
রুবেলুর রহমান, রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
রাজবাড়ীতে প্রতিদিন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও স্বর্দি-জ্বর, ঠান্ডা-কাশি, শ্বাসকষ্টসহ নানা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে নতুন নতুন রোগী। এতে চাহিদা বড়েছে এনএস ও ডিএনএস স্যালাইনের। ফলে রাজবাড়ীতে সংকট দেখা দিয়েছে স্যালাইনের।
এদিকে চাহিদার তুলনায় হাসপাতাল বা ফার্মেসীতে পর্যাপ্ত সংখ্যক স্যালাইন না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগী ও তার স্বজনরা। কিছু কিছু ফার্মেসীতে স্যালাইন পাওয়া গেলেও তা প্যাকেটের গায়ের মুল্যের চেয়ে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে রোগীদের। তারপরও একটির বেশি দিচ্ছেন না ফার্মেসী মালিকরা।
গত ২৪ ঘন্টায় রাজবাড়ীতে নতুন করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৮ জন এবং জেলা সদরসহ উপজেলা হাসপাতাল গুলোতে ভর্তি হয়েছে ৬১ জন রোগী। এছাড়া বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১১১ জন রোগী। এরমধ্যে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ৩২ জন, পাংশা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩৫ জন, কালুখালী স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ২০জন, বালিয়াকান্দি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৮ জন ও গোয়ালন্দ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৬ জন রোগী ভর্তি রয়েছে।
ফার্মেসী মালিক ও ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দাবি, এলসিসহ কাচামারের স্বল্পতার কারণে কোম্পানি চাহিদা অনুযায়ী স্যালাইন দিতে পারছেন না। সেখানে প্রয়োজন এক ফার্মেসীতে ২ কেস, সেখানে দেয়া হচ্ছে মাত্র ৫ থেকে ১০ পিস। যার কারণে তারা জরুরী রোগী ছাড়া একটি বেশি কাউকে দিচ্ছেন না। আর প্যাকেটের গায়ের দামই রাখা হচ্চে রোগীদের থেকে।
রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, ভর্তির পর শুধু মাত্র কিছু ট্যাবলেট দিয়ে স্যালাইন কিনে আনার জন্য স্লিপ ধরিয়ে দেন সিস্টাররা। বাইরে থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে স্যালাইন। আবার একটি’র বেশি স্যালাইন দিচ্ছেন ফার্মেসী মালিকরা। এছাড়া হাসাপতালের পরিবেশও ভাল না। এছাড়া কর্তৃপক্ষের উদাসিনতায় ভর্তিকৃত বেশির ভাগ ডেঙ্গু রোগী মশারীর মধ্যে না থেকে বাইরে শুয়ে বসে আছেন। যার কারণে ডেঙ্গু সংক্রমনের ঝুকিও বাড়ছে।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ শেখ মোঃ হান্নান বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা তারা তাদের সাধ্যমত দিচ্ছেন। তবে কিছুটা স্যালাইন সংকট রয়েছে। এছাড়া রোগীর অবস্থা খারাপ হেলে, সেক্ষেত্রে রেফার করা হয়। রোগীদের মশারির ভিতরে থাকতে বললেও তারা বাইরে শুয়ে বসে থাকনে। এটা তাদের সচেতনতার অভাব।
রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ ইব্রাহিম টিটোন বলেন, প্রতিটি প্রোগ্রামে তিনি সবাইকে সচেতন হবার জন্য বলেন। আসলে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সকলস্তরের জনপ্রতিনিধিসহ সবাইকে সচেতন হবে এবং মশা নিধনে যার যার স্থান থেকে কাজ করতে হবে। এখন শহরের থেকে গ্রামে বেশি সনাক্ত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, কিটের তেমন সংকট না থাকলেও এবার স্যালাইনের কিছুটা সংকট তৈরি হয়েছে। কারণ এবার অন্যান্য বছরের চেয়েও চাহিদাও বেশি। এটা শুধু রাজবাড়ীতে না, সারাদেশেই। যে সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী স্যালাইনের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।