৃক্ত রয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

 

ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন —

Explore More Districts