যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেক দুর্নীতি মামলার চার্জশিট গ্রহন করে ১১ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছে আদালত। আজ বুধবার বিকেলে যশোরের সিনিয়র স্পেশাল জজ (জেলা ও দায়রা জজ) শেখ নাজমুল আলম চার্জশিটের উপর শুনানি শেষে এ আদেশ দিয়েছেন। একই সাথে চার্জশিটে অব্যহতি চাওয়া এ মামলার এজাহারনামীয় আসামি বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোল্লা আমীর হোসেন, সাবেক সচিব প্রফেসর এএমএইচ আলী আর রেজাকে খালাস দেয়া হয়েছে। দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আসামিরা হলো, যশোর শিক্ষা বোর্ডের বরখাস্ত হওয়া হিসাব সহকারী আব্দুস সালাম, ঠিকাদার ভেনাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের মালিক শরিফুল ইসলাম বাবু, শেখহাটি জামরুলতলা এলাকার বাসিন্দা আশরাফুল আলম, পোস্ট অফিসপাড়ার গাজী নূর ইসলাম, বড় বাজার জামে মসজিদ লেনের প্রত্যাশা প্রিন্টিং প্রেসের মালিক রুপালী খাতুন, উপশহর ই-ব্লকের সহিদুল ইসলাম, রকিব মোস্তফা, শিক্ষা বোর্ডের সহকারী মূল্যায়ন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, নিম্নমান সহকারী জুলফিকার আলী, চেক ডেসপাসকারী মিজানুর রহমান ও কবির হোসেন
মামলার অভিযোগে জানা গেছে,
২০১৭-১৮ অর্থ বছর থেকে ২০২১-২০২২ অর্থ বছর পর্যন্ত ওই হিসাব থেকে ৩৮টি চেক জালিয়াতি করে বিভিন্ন ব্যাংকে জমা দিয়ে ক্লিয়ারিংয়ের মাধ্যমে ২৩ লাখ ৫৪ হাজার ৭০৬ টাকার স্থলে মোট ৬ কোটি ৯৭ লাখ ৮৫ হাজার ৩৯৭ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
এ ৩৮টি চেকের মধ্যে টিএ/ডিএ বিল বাবদ আসামি মো. আব্দুস সালামের নামে ইস্যুকৃত চেক ৩টি, সাধারণ বিল বাবদ সহকারী সচিব আশরাফুল ইসলামের নামে ইস্যুকৃত চেক ১টি, মিম প্রিন্টিং প্রেসের নামে ইস্যুকৃত চেক ৩টি, মেসার্স খাজা প্রিন্টিং প্রেসের নামে ইস্যুকৃত চেক ২টি, নিহার প্রিন্টিং প্রেসের নামে ইস্যুকৃত চেক ১টি, সবুজ প্রিন্টিং প্রেসের নামে ইস্যুকৃত চেক ১টি, শরিফ প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের নামে ইস্যুকৃত চেক ১টি, সানিয়া ইলেক্ট্রনিক্সের নামে ইস্যুকৃত চেক ১টি, নুর এন্টারপ্রাইজের নামে ইস্যুকৃত চেক ৮টি, প্রত্যাশা প্রিন্টিং প্রেসের নামে ইস্যুকৃত চেক ৩টি, শাহী লাল স্টোর নামে ইস্যুকৃত চেক ১টি, দেশ প্রিন্টার্স নামে ইস্যুকৃত চেক ১টি, সেকশন অফিসার মো. আবুল কালাম আজাদের নামে ইস্যুকৃত চেক ১টি, অর্পানেটের নামে ইস্যুকৃত চেক ১টি, আয়কর কর্তন বাবদ ইস্যুকৃত চেক ৪টি ও ভ্যাট কর্তন বাবদ ইস্যুকৃত চেক ৬টি।
এর মধ্যে ১৬টি চেক আসামি আব্দুস সালাম নিজে রিসিভ করেন।
অবশিষ্ট ২২টি চেক আসামি শেখ শরিফুল ইসলাম ডেসপাস রাইডার জুলফিকার আলী, মিজানুর রহমান ও কবির হোসেনের সহায়তায় নিজে গ্রহণ করেন। এরপর ওইসব চেকে টাকার পরিমাণ ঘষামাজার মাধ্যমে অবমোচন করে পরিমাণ বাড়িয়ে লিখে প্রিন্ট করে উত্তোলন করেন। এজন্য দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে আসামিদের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের অক্টোবরে মামলা ও পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ১৬ অক্টোবর চার্জশিট দাখিল করা হয়।
বুধবার চার্জশিটের উপর শুনানি শেষে বিচারক পলাতক ১১ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির এ আদেশ দিয়েছেন।