যশোরের কেশবপুরে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ঘের দখল করে অর্ধ কোটি টাকার মাছ লুটের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান এস এম মুনজুর হোসেন আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের কেশবপুর উপজেলা শাখার সভাপতি।
এঘটনায় স্থানীয় থানায় অভিযোগ দিলেও রহস্যজনক কারনে পুলিশ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন ঘের মালিক মেজবাহ উদ্দিন।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, কেশবপুর উপজেলার সুফলাকাঠি ইউনিয়নের বুড়ুলিয়া বিলে স্থানীয়দের প্রায় দেড়শ’ বিঘা জমিতে ঘের করে গত বেশ কয়েক বছর মাছের চাষ করছেন। বিগত দিনে এই ঘের লীজ বাবদ মেজবাহ প্রতি বছর ঘেরের জমির মালিকদের ৩০ লাখ টাকা লীজ মানি প্রদান করতেন। গত ৬ বছরের লীজ মেয়াদ শেষ হলে গত মার্চ মাসে মাসিক ৩৫ লাখ টাকার লীজ মানি প্রদানের শর্তে ফের ৬ বছরের চুক্তিপত্র করে নেন। যার লীজ মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২০৩০ সালের ৩০ ডিসেম্বর। সেই মোতাবেক এবছর ঘেরে নতুন পানি ঢুকলে গত মার্চ এপ্রিলে মেজবাহ উদ্দিন ও তার ব্যবসায়ী পার্টনারবৃন্দ মিলে প্রায় ১ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকারের মাছ ছাড়েন। এছাড়া ঘেরে গত বছরের পুরোনো মাছ ছিলো প্রায় ৫০ লাখ টাকার। গত ছয় মাসে মাছের খাবার বাবদ এই ঘেরে ব্যয় হয়েছে আরো ৩০/৪০ লাখ টাকা। আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে ঘেরে মাছ বিক্রি শুরু হওয়ার কথা।
কিন্তু তার আগেই গত মাসের শেষের দিকে মৎস্যজীবী লীগ সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মুনজুরের নেতৃত্বে ফয়সাল, আলমগীর, আলামীন সবুজ, সাইফুল, জিহাদ হোসেন, সামাদ মোড়ল, পিরো ম্যোল্য, সফিকুল গাজী,মামুন সরদারসহ ৩০/৩৫ জন সশস্ত্র যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা ওই ঘেরে হামলা চালিয়ে গার্ডদের বেধড়ক মারপিট করে মারাত্নক জখম করে। এসময় সন্ত্রাসীদের নেতৃত্বে ঘের লুট করে দেন চেয়ারম্যান মুনজুর ও তার লোকজন। ঘের মালিক এ ঘটনায় পর দিন কেশবপুর থানায় মুনজুরসহ তার সশস্ত্র ক্যাডারদের নামে লিখিত অভিযোগ করেন।
যার একটি কপি স্থানীয় সেনা ক্যাম্পের ইনচার্জকেও দেন। কিন্তু এ ঘটনায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে জানান বাদী মেজবাহ উদ্দিন। তিনি বলেন, সন্ত্রাসীরা শুধু তার ঘের দখল করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি। তারা এখন তাকে প্রাণে মেরে ফেলার জন্য নানা ভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। সন্ত্রাসীদের ভয়ে তিনি বা তার লোকজন গত প্রায় এক মাস ধরে ঘেরে যেতে পারছেন না। সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ঘেল দখল করে রেখেছে। যার ফলে তিনি কয়েক কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন ও জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগ করেন ঘের মালিক মেজবাহ উদ্দিন ।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শরিফুল ইসলাম বলেন, এ সংক্রান্ত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি যেহেতু জমিজমা সংক্রান্ত। তাই আমরা নিবিঢ়ভাবে তদন্ত করছি। ইতিমধ্যে একটি মারামরির ঘটনায় চেয়ারম্যান মুনজুর হোসেন ও তার ক্যাডারদের নামে মামলা হয়েছে। বর্তমানে চেয়ারম্যান পলাতক রয়েছে। তাকে আটকে যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান ও উপজেলা মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি এস এম মুনজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তার মোবাইল ফোনে বারবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। বেশ কয়েকবার তিনি ফোনটি কেটে দেন। যার কারনে এ বিষয়ে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।