মোহাম্মদ সেলিম
মুন্সীগঞ্জ শহরের সবখানে প্রতিটি বিদ্যুতের খুঁটিতে ক্যাবল লাইন ও ইন্টারনেটের তাঁরের জটলা শোভা পাচ্ছে। বিদ্যুতের খুঁটিতে এগুলো প্রাথমিকভবে দেখলে মনে হবে বড় মাকড়াসার জ্বালে ভরা ক্যাবল লাইন ও ইন্টারনেটের লাইন। বিপদজনক বিদ্যুতের খুঁটিতে এভাবে ক্যাবল লাইন ও ইনটারনেটের তাঁর ঝুঁলে রয়েছে বছরে পর বছর ধরে। যেতো দিন যাচ্ছে এদের পরিধি ক্রমশ বাড়ছে বই কমছে না।
এগুলো বিদ্যুতের খুঁটিতে থাকার কারণে যেকোন সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে অনেকেই আশংকা করছেন। মুন্সীগঞ্জ শহরের বিদ্যুতের খুঁটিতে একাধিক ভোল্টের বিদ্যুতের সঞ্চলনায় লাইন চলামান রয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে ২২০ ভোল্টের লাইন। আর পাওয়ার ফুল লাইন রয়েছে ৪৪০ ভোল্টের লাইন। এসব লাইনে সব সময়ে বিদ্যুতের লাইন সচল থাকে সব সময়ে।
পাওয়ার ফুল লাইনে বিদ্যুতের খুঁটিতে রয়েছে শহরের ডিসের ক্যাবল লাইন ও ইন্টারনেটের তাঁর। বেশিরভাগ সময়ে বিদ্যুতের খুঁটিতে ডিসের ক্যাবল লাইন ও ইন্টারনেটের তাঁরের কাজ করতে দেখা যায় এ ব্যবসার সাথে জড়িত লোকজনদেরকে। মৃত্যুকে হাতের মুঠায় নিয়ে তাঁরা তখন এখানে কাজ করে বলে জানা গেছে। এ কাজের সময়ে যদি কেউ দুর্ঘটনার শিকার হয় তবে এর দায়িত্ব কে নিবে।
এ প্রশ্নের উত্তর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি? সাধারণত বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ এসব খুঁটিতে কাজ করার সময়ে বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করে কাজ করে থাকেন বলে জানা গেছে। যাতে সেই সময়টাতে কোন দুর্ঘটনা না ঘটে। কিন্তু ডিসের ক্যাবল লাইন ও ইন্টারনেটের লাইনের লোকজনরা এ সুযোগ কোনভাবেই পাচ্ছে না বা পাবে না বলে জানা গেছে। কারণ হচ্ছে বিদ্যুতের খুঁটির প্রকৃত মালিক হচ্ছে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। অথচ ক্যাবল লাইন ও ইন্টারনেটে ব্যবসায়িরা বেআইনিভাবে বিদ্যুতের খুঁটি ব্যবহার করছে নিজেদের ব্যবসার জন্য।
এদিকে মুন্সীগঞ্জ শহরে একাধিক ডিসের ক্যাবল লাইন ও ইন্টারনেটের ব্যবসা গড়ে উঠেছে। এসব ব্যবসা একাধিক ব্যক্তি নিয়ন্ত্রণ করছে বলে জানা গেছে। এসব ব্যবসায়িরা এখানকার বিদ্যুৎ কর্র্তৃপক্ষের কাছ থেকে বিদ্যুতের খুঁটি ব্যবহার করার জন্য কোন ধরণের অনুমতিপত্র সংগ্রহ করেননি বলে জানা গেছে। অথচ তাদের বিদ্যুতের খুঁটি ব্যবহার করছে তাঁরা।
এছাড়া মুন্সীগঞ্জ শহরের বেশিরভাগ খুঁটিতে আবার অনেক ব্যক্তি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যানার ও ফেস্টুন ঝুঁলে থাকতেও দেখা গেছে। আবার অনেকে নিয়ন লাইটের পাকাপোক্ত লোহার সাইন বোর্ড লাগিয়ে রেখেছেন এসব বিদ্যুতের খুঁটিতে। এসব যারা লাগিয়েছেন তাঁরাও বিদ্যুতের কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেননি বলে জানা গেছে। এসব কারণে এখানে যেকোন সময়ে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানা গেছে।
মুন্সীগঞ্জের বিদ্যুতের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুতের খুঁটিতে একাধিক ছোট ছোট ছিদ্র রয়েছে। সেইসব ছিদ্রতে বিদ্যুৎ শ্রমিকরা কাজের সময়ে লোহার রড দিয়ে খুঁটির উপরে চলে যায়। কিন্তু অনুমতিবিহীন ব্যক্তিদের কারণে তাদের ব্যবহারকৃত জিনিসপত্রে কাজের সময়ে বড় ধরণের সমস্যায় পড়তে হতে পারে বলে তাঁরা দাবি করেছেন।
তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা হতে পারে কখনো কখনো আগুন লাগলে এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর প্রকৃত কারণ হচ্ছে যে, তখন বিদ্যুৎ শ্রমিকরা দ্রুত খুঁটিতে উঠতে পারবে না। আর তখনি বিপত্তি ঘটতে পারে।
মুন্সীগঞ্জ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে একাধিক ইন্টারনেট ও ক্যাবল ব্যবসায়ি। তাদের সাথে বিদ্যুতের খুঁটিতে ইন্টারনেট ও ক্যাবলের লাইন কিংবা তার বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তারা এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাননি। তবে কেউ কেউ এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করা সত্বে বলেন যে, মুন্সীগঞ্জ শহর ও শহরতলীর বিশাল এলাকা নিয়ে তাদের এ ধরণের ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে।
ব্যবসার ধরণটা বড় দেখা গেলেও এটি সেইভাবে বড় না। এ ব্যবসার পরিধিদের সাথে নিজেদের অর্থায়ানে খুঁটি বসালে ইন্টারনেট ও ক্যাবলে মাসিক ভাড়া এখন যা নেয়া হচ্ছে গ্রাহকদের কাছ থেকে পরে তা দ্বিগুন হয়ে যাবে।
তাতে সহজ ভাবে কম দামে এ সেবা তখন দেয়া আর সম্ভব হবে না।
মুন্সীগঞ্জ পল্লী বিদুৎ সমিতির ইদ্রাকপুর জোনের ডিজিএম প্রকৌশলী মোঃ এনামুল হক বলেন, মুন্সীগঞ্জ শহরে বিদ্যুতের খুঁটিতে ডিসের ক্যাবল লাইন ও ইন্টারনেটের লাইনসহ ব্যানার ফেস্টুন ব্যবহারকারীরা কোন অনুমতি নেয়নি তাদের কাছ থেকে।