রংপুরে পানি কমছে, বাড়ছে নদী ভাঙন
রংপুর অফিস:
রংপুরে তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করছে। তবে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর টানা কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টির কারণে রংপুরের তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানি গতকাল বুধবারের চেয়ে বৃহস্পতিবার ৪ সেন্টিমিটার কমেছে। গতকাল ছিল বিপৎসীমার ২০সেন্টিমিটার ওপর।
অতিরিক্ত পানি ও স্রোতের কারণে নদী পাড়ের মানুষকে দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। বন্যার কারণে রাস্তাঘাট ও বাড়িঘরে ঢুকে পড়েছে পানি। এতে নদীপাড়ের মানুষের আতঙ্ক বাড়ছে।
আজ পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুরের তত্ত্বাবধয়ক প্রকৌশলী আহসান হাবীব বলেন, ‘তিস্তা নদীর পানি ধীরে কমতে শুরু করেছে। রংপুরের দুই উপজেলায় ঢুকে পড়েছে বন্যার পানি। তবে কিছু কিছু এলাকায় দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। এই ভাঙন রোধ করার চেষ্টা চলছে।’
রংপুরের কাউনিয়া ও গঙ্গাচড়া উপজেলায় ১০ গ্রামে পানি ঢুকে পড়ছে। দুর্ভোগ আর ভোগান্তিতে পড়ছে ওই এলাবার সাধারণ মানুষ। স্থানীয়রা বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছে।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং সকাল ৯টায় ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে। তলিয়ে গেছে পাঁচ গ্রামের আংশিক অংশ। ১০০ হেক্টর ফসলি জমির আবাদ ক্ষতির আশংকা করছে এলাকাবাসী। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আবারও পানি বাড়ার আশংকা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
অন্যদিকে বর্ষার শুরুতেই তিস্তায় পানি বেড়ে যাওয়ায় তিস্তা নদীর তীরবর্তী ও নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের মানুষ বন্যার আশংকা করছে। তবে গবাদি পশু, ঘরবাড়ি নিয়ে বিপাকে পড়ছে নদীপাড়ের হাজারে মানুষ। অনেকেই বন্যার আভাস পেয়ে গবাদিপশু ও ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। নিজেরাও নিরাপদে উচু স্থানে আশ্রয় দিচ্ছেন।
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের গদাই গ্রাম পাঞ্চরভাঙ্গা, হরিশর গ্রাম, আরাধি হরিশর গ্রামে ঢুকে পড়েছে। স্থানীয়দের বাড়ছে ভোগান্তি। এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। অনেকে আবার বাঁশ কেটে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছেন।
কামাল হোসেন, জাকির, ছালাম মিয়া বলেন, ‘পানি কমছে ভেঙে যাচ্ছে বাড়িঘর, ক্ষতি হয়েছে ফসলে জমির। রাস্তাঘাট ভেঙে যাওয়ায় আমাদের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। সরকারিভাবে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, ‘তিস্তার নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানি কিছুটা কমছে। যা এখন বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্যারাজ পয়েন্টের ৪৪টি গোট খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে ডালিয়া পয়েন্টে পানি কমতে শুরু করেছে। যার কারণে ভাটি অঞ্চলে নদীপাড়ের মানুষের সমস্যা হচ্ছে।’
রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান বলেন, ‘বৃষ্টির ফলে অনেক স্থানে পানি উঠেছে। গঙ্গাচড়া ও কাউনিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে খোঁজখবর নেওয়ার। অতি দ্রুত তাদের কাছে সরকারিভাবে সহযোগিতা ও সাহায্য দেওয়া হবে। আর ভাঙন রোদে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’