তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিসহ ৭ দফা দাবি আদায়ে মহাখালী-গুলশান সড়ক অবরোধ করেছে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে যান চলাচল। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সাড়ে ৪টার পর রাজধানীর মহাখালী অবস্থিত তিতুমীর কলেজের প্রধান ফটকের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয় যানবাহন চলাচল।
এসময় তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে বিভিন্ন ধরনের স্লোগানও দিতে থাকেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
এদিকে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিসহ ৭দফা দাবি আদায়ে আজ টানা চতুর্থ দিনের মতন আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এর আগে গতকাল শুক্রবার সকাল থেকেই অবস্থান কর্মসূচি কর্মসূচি পালনকালে দুজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পরেন। পরে তাদেরকে হাসপাতালে পাঠানো পাঠানো হয়। শিক্ষার্থীরা অনশনত স্থানে জুম্মার নামাজ আদায় করেন এবং নামাজ শেষে মহাখালীমূখী মিছিল নিয়ে ফিরে এসে কলেজের সামনের সড়ক অবরোধ করেন। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে গুলশান ১ নম্বর গোলচত্তরে অবস্থান নিয়ে প্রায় ১ঘণ্টা পর সাড়ে ১২টার দিকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।
গত ২৯ জানুয়ারি বিকাল ৫টা হতে তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির লক্ষ্যে ৭ দফা দাবিতে এই আমরণ অনশন পালন করছে শিক্ষার্থীরা।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুর থেকে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে কলেজের প্রায় আড়াইশ শিক্ষার্থী রাস্তায় নেমে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদাসহ বিভিন্ন দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।
পরে সরকারের প্রতিনিধি দলের কাছে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করে প্রজ্ঞাপন জারির এক দফা দাবি জানায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। দাবি পূরণ না হলে সারা রাত তিতুমীর কলেজের সামনে আন্দোলন এবং আমরণ অনশন করার ঘোষণা দিয়েছিল শিক্ষার্থীরা।
একই সঙ্গে আজ শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্যে মহাখালী রেলপথ, আমতলী এবং গুলশান বারাসাত ব্যারিকেড টু মহাখালী কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা।
৭ দফা দাবি:-
১। তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়কে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ।
২। তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২৪-২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করা।
৩। অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরন নতুবা অবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীদের আবাসিক খরচ বহন।
৪।২৪-২৫ সেশন শিক্ষাবর্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানসম্মত নূন্যতম দুটি বিষয় ল’ এবং জার্নালিজম বিষয় সংযোজন।
৫। একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ।
৬। শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে আসন সংখ্যা সীমিতকরণ।
৭। আন্তর্জাতিক শিক্ষার গবেষণাগার বির্নিমানের লক্ষ্যে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ।
প্রসঙ্গত, এর আগে সরকারি ৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে তিতুমীর কলেজসহ ৭ কলেজের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান।
২৭ জানুয়ারি (সোমবার) অধিভুক্ত কলেজগুলোর অধ্যক্ষদের সঙ্গে জরুরি সভা শেষে তিনি এ ঘোষণা দেন।