স্টাফ রিপোর্টার:
গণমাধ্যমকর্মী নজরুল ইসলাম জুয়েল সবসময় জড়িত থাকেন স্বেচ্ছাসেবামূলক নানা কর্মকাণ্ডে। কখনো মানবতার সেবায় শীতবস্ত্র, কখনো অনাহারির মুখে খাবার কিংবা এই করোনাকালে জনসাধারণকে সচেতন করতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। রক্তদাতা হিসাবেও জুয়েলের বেশ পরিচিতি আছে।জুয়েল তার নিজের শহর কিশোরগঞ্জে থাকাকালীন এক রমজান মাসে সারাদিন রোজা রেখে ইফতারের পর প্রথম রক্তদান করেন। ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীকে রক্ত দেওয়ার মাধ্যমে এ যাত্রার শুরু হয়। প্রতি চার মাস পর পর জুয়েল রক্ত দেওয়ার জন্য রোগী খোঁজেন। এ পর্যন্ত কুড়ি ছাড়িয়েছে তার রক্ত দানের সংখ্যা।গত রোববার (১১ এপ্রিল) ময়মনসিংহ শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে এক রোগীকে রক্ত দেন জুয়েল। তিনি জানান, এবার ২২তম রক্তদান করলেন। রক্তদানে সেঞ্চুরি করার আগ্রহ প্রকাশ করেন জুয়েল।
রক্তদান করতে ভালো লাগার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যখন চিন্তা করি আমার রক্ত দেওয়ার মাধ্যামে একজনের জীবন বেঁচে গেছে, তখন অজানা তৃপ্তি পাই। রক্ত দেওয়ার পর রোগীর স্বজনদের হাসিমুখই আমার পরম প্রাপ্তি।’
তিনি আরও বলেন, ‘রক্তদানের ব্যাপারে আরেকটা ভালো লাগার বিষয় হলো যখন আমার রক্তদানের কথা শুনে আরেক স্বেচ্ছাসেবী ভাই অনুপ্রাণিত হয়। যখন কেউ এসে বলে- আপনার কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে আজ আমি ব্লাড নিয়ে কাজ করতেছি। তখন মনের অজান্তেই আনন্দে অশ্রুসিক্ত হয়ে যাই।’রক্তদান করতে গিয়ে বিড়ম্বনা নিয়ে তিনি দুঃখ করে বলেন, ‘মাঝে মাঝে রক্ত দিতে গিয়ে অনেক খারাপ লাগে, রোগী পাওয়া যায় না কিংবা যার রক্ত লাগবে না, তার স্বজনরা শুধু শুধুই রক্তদাতাদের নিয়ে গিয়ে ঘুরিয়ে দেয়।’
আর যারা রক্তদান করতে ভয় পান, তাদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘রক্ত দান করলে কোনো ক্ষতি হয় না। নিয়মিত রক্ত দান করলে শরীর ও মন ভালো থাকে।’জুয়েল তার পঞ্চাশোর্ধ বাবাকে নিয়ে বলেন, ‘আমি সবচেয়ে বেশি গর্ব করি আমার আব্বুকে নিয়ে, যিনি এই বয়সেও দুইবার রক্ত দিয়েছেন।’নজরুল ইসলাম জুয়েলের রক্তের গ্রুপ এ+ (পজিটিভ)। তিনি দৈনিক আলোকিত সকাল পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হিসাবে দীর্ঘ দিন যাবত কাজ করছেন।