যশোরে স্কুল শিক্ষক প্রতারনার ঘটনায় মামলা আসামি আটক

যশোরে স্কুল শিক্ষক প্রতারনার ঘটনায় মামলা আসামি আটক

যশোরের কেশবপুর উপজেলার আলতাপোল মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক এলিন সাইদ উর রহমানের স্ত্রী তানিয়া, তানজিম সুমি প্রতারনার শিকার হয়েছেন। প্রতারনার মাধ্যমে তিনি খুইয়েছেন নগদ টাকা ও স্বর্নালংকারসহ প্রায় ৪ লাখ ৪১ হাজার টাকা। এঘটনায় তিনি ৩ সেপ্টেম্বর রোববার কোতয়ালি থানায় মামলা করেন।

মামলায় পাবনা জেলার গোনাইগাছি গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে মাসুদ রানা ওরফে সাকিব খানকে আসামি করা হয়। পুলিশ সাকিব
খানকে গ্রেফতার করে। মামলায় তিনি বলেছেন, স্টার মার্ক আইডির মাধ্যমে চলতি বছরের ১০ জুন সাকিব খান নামের একজনের সাথে পরিচয় হয়। তিনি নিজেকে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও বাড়ি রাজশাহি বলে পরিচয় দেন। সাকিব খান ফাহিম ফেসবুক আইডির সাথে শিক্ষক তানিয়ার বন্ধুত্ব ও সখ্যতা
গড়ে উঠে। ওই তারিখ থেকে হটস অ্যাপে নিয়মিত কথা বলে ও চ্যাট
করতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় জুন মাসের তৃতীয় সপ্তাহে আর্মি
পরিচয়ের প্রভাব খাটিয়ে তানিয়াকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের
চেয়েও আরো মর্যাদাপূর্ন ও বেশি বেতনের চাকুরি দিবেন। এভাবে
প্রলোভন দেখিয়ে ছলচাতুরি ও ব্লাকমেইলিং করে তানিয়ার কাছে ২ লাখ
টাকা দাবি করে। আসামি বলে এক সপ্তাহের মধ্যে টাকা দিতে না পারলে
টাকা ফেরত দিবে। তার কথা বিশ^াস করাতে দুলা ভাই ও বন্ধু সেজে
আরো দুজন অজ্ঞাত ব্যক্তি তাদেও আইডি থেকে নিজেদেরকে আর্মি
অফিসার পরিচয় দিয়ে আসামির পক্ষে নানা কথাবার্তা বলে তানিয়াকে
বিশ^াস করায়। তানিয়া সরল মনে বিশ^াস করে যশোরের আপন
জুয়েলার্সে তার স্বর্নালংকার বন্দক রেখে ১ লাখ সংগ্রহ করে। পাশের
ফ্লাটের আলি হাসান লিটনের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা ধার করে।
বিভিন্ন মাধ্যমে আরো ২০ হাজার টাকা সংগ্রহ করে মোট ২ লাখ
টাকা নগদ ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আসামি সাকিবের দেয়া
০১৩০১৭০১৫৮৪ প্রদান করে। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ি তানিয়াকে
কোন চাকুরি বা টাকা ফেরত না দিয়ে তালবাহানা শুরু করে। তানিয়ার
স্বামীসহ সবার কাছে ঘটনা ফাঁস করে দেয়ার হুমকি ও ব্লাকমেইলিং

করে। ৭ জুলাই টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলে তানিয়াকে শহরতলীর চাঁচড়া
চেকপোস্টে দেখা করতে বলে। তানিয়া টাকা ফেরত পাওয়ার আশায় বাবার
বাড়ি সাতক্ষীরা তালা উপজেলার পাচপাড়া ধানদিয়া গ্রাম থেকে যশোরের
উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। বেলা সাড়ে ১২ টায় তানিয়া চাঁচড়া চেকপোস্টে
পৌছে চাঁচড়া মোড়ে মধুমতি হোটেলে আসামিদেও সাথে বসে
জুস পান করে। আসামি কিছু লেখা কাগজ তানিয়ার সামনে দিয়ে
পড়তে বলে। তানিয়া লেখা পড়তে থাকে। একপর্যায়ে আসামি তানিয়ার
মোবাইল ও পরিহিত স্বর্নালংকার দিতে বলে। আসামির কথা মতো
তানিয়া ১ ভরি ৪ আনা ওজনের স্বর্নের চিক মূল্য ১লাখ ৩৩ হাজার টাকা,
একটি ৬ আনা ওজনের স্বর্নের চেন মূল্য ৪০ হাজার টাকা, ১ জোড়া ৪
আনা ওজনের কানের দুল মূল্য ২৭ হাজার টাকা, একটি ৪ আনা ওজনের
আংটি মূল্য ২৭ হাজার টাকা ও স্যামসং মোবাইল মূল্য ১৪ হাজার টাকা
মোট ২ লাখ ৪১ হাজার টাকা সম্মোহিত হয়ে দিয়ে দেয়। আসামি এ
সব নিয়ে বাইরে চলে যায়। তানিয়া ১০/১৫ মিনিট অবস্থান করে কিন্তু
আসামি ফিরে আসে না। তানিয়ার মাথা ঝিমঝিম করছিলো। কোন
কিছু বুঝে উঠতে পারছিলেন না। তিনি রিকশা যোগে যশোরের
চিরুনি কলে বাসায় চলে যান। পরে তিনি বুঝতে পারেন প্রতারণার
শিকার হয়েছেন। পরের দিন তিনি স্বামীর সাথে পিবিআই অফিসে
যেয়ে ঘটনাটি জানান। পিবিআইয়ের এস আই রেজোয়ান রোববার
সকালে তানিয়ার স্বামী এলিনকে মোবাইলে জানান আসামি
গ্রেফতার হয়েছে। এ খবর পেয়ে তানিয়া ও তার স্বামী এলিন পিবিআই
অফিসে যেয়ে আসামিকে সনাক্ত করেন।

Explore More Districts