মোহাম্মদ সেলিম
আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে মুন্সীগঞ্জের শহর ও শহরতলীর একাধিক কামারপট্টি জমজমাট হয়ে উঠেছে। কামারপট্টিতে এখন তৈরি করা হচ্ছে ধারালো ছুরি, চাপাতি, দা, বঁটিসহ নানাবিধ সরঞ্জাম। কামারপট্টিতে এ মৌসুমকে সামনে রেখে কামার শ্রমিকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। এই কর্ম ব্যস্ততা চলবে ঈদের দিন পর্যন্ত। অনেকে ঈদেও দিনেও ছুটে যান কামারপট্টিতে।
গতকাল বুধবার মুন্সীগঞ্জের কামারপট্টিতে ঘুরে কামার শ্রমিকদের এ কাজে ব্যস্ত দেখতে পাওয়া যায়।
মুন্সীগঞ্জের কামারপট্টিতে সারাবছর শুধু দা, বঁটি বিক্রি হলেও ঈদকে সামনে রেখে দোকানগুলোতে সাজিয়ে
রাখা হয়েছে গরু জবাইয়ের ছোরা, দেশি-বিদেশি চাপাতি, বিভিন্ন সাইজের চাকু।
মুন্সীগঞ্জের কামারপট্টিতে কয়লার আগুনে লোহা পুড়িয়ে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রে রূপ দিচ্ছেন কামার শ্রমিকরা। তবে ঈদ সামনে রেখে ব্যস্ততা বাড়লেও এখনো তেমনটা বেচা-বিক্রি শুরু হয়নি বলে জানিয়েছেন একাধিক দোকানিরা।
সরোজমিন ঘুরে দেখা যায়, কামারপট্টিতে ঠুকঠাক শব্দে হামার দিয়ে গরম লোহা পেটাচ্ছেন কামার শ্রমিকরা। তারা জানান, রোজার ঈদের পর থেকেই মূলত তারা কোরবানির জন্য ছোরা-চাপাতি তৈরি শুরু করেন। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কাজ করেন। ঘণ্টায় একটি করে চাপাতি বানাতে পারেন তারা।
তাদের এখানে বানানো এসব যন্ত্রপাতি অনেকে বেচার জন্য নিয়ে যায় বলে তারা জানান।
দোকানীরা জানান, এখনো মানুষের ছোরা-চাপাতি কেনা শুরু করেনি। মূলত গরু বিক্রির ওপরই আমাদের বেচা-বিক্রি নির্ভর করে। গরু কেনা যখন খুব জমে উঠে, তখন ছোরা-চাপাতি কিনতে মানুষ তাদের এখানে ভিড় করে।
এখন শুধুমাত্র অনেকেই আবার পুরাতন ছোরা ধার দিতে এখানে নিয়ে আসছেন। আর জবাই ছোরা সাধারণত মাদরাসার হুজুররাই কেনেন।
এবার সবকিছুরই দাম বাড়তি। গরু জবাইয়ের ছোরা বিক্রি হয় পিস হিসেবে। আর চাপাতি বিক্রি হয় কেজি হিসাবে। রেললাইনের লোহা দিয়ে তৈরি প্রতি পিস চাপাতির দাম পড়ে ৫০০ টাকা থেকে সাড়ে ৬০০ টাকায়।
অন্যদিকে গাড়ির স্প্রিংয়ের লোহার তৈরি চাপাতি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়। এছাড়া বঁটি ৫০০ থেকে সাড়ে ৫০০ টাকা প্রতি কেজি লোহা। গরু জবাইয়ের ছুরি ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত আছে। এছাড়াও চায়নিজ চাপাতি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়।