মুসলিম সভ্যতায় রান্নার শিল্প

মুসলিম সভ্যতায় রান্নার শিল্প

খাদ্যরসিক মাওইয়া

কামালুদ্দিন আল-দামিরি (৮০৮ হিজরি, ১৪০৬ খ্রিষ্টাব্দ) তাঁর হায়াতুল হাইওয়ান গ্রন্থে একটি পরিবর্তন তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘উমাইয়া যুগে খাবারের প্রতি এই আগ্রহ প্রথম দিকে ততটা ছিল না, ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। প্রথম যে ব্যক্তি ফারসি সংস্কৃতির অনুকরণ গ্রহণ করেছিলেন, তিনি মাওইয়া ইবনে আবু সাফিয়ান। তিনি খাদ্য ও পানীয়ের ক্ষেত্রে এক নতুন বিলাসিতার সূচনা করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে অন্যান্যা খলিফারাও এই রীতি অনুসরণ করে।’

আল-মাসউদি (৩৪৬ হিজরি, ৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দ) মুরুজ আল-যাহাব গ্রন্থে মাওইয়ার খাদ্যাভ্যাসের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে লেখেন, ‘মাওইয়া দিনে পাঁচবার খেতেন। শেষ খাবার ছিল সবচেয়ে ভারী, তারপর বলতেন, আরে, আমাকে ওঠাও। আমি মনমতো খেতে পারিনি। কিন্তু বিরক্ত হয়ে গেছি!’

ইমাম ইবনে কাসির (৭৭৪ হিজরি, ১৩৭২ খ্রিষ্টাব্দ) তাঁর আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া গ্রন্থে মাওইয়ার পরিচিতসহ বলেন, ‘তিনি ছিলেন দামেস্কের শাসক। দিনে সাতবার খেতেন। খাবারে প্রচুর মাংস ও মিষ্টি রাখতেন। এত খাওয়ার পরেও তিনি বলতেন, আমি কখনো পেটভরে খাই না, শুধু ক্লান্ত হয়ে যাই আর কি!’

মাওইয়ার এই অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা তাকে শারীরিক ঝুঁকির মুখে ফেলে দেয় এবং তাকে স্বাস্থ্যগত সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। তিনিই প্রথম ব্যক্তি, যাকে খাদ্যাভ্যাসের কারণে খাবারের উপাদান পর্যালোচনা করার জন্য ডাক্তার ডাকতে হয়। ডাক্তার তাকে কী খাবেন, কী খাবেন না, সে পরামর্শ দিতেন। কিন্তু মাওইয়ার তা থোড়াই কেয়ার করতেন।

Explore More Districts