মেজর সিনহা হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায় সোমবার – দৈনিক আজাদী

মেজর সিনহা হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায় সোমবার – দৈনিক আজাদী

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন (ডেথ রেফারেন্স) ও আপিলের ওপর শুনানি শেষে আগামী সোমবার (২ জুন) রায়ের জন্য দিন ধার্য করেছে আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের হাই কোর্ট বেঞ্চ এ দিন তারিখ রেখেছেন। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এম আসাদুজ্জামান ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জসিমউদ্দিন সরকার এবং আসামি পক্ষে আইনজীবী এসএম শাহজাহান ও সারওয়ার আহমেদ শুনানি করেন।

আলোচিত এ মামলাটিতে নিম্ন আদালতের দেওয়া রায় বহাল রাখার আর্জি জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল। আর আসামি পক্ষের কৌসুলিরা ফাঁসির দণ্ড বাতিল করে খালাসের আবেদন জানিয়েছেন। চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের উপর হাই কোর্টে শুনানি শুরু হয়। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ মামলা নিষ্পত্তির জন্য সিদ্ধান্ত দেন। খবর বিডিনিউজের।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারটেকনাফ মেরিন ড্রাইভের শামলাপুর চেকপোস্টে গুলি করে হত্যা করা হয় সিনহা মো. রাশেদ খানকে। তিনি ছিলেন সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত মেজর, যিনি স্বেচ্ছায় অবসর নেওয়ার পর কয়েকজন তরুণকে সঙ্গে নিয়ে ভ্রমণ বিষয়ক তথ্যচিত্র বানানোর জন্য কক্সবাজারে গিয়েছিলেন।

এ হত্যাকাণ্ডের দায়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক পরিদর্শক লিয়াকত আলীর ফাঁসির রায় দেয় কঙবাজারের বিচারিক আদালত। সিনহাকে হত্যায় সহযোগিতা এবং ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে টেকনাফ থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল রুবেল শর্মা ও সাগর দেব এবং পুলিশের তিন সোর্স মো. নুরুল আমিন, মোহাম্মদ আইয়াজ ও মো. নিজাম উদ্দিনকে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। মামলার ১৫ আসামির মধ্যে বাকি চার পুলিশ সদস্য এবং তিন এপিবিএন সদস্যকে বেকসুর খালাস দেয় আদালত।

আইনি বাহিনীর বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার করে সাড়ে চার বছর আগে মেজর সিনহাকে হত্যার ঘটনা সমালোচনার ঝড় বইয়ে দিয়েছিল দেশজুড়ে। ওই ঘটনায় সিনহার বোন মামলা করার পর ১২ পুলিশসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন র‌্যাবের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার খাইরুল ইসলাম। একজন আইনের লোক হয়েও ওসি প্রদীপ কীভাবে মাদকবিরোধী অভিযানের নামে বন্দুকযুদ্ধ সাজিয়ে খুন করে যাচ্ছিলেন টাকার জন্য, তা উঠে আসে তার তদন্তে।

সেখানে বলা হয়, তথ্যচিত্র নির্মাণে কঙবাজারে গিয়ে সিনহা ও তার সঙ্গীরা টেকনাফের নিরীহ মানুষের উপর ওসি প্রদীপের অবর্ণনীয় নির্যাতননিপীড়নের কাহিনী জেনে গিয়েছিলেন। এরপর বিপদ আঁচ করতে পেরে প্রদীপের পরিকল্পনায় সিনহাকে হত্যা করা হয়। প্রদীপের নির্দেশে সিনহাকে গুলি করেন লিয়াকত। বাকিরা তাদের সহযোগিতা করেন।

২০২১ সালের ২৭ জুন ওই ১৫ আসামির বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছিলেন কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল। সাত মাস পর ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি তিনি রায় ঘোষণা করেন। পরে মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতকরণে ডেথ রেফারেন্স হাই কোর্টে আসে। কারাগারে থাকা দণ্ডিত আসামিরা আপিল করেন।

Explore More Districts