মৃত্যুবার্ষিকীতে ফুটবলার মারীকে স্মরণ | PaharBarta.com

মৃত্যুবার্ষিকীতে ফুটবলার মারীকে স্মরণ | PaharBarta.com

purabi burmese market

স্বাধীনতার আগে ও পরে পার্বত্য চট্টগ্রামের ফুটবলের পথপ্রদর্শক ও কিংবদন্তী ফুটবল খেলোয়াড় বীর মুক্তিযোদ্ধা চিং হ্লা মং মারী’র মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাঙামাটি জেলার ক্রীড়া সংগঠক ও খেলোয়াড়বৃন্দ। আজ মঙ্গলবার সকাল ৮টায় রাঙামাটি জেলা চিং হ্লা মং মারী স্টেডিয়ামের মুল গেইটের পাশে তার প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলী জানানো হয়।

পাহাড়ের কিংবদন্তী এই ক্রীড়াবিদ ২০১২ সালের ৯ মে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। সময়ের পরিক্রমায় আজ এই পাহাড়ের তারকা ফুটবলারের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী। মানুষ আজও তাকে মনে রেখেছে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে।

১৯৩৮ সালে রাঙ্গামাটির চন্দ্রঘোনায় জন্ম নেন মারী। পুরো নাম চিং হ্লা মং চৌধুরী মারী। তবে সবকিছুর ঊর্ধ্বে উঠে মারী চৌধুরী নামেই পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন। মারীর প্রথম ক্লাব চট্টগ্রামের পোর্ট ট্রাস্ট। ১৯৫১ সালে ইস্টবেঙ্গল রেলওয়েতে যোগ দেন এই লেফট উইঙ্গার। ১৯৫২ সালে ভারতের আইএফএ শিল্ডে খেলতে গিয়ে নজর কাড়েন মারী চৌধুরী। ফায়ার সার্ভিসে এক মৌসুম কাটিয়ে যোগ দেন আজাদ স্পোর্টিংয়ে। আজাদে মারীর ফুটবল নৈপুণ্য তাকে বিখ্যাত করে তোলে। ১৯৫৩ সালেন পূর্ব পাকিস্তান রেলওয়ে ফুটবল দলের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। ঢাকায় অনুষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তান রেলওয়ের হয়ে তিনি ‘রোনাল্ড শিল্ড’ খেলেন। ১৯৫৪ সালে পাকিস্তান জাতীয় দলে জায়গা পাওয়া দু’জন বাঙালি ফুটবলারের মধ্যে একজন ছিলেন মারী। অন্যজন হলেন নবী চৌধুরী। ওই বছরেই অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতায় মুনশিয়ানার পরিচয় দেন। পাকিস্তান জাতীয় অলিম্পিকে হাইজাম্পে স্বর্ণ এবং ১০০ মিটার স্প্রিন্টে রুপা জেতেন। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তান ভলিবল দলের অধিনায়ক নির্বাচিত হন মারী। পরের বছর পাকিস্তান সাদা দলের অধিনায়কত্বের আর্মব্যান্ড পরেন এই কিংবদন্তি ফুটবলার।

এই বিষয়ে আরও

জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রাপ্ত প্রতিভাবান এই খেলোয়াড়ের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে ২০১২ সালের ৫ ডিসেম্বর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ রাঙামাটির জেলা স্টেডিয়ামের নামকরণ করে ‘চিং হ্লা মং চৌধুরী মারী স্টেডিয়াম’। সংক্ষেপে ‘মারী স্টেডিয়াম’ নামেই পরিচিত ১৯৮০ সালে নির্মিত প্রায় আট হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার এই স্টেডিয়াম। এরপর ২০২০ সালের ১লা ফেব্রুয়ারী তৎকালীন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা আন্তরিকতায় ৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে স্টেডিয়ামের মুল গেইটের পাশে চিংহ্লা মং মারীর মুর‌্যাল উদ্বোধন করা হয়। তারও আগে ২০০১ সালে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ হতে মারীকে ‘সেরা ফুটবলার’ হিসেবে সম্মাননা প্রদান করা হয়।

তার মৃত্যুবার্ষিকীতে মঙ্গলবার (৯ মে) সকাল ৮টায় স্টেডিয়ামের মুল গেইটের পাশে চিংহ্লা মং মারীর মুর‌্যালে রাঙামাটির সাবেক ফুটবলার, ক্রীড়া সংগঠক ও খেলোয়াড় এবং রাঙামাটি ডিস্ট্রিক ফুটবল একাডেমী, জেলা আম্পায়ার এন্ড স্কোরার্স এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে পুস্পস্তবক অর্পন করা হয়। এরআগে চিংহ্লা মং মারীর আত্মার শান্তি কামনায় এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, পাহাড়ের ক্রীড়াঙ্গনের পথপ্রদর্শক হলেন চিংহ্লা মং মারী। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, ছিলেন কিংবদন্তী ক্রীড়াবিদ। তিনি খেলার মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর স্মৃতিকে ধরে রাখতে ভবিষ্যতে নানা কর্মসুচি হাতে নেওয়া হবে বলে বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

dhaka tribune ad2

সংক্ষিপ্ত স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন রাঙামাটি মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি সংরক্ষন পরিষদের আহবায়ক মোঃ নুরুল আবছার, রাঙামাটি ডিস্ট্রিক্ট ফুটবল একাডেমীর পরিচালক ওয়াশিংটন চাকমা, সাবেক ফুটবলার কিংশুক চাকমা, সদর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মোঃ হান্নান, জেলা ক্রীড়া সংস্থার কোষাধ্যক্ষ মনিরুল ইসলাম, সদস্য ঝিনুক ত্রিপুরা, আশীষ কুমার নব, আবু তৈয়ব, বেনু দত্ত, সাবেক ফুটবলার রনবীর চাকমা, প্রিয় চাকমা, রনি দেওয়ান, ক্রীড়া সংগঠক প্রীয়তোষ তালুকদার প্রমূখ।

Explore More Districts